রবিবার ● ৯ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » বান্দরবানে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা চলছে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার
বান্দরবানে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা চলছে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার
বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :: (২৪ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৫৮মি.) বান্দরবান জেলা সদরের অদুরে রোয়াংছড়ি উপজেলার ছাইংগ্যা নামক এলাকায় প্রকাশ্যে দিবোলোকে আস্তা পাহাড় কেটে মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে ইটভাটা তৈরির কাজে ৷ আওয়ামীলীগের এক নেতার ‘এবিএম’ নামীয় ইটভাটায় গত ১৫দিন ধরে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে পাহাড়ের মাটি সংগ্রহ করা হলেও স্থানীয় জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও থানার পুলিশের রহস্যজনক নিস্ক্রিয়তায় অবাধে পাহাড় কাটা ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে৷
এতে পরিবেশ দ্রুত কলুষিত হয়ে পড়ছে বলেও স্থানীয়রা গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন৷ আজব হলেও সত্যি যে, ৯ অক্টোবর রবিবার সকালে রোয়াংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওমর আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ছাইংগ্যা এলাকার এবিমএম ইটভাটার জন্য পাহাড় কাটার দৃশ্যটি সরেজমিন তদন্তে গেলেও সেখানে নাকি পাহাড় কাটার কোন লক্ষণ তিনি দেখতে পাননি বলে এ আমাদের প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সাংবাদিককে জানিয়েছেন৷
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ইটভাটার মালিকের সংগে ওই ওসি’র গোপন বৈঠক হয়েছে জেলা শহরের পুলিশ ক্যান্টিন তাজিংডংয়ে৷
ছাইংগ্যায় অবৈধভাবে পাহাড় কেটে পরিবেশ ধংস করার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,থানার কাছে দফায় দফায় অভিযোগ জানানো সত্বেও পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসন থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত কোন উদ্যোগই গ্রহণ করা হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন৷ ইতমধ্যেই আস্তা পাহাড়ের অর্ধেকাংশ সাবাড় হয়ে গেছে৷ ফলে এলাকার সচেতন নাগরিকরা চরম ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছেন,তারা মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচি দিতেও এগুচ্ছেন৷
এতে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা৷
গুরুতর অভিযোগ উঠেছে,জেলা সদরের সাংগু নদীর পুর্বপাড়ে রোয়াংছড়ি উপজেলার ছাইংগ্যা এলাকায় মনিরুজ্জামান মিলনের মালিকানার এবিএম মার্ক করা ইটভাটা তৈরির জন্যে অনুমোদন ছাড়াই পাশের একটি পাহাড় কাটা হচ্ছে , একাজে ব্যভহার করা হচ্ছে স্কেভেতরসহ ভারী যন্ত্রপাতি৷ কর্তিত পাহাড়ের মাটি মজুদ করা হচ্ছে ইটভাটা প্রাংগনে,সেখানেই তৈরি করা হচ্ছে কাঁচা ইট৷ ইটভাটার মালিক পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ায় প্রশাসন বরাবরই নির্বিকার থাকছে, কোন আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন না খোদ জেলা প্রশাসকও৷ আওয়ামীলীগ নেতার প্রভাব খাটিয়ে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে ইটভাটায় মাটি ব্যবহারের কারণে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়লেও প্রশাসনসহ সরকারি কোন মহলই ওই ব্যক্তির বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অন্যরাও উত্সাহিত হচ্ছেন নানান অপকর্মের ক্ষেত্রে৷
অবৈধ পাহাড় কাটার ব্যাপারে যোগযোগ করা হলে ইটভাটার মালিক মিলন বলেন, পাহাড় কাটার মাটি দিয়ে ইট তৈরি হয় না, এ মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে নিচু এলাকা ভরাটের জন্যে৷ তিনি পাহাড় কাটার ঘটনাটি স্বীকার করেন৷
ছাইংগ্যা এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, জেলায় প্রশাসন বলতে কিছুই নেই বলে মনে হচ্ছে, কারণ প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা বন্ধের জন্য কোন উদ্যোগই নেই সরকারি কর্মকর্তাদের, এটি অসহনীয় ও অরাজক বিষয়ও বটে৷
এ প্রসংগে জেলা প্রশাসকের সংগে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অবৈধ পাহাড় কাটার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে৷