শুক্রবার ● ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ব্লাক বেঙ্গল ছাগল পালনে সবিতা রানীর ভাগ্য বদল
ব্লাক বেঙ্গল ছাগল পালনে সবিতা রানীর ভাগ্য বদল
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহে চলছে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ছাগল পালন৷ উন্নত জাতের ব্লাক বেঙ্গল ছাগল লালন-পালন করে সবিতা রানী অধিকারী ও রাধা পদ অধিকারী ঝিনাইদহে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ স্থাপন করেছেন৷
কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে প্রচন্ড ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এই দম্পতি৷ তাদের দেখাদেখি ও উত্সাহে ওই গ্রামের অন্যান্য পরিবারগুলোও আস্তে আস্তে ঝুঁকে পড়ছে ছাগলের খামার করতে৷
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার শৈলমারী গ্রামের ছবিতা রানী জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়৷ গরীব হওয়ায় অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে চলছিল সংসার৷ তাই তখন থেকেই দু-জনে শুরু করেন ছাগল পালন৷
প্রথমে একটি দেশীয় প্রজাতির ব্লাক বেঙ্গল জাতের কালো ছাগল দিয়ে শুরু হয় ছাগল পালন৷ এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের৷ এখন তাদের ছাগলের সংখ্যা ৮৫টি৷ আর সঙ্গে রয়েছে বাচ্চা ছাগল৷
প্রতি বছর ২৫ থেকে ৩৫টি ছাগল বিক্রি করছেন তারা৷ ছাগল পালন করে প্রতি বছর তাদের সংসারে আয় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা৷
ছাগল পালনের লাভের টাকা দিয়ে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন ২ মেয়েকে, বাড়িতে দিয়েছেন পাকা ঘর৷ সকাল ৯টা বাজলেই বাড়ির কর্তা ছাড়লগুলো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মাঠে খাওয়াতে৷ ফেরেন সন্ধ্যার আগ দিয়ে৷
ছবিতা রানীর স্বামী রাধা পদ অধিকারী জানান, তাদের মতো শৈলমারী গ্রাম, বেতাই, চন্ডিপুরসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ১১ হাজার পরিবার এখন জড়িত ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালনের সঙ্গে৷ এই ছাগলের রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে৷ আর পালনে খরচও খুব কম৷
ছাগী থেকে বাচ্চা জন্মের পর ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগে একটি ছাগল বিক্রির উপযোগী হতে৷ এ সময়ের মধ্যে খরচ হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা৷
আর বিক্রি করা হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা প্রতিটি ছাগল৷ খরচের তুলনায় লাভ দ্বিগুণ৷ আর তাই ঝিনাইদহে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বস্নাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালন৷
ছাগল খামার ও ছাগল পালনকারী পরিবারগুলোতে পুরুষদের পাশাপাশি বড় ভূমিকা রাখছে বাড়ির গৃহিণীরা৷ সংসার সামলানোর পাশাপাশি ছাগল পালনের সব ধরনের কাজ করছেন তারা৷ এতে স্বচ্ছলতা ফিরেছে এর সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলোতে৷
তবে সবিতা রানীর মেয়ে জানান, তাদের সবচেয়ে বড় খামার হওয়া সত্ত্বেও জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদফতর থেকে কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পান না৷
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান জানান, সমস্যা একটু থাকতে পারে৷ তবে এগুলো সমাধানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাই পদক্ষেপ নেবেন৷ আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা দেব৷