সোমবার ● ১৭ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বরগুনায় অধ্যক্ষর পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব : ক্লাস বর্জন
বরগুনায় অধ্যক্ষর পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব : ক্লাস বর্জন
মুতাসিম বিল্লাহ , বরগুনা প্রতিনিধি :: (২ কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সকাল ১০.২২মি.) বরগুনার আমতলী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে রাতের আধারে তালা ভেঙ্গেঅধ্যক্ষের কক্ষ জবর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অভিযোগের প্রতিবাদে শিক্ষক কর্মচারীরা গতকাল রবিবার ১৬ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে ক্লাস বর্জনসহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩ ঘন্টা অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে।
আমতলী কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল আমতলী ডিগ্রী কলেজকে জাতীয়করণ করা হয়। কলেজ জাতীয়করণের পর ৩০ জুন বরিশালের সরকারি ফজলুল হক কলেজের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাসুদ রেজাকে সংযুক্ত অধ্যক্ষ হিসেবে আমতলী সরকারি কলেজে নিয়োগ দেয় হয়।নিয়োগের পর ১১ জুলাই তিনি আমতলী সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর সাবেক অধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমান বর্তমান অধ্যক্ষ মো. মাসুদ রেজার নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। আদালত গত ৬ সেপ্টম্বর শুনানি শেষে অধ্যক্ষ মো. মাসুদ রেজার নিয়োগ স্থগিত করে সরকারের প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।এর পরই শুরু হয় আমতলী সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব। এ দ্বন্ধের জের ধরে শিক্ষক কর্মচারীরা দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একপর্যায়ে অধ্যক্ষ মো. মাসুদ রেজা গত ২২ সেপ্টেম্বর ছুটি নিয়েবাড়ি যান। এসময় সহকারী অধ্যাপক আবুল হোসেন বিশ্বাসকে চলতি অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে যান। অধ্যক্ষ মো. মাসুদ রেজা ছুটিতে থাকা অবস্থায় গত ১৩ অক্টোবর তাকে রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে বদলী করা হয়।বদলীর এ খবর পেয়ে সাবেক অধ্যক্ষ মো: মজিবুর রহমান শনিবার গভীর রাতে বহিরাগত লোকজন নিয়ে অধ্যক্ষেরজন্য নির্ধারিত ১১২ নং কক্ষের তালা ভেঙ্গে জবর দখল করেন।
গতকাল সকালে চলতি দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন বিশ্বাস কলেজে এসে দেখেন অধ্যক্ষের কক্ষ দখল হয়ে গেছে। সাধারণ শিক্ষকরা এধরনের দখলের প্রতিবাদ করেন এবং সকাল ১০টা থেকে সকল ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়ে কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেন।এসময় বক্তব্য রাখেন চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত অধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন বিশ্বাস, গজী আব্দুল মান্নান ওমো: হোসেন আলী প্রমুখ। বক্তারা অবিলম্বে জবর দখলকারী মজিবুর রহমানের অপসারন দাবী করেন। শিক্ষকদেরঅবস্থান ধর্মঘট চলাকালে কোন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি।একাদশ শ্রেণির শিক্ষর্থী সুমি আক্তার বলেন , স্যারেরা ধর্মঘটে থাকায় কোন ক্লাস হয়নি। দ্বাদশ শ্রেণীর আরেক শিক্ষর্থী সাব্বির আহম্মেদ বলেন, সকাল থেকেই স্যারদের গন্ডগোলে আমাদের কোন ক্লাস হয়নি।চলতি দায়িত্বে নিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন বিশ্বাস বলেন, একজন শিক্ষক হয়ে রাতের আধারে চর দখলের মত কক্ষ দখল করতে হবে এটা মেনে নেওয়া যায়না তাই সকল শিক্ষক কর্মচারীরা আজ রাস্তায় নেমে এসেছে। যতক্ষন পর্যন্ত মজিবুর রহমান অপসারন না হবেন ততক্ষন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।সাবেক অধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমি এই কলেজের অধ্যক্ষ কারন সংযুক্ত অধ্যক্ষ হিসেবে মো. মাসুদ রেজাকে নিয়োগ দিয়েছে তখন আমাকেতো অধ্যক্ষ পদ থেকে বাতিল করেনি।
যেহেতু মাসুদ রেজাকে অন্যত্র বদলী করা হয়েছে, তখন আমিই এই কলেজের বৈধ অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষ মো. মাসুদ রেজা বলেন, আমাকে বদলী করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমি এখনও আমতলী কলেজের দায়িত্বে রয়েছি ।
অফিসিয়াল কাগজপত্র আমি এখনো কাউকে বুঝিয়ে দেইনি। তারপরও বর্তমানে চলতি দায়িত্বে রয়েছেন আবুল হোসেন বিশ্বাস, সেখানে সাবেক অধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমান কি করে রাতের আধারে অধ্যক্ষের কক্ষ দখল করে নেন এটা আমার বোধগম্য নয়।