বুধবার ● ২ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » পুলিশ থানায় এনে চোখ বেঁধে বাঁশকল দিয়ে নির্যাতন চালানো অভিযোগ
পুলিশ থানায় এনে চোখ বেঁধে বাঁশকল দিয়ে নির্যাতন চালানো অভিযোগ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১৮ কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বেলা ১.০১মি.) ঝিনাইদহে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহাঙ্গীর আলমকে (২৩) বিনা অপরাধে থানা হাজতে ২২ ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতন, ঘুষ আদায়ে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম ঝিনাইদহ প্রতিনিধির কাছে এ অভিযোগ করেন ওই ছাত্রের বাবা মিরাজুল হক৷ তিনি জানান, গত ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে তার ছেলেকে আটক করে কালীগঞ্জ থানার এএসআই তৌহিদুর রহমান৷ পরে থানায় এনে তার চোখ বেঁধে বাঁশকল দিয়ে নির্যাতন চালায়৷
মিরাজুল হক অভিযোগ করে আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি পেশায় একজন হকার৷ অনেক কষ্টে ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছি৷ বর্তমানে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ বিষয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র৷ সম্প্রতি সে বাড়িতে বেড়াতে আসে৷ সেখান থেকে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে ২৮ অক্টোবর রাতে কোনও কারণ ছাড়াই তাকে থানায় ধরে নিয়ে যান দারোগা তৌহিদ৷
পরে থানায় গেলে জানতে পারি, এলাকার প্রভাবশালী এক ব্যক্তির মেয়ে অপর এক ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশ তাকে আটক করেছে৷ যে মেয়েটির ঘটনায় তাকে আটক করা হয় সেই ঘটনার সঙ্গে আমার ছেলে আদৌও জড়িত নয়৷’
তিনি আরো বলেন, ২২ ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতনের পর পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না পেয়ে পরদিন রাত ১০টার দিকে পরিবারের কাছে হসত্মানত্মর করে৷
হকার মিরাজ আরও অভিযোগ করে বলেন, ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে তার কাছ থেকে এএসআই তৌহিদ মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়েছেন৷ বর্তমানে তিনি ছেলেকে ডাক্তার দেখিয়ে চিকিত্সা করাচ্ছেন৷ এ ঘটনায় তিনি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), এআইজি সিকিউরিটি সেল, ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ খুলনাসহ ঊর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান৷
তবে অভিযুক্ত এএসআই তৌহিদুর রহমান প্রথমে ওই ছেলেটিকে আটকের কথাটি অস্বীকার করেন৷ পরে সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম ঝিনাইদহ প্রতিনিধিকে জানান, একটি মেয়ের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছিল৷
ঘটনার সঙ্গে তার বউ জড়িত৷ এজন্য তাকে আটক করা হয়৷ তবে তাকে কোনও নির্যাতন করা হয়নি৷ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷
নির্যাতনের শিকার জাহাঙ্গীর আলম সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম ঝিনাইদহ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘বিনা অপরাধে পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে৷ এলাকার এক মেয়ের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশ আমাকে আটক করে বলে তুই যদি বিষয়টি স্বীকার না করিস তাহলে তোকে ক্রসফায়ারে দিব৷’
তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি নিরাপরাধ৷ অথচ পুলিশ আমাকে থানায় আটকে রেখে নির্যাতন করেছে৷’