রবিবার ● ৯ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » নবীগঞ্জের আলোচিত তন্নী হত্যার প্রধান আসামী রানু গ্রেফতার
নবীগঞ্জের আলোচিত তন্নী হত্যার প্রধান আসামী রানু গ্রেফতার
উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি :: নবীগঞ্জে বহুল আলোচিত মেধাবী কলেজ ছাত্রী তন্নী রায় ( ১৮) হত্যাকান্ডে মামলার প্রধান আসামী রানু রায় (২৩) কে আটক করেছে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ৷
হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার জয়দেব ভদ্র জানান,
তন্নী রায় হত্যাকান্ডের ২০ দিনের মাথায় গত ৭ অক্টোবর শুক্রবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, ডিবি পুলিশের ওসি আজমিরুজ্জামানের নেতৃত্বে বিকালে ব্রাম্মণবাড়ীয়া বাস স্ট্যান্ডে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে৷
পরে শনিবার দুপুর হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত সুলতানার আদালতে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে,তন্নী হত্যার কথা স্বীকার করে৷
হত্যার কারণ হিসেবে রানু রায় স্বীকারোক্তিতে বলে তন্নীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে রানু রায়ের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল, ১৭ সেপ্টেম্বর শনিবার, প্রেমিক রানু রায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তন্নী ইউ.কে আই সিটি কোচিং সেন্টারে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়ে, রানু রায়ের বাড়িতে যায়, যাওয়ার পর তন্নীর সাথে একাদিক ছেলের সম্পর্ক আছে এই বিষয়ে রানু , তন্নীকে ঐসব ছেলেদের সাথে কথা বলা বন্ধ করার জন্য বলে, তখন এক পর্যায়ে, রানুর সাথে তন্নীর ঝগড়া সৃষ্টি হয় এসময় রানু রায় তন্নীকে হাত দিয়ে আঘাত করে,এসময় তন্নীর গলায় রানু চেপে ধরে এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে তন্নী মারা যায়৷ এই হত্যা সাথে আর কেউ জড়িত আছে কী না এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি পুলিশের ওসি ও তন্নী হত্যার তদন্তকারী কর্মকর্তা আজমিরুজ্জামান জানান, রানু রায় ডিবি পুলিশকে জানায় সে একাই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে,এই হত্যাকান্ডের সাথে আর কেউ জড়িত নয়, এরপর ও বিষয় তদন্ত করে দেখা হবে৷ উল্লেখ্য, গত ১৭সেপ্টেম্বর বেলা দেড় টার দিকে তন্মী রায় ইউ.কে আই,সিটি কম্পিউটার সেন্টারে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেড় হয়ে আর ফিরেনি৷ এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করার ৩ দিনের মাথায় ছাত্রী তন্মী রায়ের বস্তাবন্দি লাশ নদী থেকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ পুলিশ৷ তন্নীর লাশ উদ্ধার এবং মামলা দায়েরের পর থেকেই পুলিশ ঘটনাস্থল এবং রানু রায়ের বাড়িসহ আশপাশের সম্ভাব্য ঘরবাড়িতে তল্লাশী অব্যাহত ছিল ৷ কয়েকদিন আগেই মামলাটি হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে প্রেরণ করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ৷ এদিকে তন্নী হত্যার আসামী রানু রায়কে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে একের পর এক বিভিন্ন সামাজিক,রাজনৈতিক সংগঠন মানববন্ধন করে আসছিল৷ বস্তাবন্দি নবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের মেধাবী ছাত্রী তন্নী রায়ের মৃত দেহ নদী থেকে উত্তোলনের সময় বস্তার ভিতরে ছামিন কোং ইট পাওয়া যায়৷
পুলিশ ঘটনাস্থল, প্রেমিক রানু রায়ের বাড়ি ও আশপাশ এলাকায় ঐ কোম্পানীর ইট কোথায় রয়েছে কি-না তার সন্ধানকালে জয়নগর এলাকায় সৈয়দ জাহির মিয়ার নতুন বিল্ডিং নির্মাণ কাজে ব্যবহার করতে দেখতে পায়৷ যা ঘটনাস্থল নদী থেকে প্রায় দেড় শত ফুট এবং রানু রায়ের বাড়ি থেকে প্রায় ৭০ ফুট দুরত্বে হবে৷ ফলে এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের তীর ধীরে ধীরে তন্নীর প্রেমিক রানু রায়ের দিকেই যাচ্ছিল৷ রানু রায়কে গ্রেফতার করলেই হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটিত হতে পারে বলে দাবী করে আসছিল সুশীল সমাজ৷