রবিবার ● ৯ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » জঙ্গি আস্তানা থেকে ১২ ঘন্টা পর রাতেই মা ও শিশু উদ্ধার
জঙ্গি আস্তানা থেকে ১২ ঘন্টা পর রাতেই মা ও শিশু উদ্ধার
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (২৪ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.২০মি.) গাজীপুরের পাতারটেকে জঙ্গি আস্তানা থেকে দীর্ঘ ১২ ঘন্টা পর ৮ অক্টোবর শনিবার রাতেই এক মা ও শিশুকে নিরাপদে উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ দোতলা ওই ভবনের নিচতলা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়৷
পুলিশ ও জঙ্গিদের মধ্যে গোলাগুলি এবং জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলার শব্দে তিন বছরের শিশুটি এখন আতঙ্কগ্রস্ত৷ সে তার মায়ের কোল থেকে নামতে চাইছে না৷
অভিযান শেষে শনিবার রাত নয়টার দিকে জঙ্গিদের লাশ হাসপাতালে পাঠানোর পর ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাট থেকে মা আয়েশা বেগম ও তার তিন বছরের মেয়ে নুরুন্নাহারকে উদ্ধার করা হয়৷ পরে মা ও মেয়েকে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেয় পুলিশ৷
এর আগে শনিবার সকাল ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুরের পাতারটেকের জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ৷ কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের শ্বাসরুদ্ধকর ১২ ঘন্টার অভিযান স্পট-৮ এ সাত জঙ্গি নিহত হয়৷
অভিযান শুরুর আগে আয়েশা বেগম তার মেয়েকে নিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলেন৷ পুলিশের ডাকাডাকি শুনতে পাননি বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান৷
আয়েশা বেগম জানান, তিনি গ্রামের বাড়িতে থাকেন৷ তার স্বামী সোবহান শেখ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন৷ নিচতলার পূর্বপাশের ফ্ল্যাটের একটি রুম দু’হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে তার স্বামী ও খালাতো ভাই থাকতেন৷ তিনি ওই বাড়িতে কয়েকদিন আগে বেড়াতে এসেছিলেন৷
আয়েশা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকাল ১১টার দিকে প্রথমে গোলাগুলির শব্দ পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠি৷ বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করলে দেখতে পাই, বাইরে থেকে দরজা লাগানো৷ এরপর আমি ফোনে আমার স্বামীকে বিষয়টি জানাই৷ তার কাছ থেকে শুনি যে, বাড়িতে জঙ্গি ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে৷ আমাকে চুপ করে ঘরের ভেতরে বসে থাকতে বললেন৷ আমাদের এক আত্মীয় আছেন পুলিশে, তাকেও আমার স্বামী বিষয়টি জানান৷’
‘অনেকক্ষণ গোলাগুলি বন্ধ ছিল৷ হঠাত্ সাড়ে তিনটার পর কিছুক্ষণ থেমে থেমে শব্দ হচ্ছিল৷ তখন মেয়েও কান্না করে৷ আমিও কান্না করি৷ দোয়া পড়তে থাকি৷ মনে হচ্ছিল, ভবনটি ভেঙে মাথায় পড়বে৷ সারাদিন রুমের এক কোণে গিয়ে বসেছিলাম৷ বারবার সবাইকে ফোনে জানিয়েছি৷ তবে তারা সবাই বলেছেন, চুপ করে থাকতে৷’ বলেন আয়েশা৷
‘সকাল থেকে মেয়ে এবং আমি কিছু খাইনি৷ চারটার পর জানতে পারি গোলাগুলি শেষ৷ তারপর রাত ৯টার দিকে পুলিশ আমাদের বের করে নিয়ে আসে৷’
জলাশয়ের পাশেই অবস্থিত দোতলা ভবনটির মালিক সৌদি প্রবাসী সোলায়মান সরকার৷ তার ভাই কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আরবি শিক্ষক ওসমান গণি বাড়িটির তত্বাবধায়ক৷ দুই ইউনিটের ভবনে মোট চারটি ফ্ল্যাট৷ প্রতিটি ফ্ল্যাটে তিনটি করে রুম৷ পরিবার ও ব্যাচেলর মিলিয়ে বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে৷ প্রতিটি ফ্ল্যাটের প্রতিটি রুমে আলাদা পরিবার ও ব্যাচেলররা থাকেন৷