শনিবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » রাঙামাটি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের বেহাল দশা (ভিডিওসহ)
রাঙামাটি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের বেহাল দশা (ভিডিওসহ)
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (২ আশ্বিন ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.২০মি.) রাঙামাটি পার্বত্য জেলার স্বাস্থ্য সেবার অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের সেবার মান, হাসপাতালের জনবল, অবকাঠামো, পরিবেশ ও পারিপাশ্বিক অবস্থা কোন কিছুই রোগী বান্ধব নয় বলে স্থানীয়দের বারবার অভিযোগ৷
হাসপাতালের ভিতরের যেমন অবকাঠামোগত বেহাল অবস্থা তেমনি বাইরের চারপাশের অবস্থা৷ জেনারেল হাসপাতাল চত্বর ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধে বেসামাল অবস্থা হাসপাতাল এলাকায় স্থায়ী ভাবে বসবাসকারী ও রোগীদের৷ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি ১৯৮৬ সালে সরকারী ভাবে ১০০ শয্যা ঘোষনার পরও অবকাঠামোগত ভাবে এখনো চলছে সেই ৫০ শয্যা হাসপাতালের সরঞ্জাম দিয়ে৷ প্রতিদিন রোগী থাকে ২শতাধিক ৷ নেই কেবিনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ৷ ২টি মাত্র কেবিন দিয়ে চলছে যুগ যুগ ধরে ৷ প্রতিদিনের রোগীদের চিকিত্সা ও সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য ডাক্তার, নাসর্,এম্বুল্যান্স ও জনবলের সংকট লেগেই আছে ৷ রাঙামাটি জেনারেল হাসপালের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে বরাদ্ধকৃত সরঞ্জাম গুলি ঢাকা থেকে যখন রাঙামাটি আনা হয় তখন সেসব সরঞ্জাম পাওয়া যায় বেশীর ভাগই ব্যবহার অযোগ্য এবং নষ্ট ৷ স্থানীয় ভাবে এসব সরঞ্জাম ক্রয় ও মেরামত করার কোন টাকা বরাদ্ধ নাই৷এতে হাসপালের সরঞ্জান সব সময়ে অপূরনীয় থাকে ৷
জেনারেল হাসপাতালের বাইরে রাস্তার বেহাল দশা৷ জেনারেল হাসপাতালের মুল রাস্তা অবৈধভাবে দখল করে জেনারেল হাসপাতালের এম্বুল্যান্স ড্রাইভার ভুপাল বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বন্দরের সিএনএফ এজেন্ট এর কর্মচারী তপন বড়ুয়া ও তার স্ত্রী সদর হাসপাতালের সিনিয়র ষ্টাফ নার্স কাবেরী তালুকদার (বর্তমান রাঙামাটি নাসিং ইনষ্টিটিউট এর কর্মরত),বনরুপার নির্মল ষ্টোরের মালিক ব্যবসায়ী নির্মল চৌধুরী, চট্টগ্রাম কাষ্টমস অফিসের অফিস সহকারী দীগবিজয় চাকমা, দেবেশ চাকমা (চিক্কুমনি), রুপম চৌধুরী (সম্ভু) ও ঠিকাদার মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ক্রয়কৃত নতুন জায়গার মালিক মো.মনছুর দোকান ঘর ও বাড়ি নির্মান করে দখল করে আছে হাসপাতালের সরকারী ভুমিতে ৷
যেটুকু রাস্তা সেটারও বেহাল দশা৷ ভাঙ্গা, গর্ত আর আবর্জনায় ভরপুর ৷ রাঙামাটি - চট্টগ্রাম মুল সড়ক থেকে জেনারেল হাসপাতালের সংযোগ সড়কের স্থানে বিটিসিএল তাদের ক্যাবল বসানো সময় হাসপাতালের রাস্তাটি কেটে ফেলে যা অধ্যবদি মেরামত করে দেয় নাই ৷ এতে রোগীবাহি গাড়ি গুলি হাসপাতালের প্রবেশ পথে চলাচল করতে অসুবিধা হচ্ছে ৷
নার্সিং ডরমিটরী (আন্টাগার) যে নার্সেস কর্মকর্তারা অবস্থান করছেন, তাদেরও রয়েছে চাপা ক্ষোভ ৷ সরকারী ভাবে প্রতি মাসে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে অথচ বৈদ্যুতিক সুইচ বোর্ড নষ্ট, পয়ঃনিষ্কাশনের স্যুয়ারেজ পাইপ নষ্ট, দরজা জানালা ভাঙ্গা মেয়াদ উত্তীন ঝুঁকিপুর্ন বসবাসের অযোগ্য নার্সিং ডরমিটরীর নেই কোন নিরাপত্তার বাউন্ডারী প্রাচীর৷ নাসিং ডরমিটরী বাইরে চারপাশের রয়েছে ঝুঁকিপুর্ন রেন্টি কড়াই ও ইউ কালেক্টর গাছ৷ এছাড়া লাশকাটা ঘরটি স্যাঁতস্যাঁতে তার চারপাশ ডাবের খোলস দিয়ে ভর্তি এবং হাসপাতালের একমাত্র রান্না ঘরটির পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর ৷
হাপাতালের প্রাচীরের ভিতর ৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ আবু গরুর ঘর আর ব্যক্তিগত ভাবে পানির রিংওয়েল নির্মানসহ প্রায় পঞ্চাশ শতক জায়গা জুড়ে রীতিমত প্রতি বছর মৌসুমৗ সবজির ক্ষেত বানিয়ে নিজস্ব ভুমির ন্যায় চাষাবাদ করছে৷ এলাকার লাকড়ি ব্যবসায়ী, সিএনজি চালক, ঠেলাগাড়ী চালক, ভাঙাড়ী ব্যবসায়ীরা যত্রতত্র ঠেলাগাড়ী ও ভাঙাড়ীর ঠেলা রেখে দিয়েছে৷ সরকারী হাসপাতাল নিজেদের বাপ দাদার সম্পত্তির ন্যায় ব্যবহার করছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নাম ব্যবহার করে৷ কোন কোন জায়গায় হাসপাতালের প্রাচীরে খোদায় করে ঘরবাড়ি তৈরী করেছে বহিরাগতরা৷ সুড়ঙ্গ করার কারণে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে জানমালের ক্ষতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না ৷
বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিমাসে রাঙামাটি জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার উত্থাপন করলেও অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না ৷
রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহানের নেতৃত্বে একটি চক্র জেনারেল হাসপাতালের মসজিদ কমিটির নাম দিয়ে হাসপাতাল কর্তপক্ষের বিনা অনুমতিতে হাসপাতাল বাউন্ডারীর ভিতরে ভাড়াঘর ও দোকানপাট নির্মান করে নিজেদের সম্পদ বা ব্যাত্তিগত সম্পদের ন্যায় প্রতিটি দোকান ঘরের ৬লক্ষ টাকা করে জামানত এবং প্রতিমাসে সেসব ভাড়াঘর ও দোকান থেকে ভাড়া বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ৷
রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন অফিস, জেনারেল হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ সব জেনে শোনে নিরব ৷ সরকারী ভাবে নির্মিত মসজিদ দেখার দায়িত্ব হাসপাতাল কতৃপক্ষের হলেও বিষয়টি স্পর্শকাতর ধর্মীয় ভাবমুর্তির বিষয় হওয়াতে কেউ সহজে মুখ খুলছে না ৷ এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মোহাম্মদ শাহজাহান গং চক্রটি মসজিদের নাম ভাংগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা ৷ রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহানের রয়েছে জনতা প্যাথলজিসহ রাঙামাটি শহরে কোটি টাকার ব্যবসা ৷
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে স্থানীরা একটি বৌদ্ধ মন্দির নির্মানের দাবি জানিয়েছে ৷
রাঙামাটি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের বেহাল দশা এবং নানা সমস্যায় জর্জড়িত বিষয়ে সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ও রাঙামাটি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. স্নেহ কান্তি চাকমার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চিকিত্সক থাকার কথা ৫জন রয়েছে ৩জন, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে থাকার কথা ৩১জন রয়েছে ১৮জন,সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ৯জন রয়েছে ৩জন, লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১৬জন রয়েছে ৮জন, বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১৬জন রয়েছে ৬জন,বিলাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১২জন রয়েছে ৩জন, রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১২জন রয়েছে ৭জন,জুরাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১৩জন রয়েছে ৬জন, নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১৩জন রয়েছে ৫জন,কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১৬জন রয়েছে ১০জন,কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১৩জন রয়েছে ৩জন,বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার কথা ১৪জন রয়েছে ৪জন,ও রাঙামাটি সদরে বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে থাকার কথা ২জন রয়েছে ১জন,বক্ষব্যাধি হাসপাতালে থাকার কথা ২জন রয়েছে ১জন,রাঙামাটি পুলিশ হাসপাতালে থাকার কথা ১জন রয়েছে ১জন ও রাঙামাটি জেলা কারাগারে থাকার কথা ১জন রয়েছে ১জন ৷
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালসহ দশটি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিত্সকদের মঞ্জুরীকৃত পদের সংখ্যা হচ্ছে ১৭৬ জন ৷ এর বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৮৬ জন চিকিত্সক ৷
এছাড়া রয়েছে রোগীবাহি এম্বুল্যান্স সংকট ৷ আমাদের রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে কেবিন আছে মাত্র ২টা ৷ এখন উপর তলায় শিশুদের জন্য(নিউ বর্ন) কেবিনের কাজ চলতেছে ৷ শিশুদের জন্য একটা বিশেষ ওয়ার্ড হবে যার নাম স্পেশাল কেয়ার অব নিউ বর্ন বেবী ইউনিট (এসকেএনইউ)৷ তার পাশে কেবিন করার জন্য রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কাজ করতেছে ৷ সেখানে নতুন ৫টা কেবিন হওয়ার আমার সুবিধা আছে ৷ তার পাশে মহিলা ওয়ার্ড করার কার্যক্রমও চলতেছে ৷ রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শয্যা সংখ্যা বাড়ানো জন্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রালয়ের প্রতি অনুরোধ জানান ৷
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের রাস্তার জায়গা অবৈধ দখলদারের বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, রাঙামাটি শহরের প্রধান সড়ক থেকে হাসপাতালের যে রাস্তা সেটা রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালেরই নিজস্ব রাস্তা, এবিষয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ভালোভাবে জানে৷ তত্বাবধায়ক সরকার ফকরুদ্দীন ও মঈনউদ্দিন এর সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তুষার কান্তি চাকমা জায়গার টাকা সরকার থেকে বুঝে নিয়েছে ৷ এটা নাকি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তুষার কান্তি চাকমা’র জায়গা ৷
বিষয়টি জেলা পরিষদ বেশী ভালো বলতে পারবে ৷ তবে আমার জানামতে আমাদের হাসপাতালের নামে কিছু জায়গা কেনা আছে যারমধ্যে কিছু জায়গা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা অবৈধভাবে দখল করেছে ৷ আবার দখল করে করে বিক্রিও করে, এ বিষয়টা বন্ধ হওয়া দরকার ৷ এই জায়গাটা কার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তুষার কান্তি চাকমা’র কাছ থেকে হাসপাতালের নামে কেনা হলো আর এরা অবৈধভাবে দখল করছে কিনা পুরো বিষয়টা সুরাহা হওয়া দরকার ৷ তিনি বলেন এ ব্যাপারে একটা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি করে হাসপাতালের জায়গার পরিমাপ পরিচিহ্নিত করে সরকারী সম্পদ রক্ষা করা জরুরী ৷
সিভিল সার্জন বলেন, হাসপাতালের জায়গা পরিমাপ পরিচিহ্নিত করে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে ৷ অবৈধ দখলদারদের তাত্ক্ষনিকভাবে উচ্ছেদ করা প্রয়েজন আছে ৷ হাসপাতালের জায়গা পরিমাপ পরিচিহ্নিত করে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে হাসপাতালের জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বারবার লিখিত ভাবে অনুরোধ জানানোর পরেও প্রশাসন কেন পদক্ষেপ নেয়না, কেন প্রশাসন নীরব ভুমিকা পালন করে, কেন উদাসীন আমার বোধগম্য নয় ৷
হাসপাতালের চারপাশে ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধের বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, আমাদের হাসপাতাল ও বিভিন্ন ওয়ার্ড সবসময় পরিচ্ছন্ন থাকে কিন্তু চারপাশের যে ময়লা আবর্জনা সেগুলো পৌর কর্তৃপক্ষ কেন পরিস্কার করেনা আমি জানিনা, সেসব আবর্জনা নেওয়া ও পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব পৌরসভা কর্তৃপক্ষের ৷ হাসপাতালের চারপাশ কেন পরিষ্কার করেনা ব্যাপারটা পৌর কর্তৃপক্ষ থেকে জিজ্ঞাসা করবেন ৷ প্রধান সড়ক থেকে হাসপাতালে যাওয়ার পথে যে ডাষ্টবিন সেটাও অপরিষ্কার, মূল সড়কে প্রধান ডাকঘরের সামনে ডাষ্টবিন সেটাও অপরিষ্কার, দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায়না৷ হাসপাতালের এলাকায় নার্সিং হোষ্টেলের আগেপিছে জায়গাগুলোর পরিবেশ মারাত্মকভাবে নষ্ট করে ফেলেছে বহিরাগত আশপাশের লোকজন৷ পৌরসভার কাজ কি আমি বুঝিনা ৷ জেলার জনগুরুত্বপূর্ন একটা প্রতিষ্ঠান জেনারেল হাসপাতাল, সরকার তথা জনগনের সম্পদের এমন দশা, অথচ কোন প্রশাসনই হাসপাতালের পরিবেশ সুরক্ষা, সংরক্ষনের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ৷
ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা বলেন, আমি নিজে জানি না কে বা কারা জেনারেল হাসপাতাল বাউন্ডারীর ভিতর দোকানপাট করতেছে, কারা এসব দোকান পাটের ভাড়া নিচ্ছে ৷ আমি মনে করি এ জনগুরুত্বপুর্ন প্রতিষ্ঠান তথা জেলার সম্পদ রক্ষায় দলমত নির্বিশেষে একমত পোষন করা উচিত্ ৷
রাঙামাটি নার্সিং ইন্সটিউিট এ ছাত্রীদের থাকার হোষ্টেলের স্বল্পতা বিষয়ে তিনি বলেন, নার্সিং ইন্সটিটিউটে থাকার সমস্যা প্রচুর, আগে নার্সিং ইন্সটিটিউটে ছাত্রী সংখ্যা ছিলো মাত্র ৮০ জনের মত অবকাঠামো ৷ এখন এখানে ২১৯ জন ছাত্রী ৷ সরকার তো এগুলো বুঝেনা৷ ২১৯ জন ছাত্রী থেকে অর্ধেক ছাত্রী বাইরে ভাড়া করে থাকে, অর্ধেক হোষ্টেলে থাকে ৷ কারণ একটা কক্ষে যেখানে ৮ জন থাকার জায়গা সেখানে দেখা যাচ্ছে ১৮ জন ছাত্রী গাদাগাদি করে থাকছে, এটাতো অমানবিক ৷ যেখানে ১০ জনে মিলে একটা বাথরুম থাকার কথা সেখানে ৩০ জনে মিলে একটা বাথরুম৷ অবকাঠামোর অভাব রয়েছে ৷
নার্সিং ডরমিটরীর ভিতরে বৈদ্যুতিক সুইচবোর্ড নষ্ট, দরজা জানালা ভাঙ্গা, সেনিটারী ব্যবস্থা নাই,বিল্ডিং এর বাউন্ডারী নাই সবমিলিয়ে বেহাল অবস্থা এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপুর্ণ বিল্ডিং এর বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমি এখনো দেখি নাই, আমি দেখে আপনাকে বিষয়টা ব্যাখ্যা দিব ৷
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের বাউন্ডারীর ভিতর উঁচু ও ঝুকিপূর্ণ গাছের বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন স্বীকার করেন ৷ তিনি জানান,উঁচু ও ঝুকিপূর্ণ গাছে গুলির কারণে গাড়ি গ্যারেজ ও জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে ঠিক মত রোদ পড়ে না ৷ এবিষয়ে কটেশনের মাধ্যমে গাছ গুলি কাটার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ৷
জেনারেল হাসপাতালের সীমানা প্রাচীরের ভিতরে অবৈধ দখলদার, গরু ঘর, গরু চড়া,গোবরের দুর্গন্ধ সম্পুর্ন দূষিত পরিবেশের বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা বরেন, চিকিত্সা সেবার মান বাড়াতে হলে প্রথমে হাসপাতালের পরিবেশের সুষ্টতা বজায় রাখতে হবে ৷ দূষিত পরিবেশে সেবার মান বাড়বেনা ৷ হাসপাতালের সার্বিক উন্নয়নের জন্য স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর একমত পোষন করতে হবে ৷ এখানে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন কর্মকান্ড করছে, সেগুলো উত্তোরনের জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদেরও ভুমিকা পালন করতে হবে, সচেতন হতে হবে ৷ কারণ আমি বারবার বলছি এটা জেলার সম্পত্তি, সাধারন মানুষের চিকিত্সা সেবার জেলার শেষ আশ্রয় ৷ এটা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব ৷
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা আর পুরো রাস্তাটি গর্ত কোন কোন জায়গায় ভেঙে গেছে এসব বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আমি পৌর সভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীর সাথে কথা বলেছি ৷ রাস্তাটি রাঙামাটি পৌরসভা থেকে মেরামত করে দেওয়ার কথা ৷ রাস্তার কারণে রোগীদের চরম অসুবিধা হচ্ছে ৷