শুক্রবার ● ১৪ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » সিলেট-জকিগঞ্জ রাস্তাতো নয় যেন মরণফাঁদ
সিলেট-জকিগঞ্জ রাস্তাতো নয় যেন মরণফাঁদ
সিলেট জেলা প্রতিনিধি :: (২৯ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৪৫মি.) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে থাকা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের ৯১ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ভাঙ্গা, বিপদজনক ফাটল ও অসংখ্য গর্ত। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না হওয়া বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারনে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটখাট দুর্ঘটনা। ছোট বড় গর্তের কারণে যানবাহন চলাচল কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়া, পথিমধ্যে বিকল হওয়াসহ ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ভাঙ্গা রাস্তার কারনে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রীদের। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে আগামীতে যান চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন যাত্রীরা। তাই সড়কটি আশু সংস্কারের প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত সিলেটের জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, মৌলভীবাজারের বড়লেখাসহ বিভিন্ন উপজেলার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। তাছাড়া জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশনের মালবোঝাই ট্রাকও দেশের বিভিন্ন স্থানে আসা-যাওয়া করে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির পিচ উঠে স্থানে স্থানে খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। ১৭ সেপ্টেম্বর এ সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের দুই কন্যা শিশুসহ ৫ নিহত ও প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃষ্টিতে কাদাজল আর রোদে ধুলার রাজ্যে পরিণত হয় ভাঙাচুড়া এ সড়ক। বিশেষ করে শাহবাগ থেকে আটগ্রাম-কালীগঞ্জ-জকিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত অংশ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার ভাঙ্গা গর্তে পড়ে কোথাও না কোথাও গাড়ি গর্তে আটকা পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত করে। ভাঙ্গার রাস্তার কারনে রোগিদের জেলা সদরের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরী হওয়ায় পথিমধ্যে অনেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
বাসযাত্রীদের অভিযোগ, নিম্নমান সম্পন্ন নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহারের কারণেই এ সড়কটি ঘনঘন নষ্ট হয়। জেলার সবচেয় গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা। অন্যথায় রাস্তা সংস্কারের দাবীতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সাংবাদিক ওয়াহিদুর রানা বলেন, বর্তমানে এ সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বেহাল অবস্থার সড়কটিতে একাধিক প্রাণ যাওয়ার পরও সড়কটি সংস্কার হচ্ছে না। তিনি এ জন্য কর্তৃপক্ষের অবহেলা-উদাসীনতাকে দায়ী করেন। সওজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেও কোনো সদুত্তর পাচ্ছেন না।
এদিকে, বেহাল সড়কে যাত্রীদের পাশাপশি চালকরাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। যন্ত্রাংশ নষ্ট ও বিকল হয়ে যাওয়াতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন যানবাহন মালিকরা। সড়কটি সংস্কারের দাবিতে ২৬ জুলাই সিলেট সড়ক পরিবহন সমিতি পরিবহন ধর্মঘট পালন করলেও সড়ক সংস্কারের আশ্বাসের পর তারা প্রত্যাহার করেন। কিন্তু এখনও সড়কটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। সওজ সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী একেএম জাকারিয়া জানান, চারখাই থেকে বটেরতল পর্যন্ত পৌনে ১২ কিমি. সড়কের সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েছে। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সংস্কার কাজ আগামী ডিসেম্বরে শুরু হতে পারে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, এ সড়কটির যে অংশে ভাঙা সেটুকু সংস্কারের জন্য একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ফান্ড পাওয়া মাত্রই কাজ শুরু হবে।