সোমবার ● ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আখ চাষের উন্নয়নে কর্মশালা
রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আখ চাষের উন্নয়নে কর্মশালা
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (২১ ভাদ্র ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩.২০মিঃ) পার্বত্য চট্টগ্রামে অাঁখ চাষের অপার সম্ভাবনা রয়েছে৷ এ সম্ভবনাকে কাজে লাগাতে পার্বত্য এলাকায় স্থায়ী ইক্ষু গবেষনা কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য গুরুত্বারোপ করেছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা৷ তিনি বলেন, আখ চাষের উন্নয়নে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করা গেলে পার্বত্য অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে আখ চাষ একদিকে যেমন লাভজনক ফসল হয়ে উঠবে তেমনী পার্বত্য অঞ্চলে ঝেঁকে বসা অভিসপ্ত তামাক চাষের বিলুপ্ত ঘটবে৷
সোমবার ৫সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে আয়োজিত বাংলাদেশ সুগার ক্রপ রিসার্স ইন্সটিটিউট (বিএসআরআই) এর এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্ত্যবে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ মন্তব্য করেন৷
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে ইক্ষু চাষ সম্প্রসারনের জন্য পাইলট প্রকল্প (৩য় পর্যায়)’র আওতায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়৷
অনুষ্ঠানে ইশ্বরদী, পাবনার বাংলাদেশ সুগার ক্রপ রিসার্স ইন্সটিটিউট (বিএসআরআই) এর পরিচালক গবেষনা ও প্রকল্প পরিচালক ড. আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুন কান্তি ঘোষ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পার্বত্য অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক হারুন অর রশীদ, কৃষি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটির উপ-পরিচালক রমনী কান্ত চাকমা৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসআরআই রাঙামাটি উপকেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইনচার্জ কৃষিবিদ ধনেশ্বর তংচঙ্গ্যা৷ কর্মশালায় পার্বত্য চট্টগ্রামে আখচাষে সম্ভবনা নিয়ে মূল তথ্য উপস্থাপন করেন বিএসআরআই বান্দরবান উপকেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইনচার্জ কৃষিবিদ ক্যছেন৷
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, পাহাড়ে বসবাসরত অধিকাংশ মানুষই কৃষির উপর নির্ভরশীল৷ তাই কৃষিতে স্বল্প সময়ে উত্পাদন বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে৷ এতে কৃষির উন্নয়ণ ঘটবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন৷ তিনি বলেন, কৃষির বিভিন্ন ফসলের ন্যয় আখ কিংবা ইক্ষু এবং তার সাথে সাথীফসল হিসেবে বিভিন্ন ফসলের চাষ করা সম্ভব৷ এই চাষাবাদ করে এখানকার চাষীরা যেন নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে সে লক্ষে স্থানীয় কৃষিবিদদের কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি৷ চেয়ারম্যান বলেন, পার্বত্য এলাকায় যেভাবে তামাক চাষ গেড়ে বসেছে তা এই এলাকার জন্য অভিশাপ৷ ব্যপক আখ চাষের মাধ্যমে এ তামাক চাষের বিলুপ্ত ঘটাতে হবে৷ চাষীদের তামাকচাষে নীরত্সাহিত করতে আখচাষে ব্যপক প্রনোদনা, সহজ ঋণ সুবিধা ও কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণ করতে হবে৷ চাষীদের ইক্ষুর পাশাপাশি সাথীফসল চাষে উত্সাহিত করতে হবে৷ আর এজন্য মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যন ধারনা দিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের আহ্বান জানান চেয়ারম্যান৷
এর আগে কর্মশালায় মুক্ত আলোচনায় বক্তরা পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিবেশ ও আবাহাওয়া উপযোগী আখের বীজ উত্পাদনে পর্যাপ্ত গবেষনার জন্য স্থায়ী গবেষনা কেন্দ্র, কৃষি সম্পকিত প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বিত কার্যক্রম, মিডিয়ার প্রচারনা বাড়ানোসহ স্থানীয় কৃষকদেরকে আখ ও তার সাথে সাথীফসলের চাষ বাড়াতে উদযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন৷
কর্মশালায় রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের কৃষিবিদ, এনজিও কর্মী ও বিভিন্ন পেশাজীবির ব্যাক্তিবর্গসহ সাধারণ চাষীরা অংশ নেন৷