শুক্রবার ● ১৪ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » রাজা ভূমিবলের মৃত্যুতে থাইল্যান্ডে একবছরের জাতীয় শোক ঘোষণা
রাজা ভূমিবলের মৃত্যুতে থাইল্যান্ডে একবছরের জাতীয় শোক ঘোষণা
অনলাইন ডেস্ক :: (২৯ অশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৯.১১মি.) থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল আদুলাদেজের মৃত্যুতে সারা দেশে শোক পালিত হচ্ছে।
বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সিংহাসনে থাকা শ্রদ্ধেয় এ রাজার মৃত্যুতে শুক্রবার জাতীয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বৃহস্পতিবার ৮৮ বছর বয়সে মারা যান।
বৃহস্পতিবার শেষ রাতেই শোকাহত মানুষ ব্যাংককের রাস্তায় জড়ো হন। আর আজ শুক্রবার শোক মিছিলে অংশ নিতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় সারিবদ্ধ হয়ে অবস্থান নিয়েছেন।
রাজার মরদেহ শুক্রবার বিকেলের দিকে নগরীর এমারল্যান্ড মন্দিরে নেয়া হবে। রাজার মৃত্যুতে আগামী এক বছর সরকারিভাবে শোক পালন করা হবে।
প্রিন্স মহাভাজিরালংকর্ন নতুন রাজা হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আকস্মিকভাবে তাকে রাজ সিংহাসনে বসার আনুষ্ঠানিকতা বিলম্ব করার অনুরোধ জানিয়েছেন সামরিক জান্তা নেতা। তিনি দেশবাসীকে এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া এবং কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্ত্রিসভা শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করেছে এবং আগামী ৩০ দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
সরকার এ সময় থাইবাসীকে ‘কালো পোশাক’ পরিধান করার এবং ‘আনন্দঘন অনুষ্ঠান’ এড়িয়ে চলারও নির্দেশ দিয়েছেন।
নিউজ ওয়েবসাইটগুলোর পৃষ্ঠা সাদা-কালো করা হয়েছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
ব্যাংককের জনৈক ব্যক্তি বলেন, এই মুহূর্তে তার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তিকে হারালাম। আমি মনে করি, তার জন্য অনেক কিছু করা হয়নি। আমার আরো কিছু করা উচিত ছিল।’
রাজার শোক মিছিলে অংশ নেয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষ ব্যাংককের রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। তার মরদেহে শুক্রবার সন্ধ্যায় সিরিরাজ হাসপাতাল থেকে গ্রান্ড প্যালেসে নেয়া হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ক্রাউন প্রিন্স রাজার মরদেহ ধৌতকরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন। মরদেহ প্রক্ষালন থাই বৌদ্ধদের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের একটি রীতি।
১৩ অক্টোবর বৃহসপতিবার ব্যাংককের সিরিরাজ হাপাতালে ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন তিনি।
সুদীর্ঘ ৭০ বছর তিনি রাজার ভুমিকায় অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং এটিই পৃথিবীতে রাজা হিসেবে সবচেয়ে বেশি সময়কাল ধরে রাষ্ট্র শাসনের ইতিহাস। ইতিহাসে হাতে গোনা যে কটি ভুখন্ড ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর শাসন মুক্ত ছিল তার মধ্যে থাইল্যান্ড অন্যতম। থাইল্যান্ড কে ঔপনিবেশিক রাহু হতে মুক্ত রাখার সবচেয়ে বড় কুশীলব ছিলেন থাই রাজ পরিবার। থাই রাজা ভুমিবলের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান পুরো থাইল্যান্ড ! সেই সাথে পরিসমাপ্তি হল ৭ দশকের সফল শাসনের উপাখ্যানের। রাজনৈতিক কিংবা সামরিক শক্তি, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার কাছেই তিনি ছিলেন পরম শ্রদ্ধা ও সকল আশা ভরসার কেন্দ্রবিন্দু।ক্রাউন প্রিন্স মহা ভাজিরালংকরন রাজার স্থলাভিসিক্ত হবেন। রাজার যোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে থাই জনগনের কাছে সবচেয়ে পছন্দের নামটি ছিল রাজকন্যা মহাচক্রি সিরিন্ধরন। কিন্তু মিলিটারি সমর্থিত সরকারের পছন্দ হিসেবে নতুন রাজা হিসেবে শপথ নেবেন ক্রাউন প্রিন্স মহা ভাজিরালংকরন !!
রাজা ভুমিবলের প্রয়ানে থাইল্যান্ড সরকার একবছরের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। আগামি এক বছর থাইল্যান্ড থাকবে উৎসবমুক্ত।
রাজা ভুমিবলের প্রয়ানে সিএইচটি মিডিয়া পরিবার গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।