শনিবার ● ৮ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » শৈলকুপায় ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা
শৈলকুপায় ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (২৩ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৪১মি.) ঝিনাইদহের শৈলকুপায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা৷ ৮ অক্টোবর শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলার বিএলকে স্কুল প্রাঙ্গণে এ খেলার আয়োজন করে এলাকাবাসী৷
বিষধর সাপ নিয়ে খেলা দেখতে স্কুল প্রাঙ্গণে ভীড় করেছিল শত শত মানুষ৷ আর দর্শকদের হাততালি আর উল্লাসে খেলা দেখাতে ব্যস্ত সাপুড়েরা৷
কালের বিবর্তণে হারিয়ে যাওয়া ঝাপান খেলা আবারো ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে শৈলকুপা উপজেলার বিএলকে এলাকাবাসী৷
শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত বিএলকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী এ খেলা৷
বাদ্যের তালে তালে ঝুড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে ভয়ংকর গোখরা সাপ৷ উপস্থিত শত শত দর্শকের করতালি একটুও বিচলিত করতে পারে না ফণা তুলে এই নাচিয়েকে৷
মনিবের ইশারা ইঙ্গিত তাকে ঠিক বুঝিয়ে দিয়েছে, শুধু মানুষকে আনন্দ দেয়ার খেলা নয় বরং আজ মর্যাদার লড়াই৷
ঐতিহ্যবাহী এই সাপ খেলা দেখতে ভিড় করেন হাজারো দর্শক৷ বাদ পড়েনী মহিলা দর্শকরাও৷ ঢাক আর ডোলের বাদন আর নাছ গানে সাপুড়েরা দর্শকদের মন ভরিয়ে তোলেন৷
৭ টি সাপুড়ে দলের শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় কসরত৷
আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা৷ অনেকে জীবনে প্রথম আবার অনেকে অনেক দিন পর দেখছেন এ খেলা৷ এই ‘ঝাপান খেলা’ দেখে খুবই আনন্দিত হয় দর্শক৷
শৈলকুপার অংশগ্রহণকারী সাপুড়ে লিটন জানান, এটা আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা৷ আমার আগে আমার বাবা তার আগে তার বাবা সকলেই সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন ধারন করতেন৷
আমরা বাংলাদেশের এক প্রানত্ম থেকে অন্য প্রানত্ম পর্যন্ত সাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াই৷ এ ধরনের আয়োজন হলে এলাকার সাপুড়েদের মিলন মেলায় অনেক ভাব বিনিময় ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপের খোঁজ খবর পাওয়া যায় বলে জানান বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাপুড়েরা৷
এ ব্যাপারে আয়োজক সাবেক যুগ্ম সচিব মীর সাহাব উদ্দিন বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এই খেলার আয়োজন৷
কালের বিবর্তনে লোকাচারের অনেক কিছুই এখন হারিয়ে গেছে৷ কিন্তুু ঝাপাং গানের কোনো হেরফের হয়নি৷ সেই মধ্যযুগ হয়ে একবিংশ শতাব্দীর মানুষের কাছে এখনো সমান জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে এই ঝাপাং সাপের খেলা৷