বৃহস্পতিবার ● ৬ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » তিনদিন আটকে রেখে গৃহবধুকে ধর্ষন
তিনদিন আটকে রেখে গৃহবধুকে ধর্ষন
ঈশ্বরদী প্রতিনিধি :: (২১ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৫৮মি.) বন্ধু মিলনের বাড়িতে গৃহবধু সুরাইয়াকে (২১) তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষন করেছে প্রতারক ও ধান- চাউল ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জীবন৷ জীবন জয়নগরে চাউলের ব্যবসার সাথে জড়িত ৷ ৫ আক্টোবর বুধবার বিকেলে আলহাজ্ব মোড়ের আলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিত্সাধীন সুরাইয়া দুজন সংবাদকর্মীর কাছে অঝোরে ক্রন্দনরত অবস্থায় অভিযোগ করে বলেছেন, তাকে তিনদিন আটকে রেখে জীবন ধর্ষন করেছে৷
সুরাইয়া ও তার এক আত্মীয়র দেওয়া বর্ননায় জানা গেছে, এক বছর আগে ভেড়ামারার আল্লার দরগা গ্রামের মৃত রাহাত আলীর মেয়ে সুরাইয়া আকতারের বিয়ে হয় একই গ্রামের শাকিল নামে এক ভদ্র স্বভাবের সার ব্যবসায়ীর সাথে৷ আবার সুরাইয়ার বড় বোনের বিয়ে হয় ভেড়ামারায়৷ জীবন ও সুরাইয়ার দুলাভাই ফরিদুলের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল৷ সেই সুবাদে ফরিদুলের বিয়ের বরযাত্রী যাওয়ার সুযোগ হয়৷ বরযাত্রী হিসেবে বিয়েতে গেলে জীবন ও সুরাইয়ার মধ্যে পরিচয় হয়৷ এরপর থেকে দুজনের মধ্যে নিয়মিত মোবাইলে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে৷ জীবন মোবইলে তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে বার বার ঈশ্বরদীতে আসতে উদ্বুদ্ধ করলে সে গত শনিবার জীবনের ডাকে সাড়া দিয়ে তার কাছে চলে আসে৷ এরপর জীবন তার বন্ধু মিলনের বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করে৷ সুরাইয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে সোমবার রাতে তাকে ঈশ্বরদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ এ সময় জীবনের এক বোনও সাথে ছিল৷ ঘটনা জানার পর জীবনের ছলিমপুর ইউনিয়নের বড়ইচরা গ্রামের বাড়িতে কয়েকজন সাংবাদিক খোঁজ নিতে গেলে তাকে পাওয়া যায়না৷ তবে ঐসময় উপস্থিত বাড়ির লোকজন সুরাইয়া দুইদিন সেই বাড়িতে ছিল বলে স্বীকার করেন এবং তারা জীবনের মোবাইল নম্বর দিতে অস্বীকার করেন৷ সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার রাতে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই তালুকদার জীবনের বাড়িতে গিয়ে জীবনের খোঁজ করেন এবং বিষয়টি পরিস্কারভাবে জানার চেষ্টা করে থানায় ফিরে আসেন৷
বুধবার সুরাইয়ার মা জহুরা খাতুন ও বড় বোন সোহাগী ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি তাদেরকে হাসপাতালে যেয়ে সুরাইয়াকে থানায় আনতে বলেন৷ কিন্তু তারা হাসপাতালে গিয়ে সুরাইয়াকে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন৷ তখন হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্জ তাদের বলেন, সুরাইয়াকে পাবনায় রেফার্ড করা হয়েছে৷ সুরাইকে পাবনায় রেফার্ড করায় তারা আবার থানায় ফিরে ওসিকে বিষয়টি জানান ৷ ঈশ্বরদী হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন নং ২৯৯৭, ভর্তি তারিখ ৩/১০/১৬৷ কিন্তু বিকেল ৪টায় সুরাইয়াকে আলহাজ্ব মিল মোড়ের ঐ আলো ডায়গনস্টিক সেন্টারে পাওয়া যায়৷ সেখানে তাকে স্যালাইন দেয়া হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সুমন জানান৷ রাতেও তারা আলো ডায়গনস্টিক সেন্টারেই ছিল৷ পরে এখান থেকে সুরাইয়ার মা ও বোন তাকে নিয়ে থানায় যান৷
এদিকে একটি মহল জীবন ও মিলনের অপকর্ম আড়াল করতে এই ঘটনার মিমাংসা করার চেষ্টা চালায়৷ তারা মোটা অংকের টাকা নিয়ে থানা ও আশপাশের কিছু মানুষকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানা গেছে৷
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুরাইয়া, তার বোন ও মা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মামলা দায়েরের জন্য৷ ওসিকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি জীবনের বাড়িতে মঙ্গলবারের যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, লেখায় ভুলত্রুটি থাকায় মামলা হিসেবে এন্ট্রি হয়নি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো ৷