মঙ্গলবার ● ২৫ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে জুম্ম নারীদের ওপর প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলা
রাঙামাটিতে জুম্ম নারীদের ওপর প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলা
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (১০ কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৪০মি.) ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কল্পনা চাকমা অপহরণ ঘটনায় দেওয়া তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রত্যাখান করে পুনঃ তদন্তের দাবিতে প্রসিত খীসা’র পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাটেড পিপলস ডেমোক্রটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত চারটি নারী সংগঠনের অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষের জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু’র পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পক্ষের আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) সমর্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মীরা।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন এবং অপহরণ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু করে ইউপিডিএফ সমর্থিত চার নারী সংগঠন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ,ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি,সাজেক নারী সমাজ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
সমাবেশে প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চল থেকে শতাধিক জুম্মনারী অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশের শেষ পর্যায়ে অতর্কিত ভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহযোগী সংগঠন যুব সমিতি ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কয়েকজন নেতা কর্মী এসে জুম্ম নারীদের ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড কেড়ে নিয়ে ভেংগে ফেলে এবং সমাবেশে অংশ গ্রহনকারী নারীদের ধাওয়া করে। এ সময় জুম্মনারীদের কর্মসূচিস্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দেয় যুব সমিতি ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা ও কর্মীরা । আকস্মিক এ ঘটনায় হতবিহ্বল জুম্মনারীরা দৌড়ে ঘটনাস্থান ত্যাগ করেন।
ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এবিষয়ে রাঙামাটি কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রশিদ সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি,সাজেক নারী সমাজ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন নামের কোন নারী সংগঠন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নেয়নি।
এছাড়া কোতয়ালী থানার ওসি আরো বলেন, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ইউপিডিএফ সমর্থিত নারী সংগঠনের কর্মসূচিতে পিসিজেএসএস এর কিছু লোকজন হামলা করেছে, আমি শুনার সাথে সাথে ঐ স্থানে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছি এবং আমি নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই নারী সংগঠনের নেতাকর্মী ও পিসিজেএসএস এর লোকজন সরে গেছে।
এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় কোন অভিযোগ করেনি।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)’র কেন্দ্রীয় সভাপতি বাচ্ছু চাকমা, সাধারন সম্পাদক জুয়েল চাকমা,টুয়েন চাকমা ও মৈন্টি চাকমার নেতৃত্বে আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে জুম্ম নারীদের ওপর হামলা করেছে।
তিনি বলেন, জুম্ম নারীদের ওপর হামলার মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছে, তারাই কল্পনা চাকমা অপহরণ ঘটনার বিচার চায় না বরং এরা শাসক গোষ্ঠীর সাথে হাত মিলিয়েছে।
নিরূপা চাকমা জুম্ম নারীদের ওপর এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বলেন, “তারা কিভাবে বসয়স্ক মায়ের সমান নারীদের হেনস্থা করতে পারে ? এটা কি ধরনের মানসিকতা ? নারীদের গায়ে হাত দেয়ার অধিকার এদের কে দিয়ে ? এটা জুম্মনারীদের প্রতি মানবাধিকার লঙ্গন। যে কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন ও আন্দোলন - সমাবেশ করা আমাদের সাংবিধানিক নৈতিক অধিকার।”
এ বিষয়ে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রিন্টু চাকমা জানান, এসব নারীরা আমাদের সাথে কোনও ধরনের আলোচনা না করে রাঙামাটিতে এধরনের কর্মীসূচি পালন করতে এসেছে। তাই তো আমরা বাধ্য হয়েছি এধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি,সাজেক নারী সমাজ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন সংগঠন সমুহের সুনির্দিষ্ট দাবী হচ্ছে;
১. চিহ্নিত অপহরণকারী লেঃ ফেরদৌস গংকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান।
২. অপহৃত কল্পনা চাকমাকে উদ্ধার করা ।
৩. প্রশাসন কর্তৃক দায়ের করা চুড়ান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান ও মামলার পুনঃতদন্ত।