সোমবার ● ২৪ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » মাটিরাঙ্গায় কোয়েল চাষে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার পথ দেখালো ছবুর
মাটিরাঙ্গায় কোয়েল চাষে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার পথ দেখালো ছবুর
অন্তর মাহমুদ, মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: (৯কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৪৮মি.) কোয়েল কম বেশি সকলের কাছে একটি পরিচিত পাখির নাম৷
যা জাপানে সর্ব প্রথম ব্যবসায়িকভাবে শুরু হয়ে বর্তমানে তা বাংলাদেশেও বিসত্মৃতি লাভ করেছে৷ তারই ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় এমএম জাহাঙ্গীর আলম শখের বসে সামান্য কিছু কোয়েল পোষেছেন বিগত প্রায় বছর দু’য়েক ধরে৷
পরে কোয়েল পাখির বংশ বৃদ্ধির পরিমাণ বাড়তে থাকলে পাখিগুলো এলাকার ভাগিনা ছবুর হোসেন আকাশকে উপহার হিসেবে দিয়ে দেন। তিনি এলাকার মামার কাছ থেকে পাওয়া উপহারের কোয়েল পাখিগুলোর সাথে আরও নতুন কিছু কোয়েল পাখি কিনে ব্যবসায়িক ভাবে কোয়েল পালনের উদ্যেগ নেন মাটিরাঙ্গা চৌধুরী পাড়ার ছবুর৷
সরেজমিনে খামার পরিদর্শনে গেলে ছবুর জানায়, ৫০টি পুরুষ কোয়েল পাখি ও ১৫০টি স্ত্রী কোয়েল পাখি নিয়ে সে প্রথম তার খামারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম কোয়েল পাখি পালন শুরু করেন ৷
বর্তমানে তার খামারে কোয়েল পাখির সংখ্যা প্রায় হাজারধিক ৷ প্রতিদিন এই কোয়েল পাখিগুলো গড়ে প্রায় ৭ থেকে ৮ শতাধিক ডিম দেয়৷ যা খুচরা ৪ থেকে ৫ টাকা ধরে বিক্রি করে ছবুর ৷ এতে কোয়েলের খাবারের টাকা বাদ দিয়ে প্রতি দিন ছবুরের আয় হয় প্রায় ২ হাজার টাকা ৷
নতুন করে কেউ যদি ব্যবসায়িক ভাবে কোয়েল পাখির খামার করতে চায় তাদের প্রতি ছবুরের পরামর্শ হচ্ছে : কোয়েল একটি লাভজনক পোল্ট্রি উপাদান৷ কোয়েল পালন করার জন্য অতিরিক্ত কোন খরচ হয়না৷ বাড়ির যে কোন কোণে বা আঙিনায় অথবা বাড়ির ছাদ ইত্যাদি জায়গাতেও কোয়েল পাখি পালন করা যায়৷ একটি মুরগি পালনের জায়গাতে ১০টি কোয়েল পালন করা যায়৷ বিষেজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের জন্য উপযোগি৷ বর্তমানে দেশের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে কোয়েলের মাংস বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে ৷
এ সময় কোয়েল পালন কালে চিকিত্সাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে আমার মামা এমএম জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে পরামর্শ নেন বলেও জানান৷
কোয়েল পালনের বিভিন্ন সুবিধা সমূহ : কোয়েল পালন করলে অসুবিধার চেয়ে সুবিধার পরিমাণ বেশি৷
১. ভাল জাতের কোয়েল বছরে ২৮০ থেকে ৩০০টি ডিম দিয়ে থাকে এবং এরা এক টানা ১৪ মাস ডিম পাড়তে পারে।
২.অত্যন্ত কম পুজি নিয়ে কোয়েলের খামার তৈরি করা যায়৷
৩. কোয়েলের আকার ক্ষুদ্র বলে এদের লালন পালনের জন্য বিস্তৃত জায়গার প্রয়োজন হয়না৷ পুর্ণ বয়স্ক মুরগির জায়গাতেই কমপক্ষে ১০টি কোয়েল পালন করা যায়৷
৪. রোগ ব্যাধির দিকে থেকে কোয়েল খুবই লাভজনক বিনিয়োগ৷ কারণ কোয়েলের রোগ ব্যাধি প্রায় হয না বললেই চলে ৷
৫. সাধারণত ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ বয়সে সেই একটি কোয়েল ডিম দেয়া শুরু করে৷ এদের ডিম খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর৷
এ ছাড়াও ১০০ টি পাখি পালনের খরচ ১টি ১৫-২০ দিনের বাচ্চার দাম ৩০-৩৫ টাকা (বড় বাচ্চার মৃত্যুর হার কম)৷ একটি খাচায় ২৪ ফুট নেট দরকার ৷ ৩ফুট উচ্চতার নেটের দাম ১০০-১২০ টাকা প্রতি ফুট ৷ খাবারের দাম প্রতি কেজি ৪২-৪৫ টাকা ৷ মাসিক খাবার লাগে ৫৫-৬০ কেজি ৷ খাবার চালার জন্যে চাটাই ব্যাবহার করা যায় এবং উপরে পালিথিন দিলেই চলবে ৷
সর্তকতা : খাঁচাতে যেন ইদুর, ছুচো না ঢুকতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে ছোট ফাঁকের নেট ব্যাবহার করতে হবে৷