সোমবার ● ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » পাবনা » ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু হওয়া জরুরী
ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু হওয়া জরুরী
তৌহিদ আক্তার পান্না, ঈশ্বরদী :: (২১ ভাদ্র ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় দুপুর ২.১৭মিঃ) ঈশ্বরদীতে অবস্থানরত রাশিয়ানসহ বিভিন্ন দেশের তিন’শতাধিক বিদেশীরা বিমান ভ্রমন করতে না পেরে প্রতিনিয়ত অসুবিধার হচ্ছেন৷ তাদের কাজের গতি বৃদ্ধিতেও বাধার সৃষ্টি হচ্ছে৷ বিদেশীসহ এ অঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রীরাও বিমানে চলাচল করতে না পেরে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা মুখি অর্থনৈতিক ৰতির শিকার হচ্ছেন৷ একইসাথে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ও বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে৷ বিদেশীদের একাধিক ও বিমান বন্দর সংশিস্নট বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রের দেওয়া তথ্যে এসব জানাগেছে৷
চুয়ান্ন বছর আগে পাকিসত্মান আমলে নির্মিত ঈশ্বরদী বিমানবন্দরটিতে প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইট চলাচল করতো৷স্বাধীনতার পরও বেশ কিছুদিন এটি চালু ছিল এবং যাত্রী সংখ্যাও ছিল বেশী৷ পাশবর্তী পাবনা, কুষ্টিয়া ও নাটোর থেকে যাত্রীরা ঢাকাতে যাতায়াত করতো ঈশ্বরদী বিমানবন্দর থেকে৷ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারনে এরশাদ সরকার আমলে হঠাত্ করে রাজশাহীতে নতুন একটি বিমানবন্দর চালু করার পর থেকে যাত্রী সংকটের অজুহাত দেখানো শুরু হয়৷ নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় কর্মকর্তারা এ ষড়যন্ত্র শুরু করেন৷ এরই অংশ হিসাবে ১৯৮৭ সালে এই রুটে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়৷ বর্তমানেও শুধুমাত্র রানওয়ে প্রশস্ত না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বেসরকারী বিমান সংস্থাগুলোও এ বিমান বন্দরটি ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না৷ সূত্রমতে, ঈশ্বরদীসহ নিকটস্থ এলাকার যাত্রীদের প্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালের ১৭ই জুলাই থেকে আবারও বিমান চলাচল শুরু করে৷ তিন বছর পর১৯৯৬ সালের ৩ নবেম্বর পুনরায় বিমান চলাচল বন্ধ করা হয় লোকসানের অজুহাতে দেখিয়ে৷
এরপর ঈশ্বরদী অচলের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৯৮ সালের ১০ মে বেসরকারি এয়ারলাইন্স এয়ার পারাবতের ফ্লাইট চালু করা হয়৷ মাত্র ৩৮ দিন চলার পর ২৮ জুন এই সার্ভিস বন্ধ করা হয়৷
দীর্ঘ ১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালের ১৮ই নবেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আবারও ফ্লাইট উদ্বোধন করা হয়৷ কিন্তু ৬ মাস ১১ দিন পর আবার বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ নানা কারণেই বর্তমানে ঈশ্বরদীর এই বিমানবন্দরটি আবারও চালু হওয়া বিশেষ প্রয়োজন৷ এখানে রয়েছে দেশের গুরত্বপূর্ণ বাংলাদেশ সুগারক্রপ ইন্সটিটিউট, ঈশ্বরদী ইপিজেড, ডাল গবেষণা কেন্দ্র, রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় অফিস, আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, পাবনা চিনিকল, আলহাজ্ব টেঙ্টাইল মিল, পাকশী নর্থবেঙ্গল পেপার মিল ,বেনারসী পলস্নীসহ চার শতাধিক চাউল কল, অটো রাইচ মিল, অয়েল মিলসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ৷ এছাড়াও এখানে নির্মিত হচ্ছে দেশের একমাত্র পারমানবিক বিদ্যুত প্রকল্প৷
বর্তমানে রূপপুর বিদ্যুত্ প্রকল্প ও ইপিজেডকে ঘিরে অনেক বিদেশীর বসবাস শুরু হয়েছে৷ জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা যাতায়াত করতে চাইলেও সেই সুযোগ তাঁরা পাচ্ছেন না৷ ঈশ্বরদীতে অবস্থানরত রাশিয়ানসহ বিভিন্ন দেশের তিন’শতাধিক বিদেশীরা বিমান ভ্রমন করতে না পেরে প্রতিনিয়ত অসুবিধার সন্মুখিন হচ্ছেন৷ তাদের কাজের গতি বৃদ্ধিতেও বাধার সৃষ্টি হচ্ছে৷ বিদেশীসহ এ অঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রীরাও বিমানে চলাচল করতে না পেরে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা মুখি অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন৷ একইসাথে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ও বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন মোটা অংকের আর্থিক ৰতির শিকার হচ্ছে৷
ঈশ্বরদী বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপক আব্দুর রশিদ আকন্দ জানান, এ বিমান বন্দরটি ৪৩৫ একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত৷ রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৭শ’ ফুট ও প্রস্থ ৭৫ ফুট৷ বর্তমানে দেশে যে ধরনের ফ্লাইট রয়েছে, সেগুলো ঈশ্বরদী বিমান বন্দরে অবতরণের জন্য রানওয়ের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সমপ্রসারণ করা প্রয়োজন৷ রানওয়ের দৈর্ঘ হওয়া প্রয়োজন ৬ হাজার ফুট এবং প্রস্থ ১শ’ ফুট৷ ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে একটি প্রসত্মাব বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে৷ সরেজমিন পর্যবেক্ষন করে রিপোর্ট সংগ্রহের মাধ্যমে করনীয় বিষয় নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ কিন্তু তারা এখনও তদন্ত করে রিপোর্ট দেননি বিমান বন্দরটি চালুর করণীয় বিষয়ে৷