রবিবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » আলীকদমের বিধবা হানিমার কী হবে শিশু ভেরেনিকার পিতৃ পরিচয়?
আলীকদমের বিধবা হানিমার কী হবে শিশু ভেরেনিকার পিতৃ পরিচয়?
আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: (১০ আশ্বিন ১৪২৩ বাংলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪০মিঃ) প্রধান শিক্ষকের কু-লালসার স্বীকার প্রতিবেশি হানিমা ত্রিপুরার সন্তান শিশু ভেরেনিকা দত্ত ত্রিপুরার পিতৃ পরিচয় কি হবে, এই নিয়ে চলছে নানা সংশয়৷ বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলা সদরের চার কিলোমিটার দুরে অবস্থিত পাহাড়ি গ্রাম অসতি ত্রিপুরা পাড়া৷ পাড়ার পাশেই রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিৰকের কলেস্নাল দত্ত রাসেল বিয়ে করার প্রলোভন নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরী করে হানিমার সাথে৷
অনুসন্ধানে জানা যায় ২০১১ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকের ঘটনা৷ বিধবা হানিমা ত্রিপুরার পেটে সন্তান আসে৷ এ সনত্মান কার এ নিয়ে শুরু হয় নানান কথা৷ অসতি ত্রিপুরা পাড়ার লোকজনকে হানিমা ত্রিপুরা জানান, তার গর্ভের সন্তানের জনক কল্লোল দত্ত (রাসেল)৷ এ ঘটনার কয়েকমাস পর হানিমা একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন৷ অভিযুক্ত শিক্ষাক কল্লোল দত্ত (রাসেল) এর বাবার নাম অরুন বিকাশ দত্ত, মাতা- মীরা দত্ত৷ রাসেল আলীকদম উপজেলার ‘অসথি ত্রিপুরার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক৷ তার পিতা ও মাতাও সরকারি চাকুরিজীবি৷
বিধবা হানিমা ত্রিপুরার সন্তানের পিতৃত্ব নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা অনুসন্ধানে উদ্যোগি হয় বেসরকারী সংস্থা গ্রীনহিল এর শিখা প্রকল্প৷ শিখা প্রকল্পের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে শিশু ভেরেনিকা দত্ত ত্রিপুরা পিতৃ পরিচয়ের অভাবে এখনো পর্যন্ত জন্মনিবন্ধন না হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে ৷
অনুসন্ধানে প্রকাশ, ২০১১ সালের অক্টোবরে বিধবা হানিমা একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন৷ তার নাম রাখা হয় ‘ভেরেনিকা দত্ত ত্রিপুরা৷ বয়স বর্তমানে প্রায় ৫ বছর৷ শিশুটির জন্ম নিবন্ধন এখনো পর্যন্ত করা হয়নি৷ ফলে বাড়ির পার্শবতী বিদ্যালয় থাকা সত্ত্বেও শিশুকন্যাটি এখনো পর্যন্ত ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না৷
শিশুটির জন্ম নিবন্ধন কেন করেন নি, জানতে চাওয়া হয় হানিমার কাছে৷ হানিমা বলেন, জন্মনিবন্ধন করতে গেলে মেয়ের পিতা কল্লোল দত্ত রাসেল এর সহযোগিতা দরকার৷ কিন্তু সে সহযোগিতা করছেনা৷ হানিমার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আপনার সন্তানের ভবিষ্যত্ কী? নিরুত্তর থাকেন হানিমা৷
অভিযুক্ত শিক্ষক কল্লোল দত্ত (রাসেল) বলেন, ইতোপূর্বে ‘ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সিদ্ধান্ত মতে, আমি ১ লক্ষ টাকা হানিমাকে প্রদান করেছি৷ আমার সাথে আপোষ নামা হয়েছে৷ জন্ম নিবন্ধনে ভূমিষ্ট সন্তানের পিতার নাম কী হবে জানতে চাইলে রাসেল বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধনে কন্যা শিশুটির পিতার নাম হানিমার আগের স্বামীর নাম হবে! আমার সাথে এ ধরণের চুক্তি হয়েছে৷ ১৫ বছর আগে মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তি কিভাবে সন্তানের বাবা হবে এ প্রশ্নের উত্তরে চুপ থাকেন রাসেল৷
হানিমার বড় ভাই সাবেক ইউপি মেম্বার বীরেন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, ‘পিতার নাম অবশ্যই ‘কল্লোল দত্ত (রাসেল) হবে’৷ স্থানীয় ত্রিপুরা কল্যাণ সংসরে সভাপতি গবিচন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সংসদে শালিস হয়েছিল৷ শালিসে অভিযুক্ত শিক্ষক রাসেল স্বীকার করেন, হানিমার কন্যা শিশুর জনক তিনি৷