বুধবার ● ৩১ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » মালয়েশিয়ায় নির্যাতিত তুহিন দেশে ফিরেছে
মালয়েশিয়ায় নির্যাতিত তুহিন দেশে ফিরেছে
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি (১৬ ভাদ্র ১৪২৩ বাংলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩২মিঃ) মুক্তিপণের জন্য মালয়েশিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতন করা সেই তুহিন রেজা দেশে ফিরেছে৷ ৩০ আগষ্ট মঙ্গলবার গভীর রাতে নিজ খরচে মালয়েশিয়ায় থেকে ঝিনাইদহে আসেন তিনি৷ ঝিনাইদহে এসে ৩১ আগষ্ট বুধবার দুপুরে তুহিন সদর হাসপাতালে ভর্তি হন৷
এ সব তথ্য জানান তুহিন রেজার মা রোকেয়া খাতুন৷ তিনি জানিয়েছেন মুক্তিপণ আদায়ের জন্য ছেলে তুহিন রেজার দুই পা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে৷ সে এখন হাটতেও পারছে না৷ দালালরা বলেছিলো মালয়েশিয়া থেকে আনা ও চিকিত্সার সব খরচ তারা বহন করবে৷ কিন্তু তারা উঁকি মেরেও দেখেনি৷
ঘটনার সাথে জড়িত আলোচিত দালাল মাহফুজুর রহমান বল্টুকে পুলিশ গত ২১ আগষ্ট আটক করে৷ তারপর দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় দালাল বল্টুকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷
মধুহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েলের মধ্যস্থতায় দুই সপ্তার মধ্যে তুহিন রেজাকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও বিদেশে যাওয়ার খরচ দেওয়ার সমঝোতা হয়৷ কিন্তুু দালালরা এখন কোন খোঁজ নিচ্ছে না৷
উল্লেখ্য ২০১১ সালে লিবিয়া যাওয়ার জন্য এলাকার দালাল মহামায়া গ্রামের মধু, আসাদ, বেজিমারা গ্রামের মাহফুজুর রহমান ওরফে পল্টু ও তোরাব আলির কাছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করে তুহিন৷
দুই বছর ধরে ঘোরানোর পর দালালরা জানান, লিবিয়ার আবস্থা ভাল নয়৷ সাড়ে ৪ লাখ টাকা হলে ইরাক বা কাতারে পাঠানো হবে৷ এরপর ফ্লাইটের নামে তুহিনকে দফায় দফায় ১৬ বার ঢাকায় নিয়ে রাখা হয়৷
সর্বশেষ একই খরচে তুহিনকে ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়৷ মালয়েশিয়ায় পৌছানোর পর দালালচক্র তুহিনকে আটকিয়ে পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে৷ দাবিকৃত টাকা না পেয়ে তুহিনকে দফায় দফায় নির্যাতন করে৷
কোন উপায় না পেয়ে তুহিনের দরিদ্র বাবা গরু ও মাঠের জমি বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেন৷ এরপর তুহিনের নিকট আরো দশ হাজার টাকা দাবি করা হয়৷ টাকা দিতে না পারাই তিন তলা বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে হত্যার চেষ্টাও করা হয়৷
এতে তুহিনের দুই পা ভেঙ্গে যায়৷ দেশে ফিরে পঙ্গু তুহিন জানান, তার উপর নির্যাতনের বিচার চান তিনি৷