মঙ্গলবার ● ১ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » পাবনা » বর্ষিয়ান নেতা আব্দুর রহিম পাকন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী
বর্ষিয়ান নেতা আব্দুর রহিম পাকন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী
পাবনা প্রতিনিধি :: বর্তমান পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ও আজীবন আওয়ামী রাজনীতির ধারক বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী৷
এ বারে যারা এ পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের মধ্যে পাকন অন্যতম৷ এই বর্ষিয়ান নেতা আপন আলোয় উদ্ভাসিত৷ তার রাজনৈতিক জীবন ঘটনাবহুল৷
আ স ম আব্দুর রহিম পাকন ১৯৫৩ সালের ৯ নভেম্বর পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় পাথরঘাটায় সম্বান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন৷ বিদেশের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনকারী তত্কালীন ভারতের কলকাতায় নিযুক্ত ডেপুটি হাইকমিশনার এম হোসেন আলী তার চাচা৷ ১৯৬৭ সাল থেকে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে ঘনিষ্টভাবে জড়িয়ে পড়েন৷ ছাত্রজীবন থেকেই তিনি পাবনাতে ভুট্টা আন্দোলন, ১৯৬৮-৬৯ সালে ৬ আওয়ামীলীগের ৬ দফা, ছাত্রলীগের ১১ দফা ভিত্তিক গন আন্দোলন ও জাতির জনক বঙ্গব্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রতিবাদের আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন৷
১৯৭০ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন৷ ১৯৭১সালের ২৭ মার্চ তারিখে পাবনা শহরকে পাক হানাদার মুক্ত করার প্রত্যয়ে তিনি অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন ৷ ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ পাবনা শহরকে তারা প্রায় ১২ দিন পাক হানাদার মুক্ত রাখেন এবং পরবর্তীতে নগরবাড়ী ঘাটে পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নেন৷
এরপর তিনি তার মামা ও গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম নির্বাচিত এমসিএ মরহুম আব্দুস সালাম ও দুই সহোদর এ কে এম শরীফুল ইসলাম ও আ ন ম মেছবাহুর রহমান রোজকে নিয়ে ভারতে গমন করেন৷ আপন তিন ভাই ভারতের দেরাদুনে উচ্চতর সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহন করে আবার পাবনায় ফিরে এসে পাবনার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন৷ স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তিনি বঙ্গবন্ধুর আহবানে অস্ত্র জমা দিয়ে দেশ ও দলকে সুসংগঠিত করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন৷
১৯৭০-৭২ সালে তিনি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক, ১৯৭২-৭৩ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১৯৭৩-৭৫ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন৷
১৯৭৫ সালে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ নিতে তিনি বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পরামর্শে ভারতে গমন করেন৷ দেশে ফিরে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় ১৯৭৭ সালে সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন৷ প্রায় আড়াই মাস তিনি সামরিক জান্তার হাতে অমানুষিক নির্যাতনেরও শিকার হন এবং প্রায় আড়াই বছর বিনা বিচারে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক থাকেন৷
১৯৮১ সালে তিনি অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনাতে গমন করেন৷ ১৯৮৩ সালে তিনি আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা’তে চাকুরী লাভ করেন৷ সেখানে তিনি চাকুরীর পাশাপাশি প্রবাসীদের নিয়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন৷ উক্ত সংস্থায় চাকুরী করার সুবাদে তিনি বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিবসহ সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তাদের ভিয়েনায় রাষ্ট্রীয় সফরকালীন সময়ে সার্বিক সহযোগীতা করেন৷ চাকুরীকালীন সময়ে দীর্ঘ ২৫ বছর তিনি আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা ভিয়েনার কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ১২ বছর বার্ষিক অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন৷
চাকুরীকালীন অবস্থায় তার মেধা ও কর্মদক্ষতায় ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তিসংস্থা কর্তৃক ” মেরিট এওয়ার্ড ” আনবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক কর্তৃক ২০১২ সালে “টিম এওয়ার্ড” পদক প্রাপ্ত হন৷
২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করে৷ সংশ্লিষ্ট সংস্থায় কর্মরত থাকায় তিনিও উক্ত নোবেল পুরস্কারের একজন গর্বিত অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি পান৷
তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর চাকুরী শেষে ২০১৩ সালে অবসর নিয়ে মাতৃভুমিতে ফিরে আসেন এবং পাবনা জেলা আওয়ামীলীগে সম্মানিত উপদেষ্টা পদে অধিষ্ঠ হন৷
তিনি বাংলা, ইংরেজী এবং জার্মান ভাষাতে পারদর্শী৷
আ স ম আব্দুর রহিম পাকন বলেন, তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচিত হলে সুদীর্ঘ চাকুরী জীবন ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভূক্ত প্রকল্প পাবনাস্থ রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেদ্রসহ পাবনার উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন৷
এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া এবং বর্তমান শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করবেন৷