সোমবার ● ৩ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রকৃতি ও পরিবেশ » সুরমা নদীর ভাঙ্গনে লক্ষীবাউর বাজার ও মসজিদ নদীগর্ভে
সুরমা নদীর ভাঙ্গনে লক্ষীবাউর বাজার ও মসজিদ নদীগর্ভে
সিলেট জেলা প্রতিনিধি : (১৮ আশ্বিন ১৪২৩ বাংলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩.১২মিঃ)সিলেটে সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে কখনও প্রাথমিক বিদ্যালয়, কখনো মসজিদ, কখনো বাসাবাড়ী বা বাজার নদী গর্ভে বিলীন বা অস্তিত্ব সঙ্কট । এবার সুরমার গ্রাসে নদীর মারাত্মক ভাঙনের মুখে পড়েছে ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়ক। সুরমার অব্যাহত ভাঙনে সড়কটির প্রায় দেড় কলোমিটার সড়ক পড়েছে হুমকির মুখে। সড়কটির পুরো অংশই সুরমা নদীর কূল ঘেঁষা হওয়ায় আরো কয়েকটি অংশে ভাঙন ধরেছে। ভাঙন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে। অব্যাহত নদীভাঙনের ফলে যেকোনো মুহূর্তে সিলেটের দোয়ারাবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার আশঙ্কাও করছেন স্থানীয়রা। ফলে সড়ক যোগাযোগ ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে সুরমার উত্তর পারে বসবাসরত ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষকে। ইতি মধ্যেই একটি মসজিদ, ১০-১২টি দোকান ও শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। গত বছরের দু’দফা বন্যায় সড়কটির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল।
উল্লেখ্য, নব্বই দশকের শেষের দিকে সুরমা নদীর উত্তর পার নোয়ারাই থেকে সুরমার কূল ঘেষে ছাতক-দোয়ারা সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়। সুরমার কূল ঘেঁষা এ সড়কটি নদীভাঙনের মুখে পড়ে সুবিধাভোগী মানুষের মধ্যে চরম হতাশা সৃষ্টি করে যাচ্ছে বারবার। প্রথমবারের মতো পাকা সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হলে তৎকালীন সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক প্রশস্তকরণসহ দ্বিতীয় দফা সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে ছাতক-দোয়ারার যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। ইতিমধ্যে সুরমা নদীর ভাঙনে দু’বার পাকা সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সঙ্গে দোকানপাট ও বহু ফসলি জমিও গেছে সুরমার পেটে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ সড়কটির লক্ষীবাউর এলাকার প্রায় দেড় কিলোমিটার পাকা সড়ক আবারো পড়েছে মারাত্মক ভাঙনের মুখে। লক্ষীবাউর বাজার জামে মসজিদ ও বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান বহু আগেই ভাঙনের মুখে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। সড়কের পাশাপাশি লক্ষীবাউর বাজারটি আবারো নদীভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। লক্ষীবাউর গ্রামের সাইদ আলী ও আব্দুল বারী জানান, সুরমার ভাঙনে ফসলি জমি, দোকানপাট হারিয়ে তাদের মতো অনেকেই এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। নদীভাঙন রোধ করা না গেলে এলাকার ফসলি জমি এক সময় সুরমায় গ্রাস করে ফেলবে। স্থানীয় মনির উদ্দিন মেম্বার জানান, সুরমার অব্যাহত ভাঙনে এ অঞ্চলের মানুষেকে নিঃস্ব করে ফেলছে। দু’দফা পাকা সড়কসহ ফসলি জমি সুরমা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তৃতীয়বারের মতো নির্মিত সড়কটিও মারাত্মক ভাঙনের মুখে পড়েছে। লক্ষীবাউর বাজারের মসজিদটি ইতিমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে। নতুনভাবে নির্মিত মসজিদটিও পড়েছে হুমকির মুখে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মসজিদসহ লক্ষীবাউর বাজার নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। ছাতক সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সজীব আহমদ জানান, বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙনের সচিত্র প্রতিবেদন ও সুপারিশ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে ১২ ফুট এ সড়কটি ১৮ ফুট প্রশস্ত করে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কে ৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের (আরসিসি) কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষা শেষে সড়কের কাজ শুরু হবে।