শুক্রবার ● ১৪ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব “মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়েহ”
খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব “মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়েহ”
মো. মাঈন উদ্দিন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (২৯ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৫৯মি.) পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে রবিবার শুরু হতে যাচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব “মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়েহ” (প্রবারণা পূর্ণিমা)। ওয়াগ্যে পোয়েহ (প্রবারণা পূণিমা) উৎসব উৎযাপন কমিটির আহবায়ক ম্রাসাইথোয়াই মারমা এ তথ্য জানান।
আগামী ১৬ অক্টোবর রবিবার খাগড়াছড়ি য়ংড বৌদ্ধ বিহারে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজনের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব “মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে”। সকল বৌদ্ধ ধর্মাম্বলম্বীরা এ উৎসব পালন করে থাকে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মঙ্গল সূত্র পাঠ, সমবেত বুদ্ধ স্মান, ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদান, চেঙ্গী নদীতে প্রজ্জলন, আকাশ প্রদীপ উত্তোলন ইত্যাদি।
আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ তিন মাস বর্ষাবাসের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির শিক্ষা দিয়ে গেছেন। এটি বৌদ্ধদের মধ্যে আত্ম-সংযমের ধর্মীয় শিক্ষার দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথি থেকে আশ্বিণী পূর্ণিমার তিথির পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাসে ব্রত থাকেন বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ অসংখ্য নারী-পুরুষ। প্রবারণা পূর্ণিমার দিনেই সমাপ্তি ঘটে বর্ষাবাসের।
বুদ্ধ পূজা আর পঞ্চশীল প্রার্থনাসহ নানান পূজার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা। ফানুস উড়ানোর প্রস্তুতি, পিঠা তৈরীসহ ধর্মীয় নানান কর্মসূচি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালিত হয় প্রবারণা উৎসব। বৌদ্ধধর্মালম্বীরা চুলামণি জাদির উদ্দেশ্যে আকাশে উড়ায় শত শত ফানুস। তাই রঙ-বেরঙের ফানুসে ঢেকে যায় রাতের আকাশ। এই উৎসবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক রথটানা। আবার রথ টানার সময় তৈরী করা হয় রাহ্মসের প্রতীকী। যেখানে মানুষ ঢুকে রাক্ষসের বেশ ধারণ করে। এই প্রতিকীর উদ্দেশ্য অশুভ শক্তিকে বশ করে ধ্বংস করা।
যে সম্প্রদায় যে নামে পালন করুক না কেন, সবার লক্ষ্য একটাই- রাতের আকাশে চুলামনী জাদির উদ্দেশ্যে ফানুস উড়িয়ে, হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করে এবং রথ যাত্রা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তিকে বিনাস করে আগামীর দিন যেন সুখী সমৃদ্ধ হয়।