শনিবার ● ২৭ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » গাজিপুর » কতিপয় স্বার্থান্বেষী ইসলামের নামে বদনাম করছে: পুলিশের আইজিপি
কতিপয় স্বার্থান্বেষী ইসলামের নামে বদনাম করছে: পুলিশের আইজিপি
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (১২ ভাদ্র ১৪২৩ বাংলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৫৯মিঃ) পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেছেন, ইসলাম শানত্মির ধর্ম কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্বোষী ইসলামের নামে বদনাম করছে৷ তারা ইসলাম জানেনা, এক আধটু সুরা মুখস্ত করে মানুষকে জেহাদের পথে ডাকছে, মানুষ হত্যা করছে৷ যারা মাদ্রাসায় পড়ে তারা জঙ্গি তত্পরতায় জড়িত নয়৷ যারা মাদ্রাসায় পড়ে বিশেষ কোনো দলের সাথে সম্পৃক্ত তারা মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে এসে জঙ্গিতে যুক্ত হয়েছিল৷ যেহেতু জঙ্গিবাদের সাথে ইসলামকে মিলানো হয়েছে, তাই ইসলামকে বদনাম থেকে বাঁচাতে শিক্ষক, আলেম ওলামা-মাশায়েখসহ সকল শ্রেণীর মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে৷
২৭ আগস্ট শনিবার মাঠে বিকাল ৩ টায় গাজীপুর শহরের ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজবাড়ী মাঠে জেলা পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত জঙ্গিবাদ, নাশকতা, মাদকবিরোধী ওলামা-মাশায়েখ ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷
পুলিশের আইজিপি( ইন্সপেক্টর জেনারেল বাংলাদেশ পুলিশ) একেএম শহীদুল হক বলেন, তামিমেরা মাদ্রাসায় পড়েনি৷ তারা অতি আধুনিক সংস্কৃতিতে চলাফেরা করেছে৷ শনিবার নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সদস্যরা তামিমদের ঘেরাও করে ফেলেছিল৷ তাদেরকে সাড়ে তিন ঘন্টা পর্যনত্ম সময় দেওয়া হয়েছিল আত্নসমর্পণের জন্য৷ তাদের কাছে অস্ত্র ছিল৷ তারা সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য৷ আত্নসমর্পণ না করায় আমাদের পুলিশ বাহিনীও মৃত্যু ঝুঁকিতে ছিল৷ পরে তাদের সঙ্গে পুলিশের মোকাবিলা করা হয়েছে৷ অবশেষে জঙ্গিরা মৃত্যুবরণ করেছে৷
তিনি বলেন, যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আলস্নাহতায়ালা তাদের শাসত্মি দিবেন৷ তারপরও আমাদের সকলকে আমাদের পরিবার পরিজন সনত্মান সনত্মতিসহ সকল সত্মরের মানুষকে নিরাপত্তার জন্য বুঝাতে হবে৷
আইজিপি বলেন, জঙ্গিরা গ্রেফতারের পর তারা ইসলাম বাঁচাতে মানুষ হত্যার কথা বলেছে৷ তারা বলেছে মৃত্যুর পর তারা বেহেশতে যাবে৷ নারী জঙ্গিরাও একই কথা বলেছে৷ জঙ্গিরা ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কাউকে জঙ্গি বানাতে না পারে এজন্য আলেম ওলামা সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারেন ৷ আমরা সবাইকে সাথে নিয়েই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়বো৷ ”
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বিপিএম, পিপিএম(বার)-এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিভাগের ডিআইজি এসএম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশীদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী মোজাম্মেল হক, গাজীপুর আদালতের পিপি হারিছ উদ্দিন আহমেদ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, আওয়ামীলীগ নেতা জামিল হাসান দূর্জয়, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াজউদ্দিন মিয়া, মাওলানা ফজলুর রহমান, মুফতি মাসুদ করিম, মাওলানা লেহাজ উদ্দিন ভূইয়া, কাপাসিয়া বঙ্গতাজ কলেজের অধ্যক্ষ পীরে কামেল মাওলানা মীযানুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ ইউনিাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসেন, মাওলানা আব্দুল মান্নান বাজিতপুরী, অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ৷
সমাবেশে বিপুল সংখ্যক ওলামা-মাশায়েখ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবী, ছাত্র-শিক্ষক সহ সকল শ্রেণী পেশার সাধারণ মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন৷
এর আগে দুপুর থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ওলামা-মাশায়েখ, কমিউনিটি পুলিশ সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং সুধীজন জেলা শহরের রাজবাড়ি মাঠে এসে জড়ো হতে থাকেন৷ এক পর্যায়ে সমাবেশের ব্যাপ্তি মাঠের প্যান্ডেল ছাড়িয়ে আশপাশের রাসত্মা ঘাটে ছড়িয়ে পড়ে৷ সমাবেশটি মহা সমাবেশে রূপনেয়৷
পরে কমিউিনিটি পুলিশিং কার্যক্রমসহ সার্বিক আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর, জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউর হাসান রেজা ও কমিউনিটি পুলিশের গাজীপুর হাইওয়ে শাখার সভাপতি সুলতান আহমেদ আহমেদ সরকারকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়৷