বুধবার ● ২ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » গৃহবধূ রুমাকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার মিথ্যা, মুল রহস্য একাধিক পরকীয়া
গৃহবধূ রুমাকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার মিথ্যা, মুল রহস্য একাধিক পরকীয়া
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১৮ কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৫২মি.) ঝিনাইদহ শহরের পল্লী বিদ্যুত্ অফিস এলাকার রাউতাইল গ্রামে রুমা খাতুন নামে গৃহবধূকে মারধর করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ৪ জনকে পুলিশ আটক করেছে সত্য, কিন্তু কাহিনী মিথ্যা, মুল রহস্য গৃহবধু রুমার একাধিক যুবকের সাথে পরকীয়া৷
সরেজমিনে গৃহবধু রুমার স্বামীর বাড়ি ঝিনাইদহ সদরের পল্লী বিদ্যুত্ অফিস এলাকার রাউতাইল গ্রামে গিয়ে, গ্রামবাসী সুত্রে জানা গেছে, আনুমানিক ৮ বছর আগে সদর উপজেলার ধোপাবিলা গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে রুমা খাতুনের বিয়ে হয় রাউতাইল গ্রামের মোজাম হোসেনের ছেলে ফিরোজ হোসেনের সাথে৷
সহজ সরল,ন্যাকা বোকা মানুষ ফিরোজ কৃষিকাজ করে৷ এ রকম সহজ সরল মানুষ পেয়ে হাতছাড়া করেননি গৃহবধু রুমা৷ বিয়ের পরপরই গৃহবধুর সাইনবোর্ড গায়ে লাগিয়ে শহুরে রুমা একাধিক বন্ধুদের সাথে রাত-দিন যাপন করতে থাকে৷
ফিরোজ হোসেনের প্রথম স্ত্রী নাজমা খাতুন নি:সন্তান হওয়ার কারনে ফিরোজের পরিবার দেখে শুনে রুমার সাথে বিয়ে দেই৷ ৭/৮ বছরের দাম্পত্য জিবনে রুমার দুইটি মেয়ে হয়েছে ঠিকই, কিন্তুু সংসারে সর্বদা আগুন জ্বলতে থাকে৷
কৃষকের ঘরে বিয়ে হওয়াতে রম্নমা দিনদিন উগ্রহয়ে উঠতে থাকে৷ সে তার মেজবোন রিনার সহযোগিতায় বিভিন্ন যুবকের সাথে পরকীয়া চালিয়ে আসছে৷ এমনকি মেজবোন রিনার বাড়িতে প্রতি মাসে ৩/৪ দিন পরকিয়ার পার্টিও চলে৷ আবার পরকিয়া পার্টিতে টাকা পয়সার লেনদেনও চলে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
আবার আনুমানিক ১ বছর পূর্বে ঝিনাইদহ সদরের জামতলা বানিয়াকান্দর এলাকায় দুই প্রেমিক সহ রুমা টাইটফিট জিন্সের প্যান্ট ও গেঞ্জি পরে মটর সাইকেল যোগে রওয়ানা হলে পথিমধ্যে গরুর সাথে মটর বাইকের ধাক্কা লেগে গরুটি মারা গেলে রুমার দুই প্রেমিককে পনের হাজার টাকা জরিমানাও গুনতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় রেজাউল করিমের স্ত্রী কহিনুর বেগম ও জোস্না খাতুন৷
অপরদিকে, প্রায়ই রুমা তার বড় মেয়ে অহনাকে মারধোর করে শ্বশুর বাড়ির পরিবারের তোয়াক্কা না করে বন্ধুদের সাথে মার্কেট, পার্ক সহ বিভিন্ন স্থানে রাত কাটায় বলে জানিয়েছেন অহনা৷
এ ব্যাপারে রুমার শ্বশুরের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, লোক লজ্জার ভয়ে আমরা রুমাকে কিছুই বলতে পারিনা৷ বললে রুমা তার মস্তান বন্ধুদের নিয়ে আমার বাসায় উগ্রমেজাজে গালি গালাজ করতে থাকে৷ পুর্বে বেশ কয়েকবার রুমা তার মস্তান বন্ধুদের নিয়ে আমার বাসায় এসে ফিরোজকে মারধোর করে অনেক হুমকি ধামকি দিয়েছে৷ এজন্যে আমরা মানসম্মানের ভয়ে পরিবারের সবাইই রুমার সবকিছু মেনে নিয়েছি৷
গ্রামবাসী রুমা ও আমাদের নিয়ে সমালোচনা করতে থাকে৷ আবার তালাক দিলে দুটি কণ্যা সন্তানকে কে দেখবে৷ অবশ্য দুটি সন্তান জন্মের পরথেকেই ফিরোজের প্রথম স্ত্রী নাজমা খাতুনের তত্বাবধনে মানুষ হয়েছে৷
রাউতাইল গ্রামের তৈয়ব হোসেনের স্ত্রী চায়না খাতুন, সুমন আহাম্মেদের স্ত্রী শাহানাজ বেগম, মসলেম উদ্দিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম, মিজানুর রহমানের স্ত্রী আমেনা খাতুন, কহিনুর খাতুনের স্বামী রেজাউল ইসলাম, রবিউল ইসলাম পিতা অহেদ আলী মন্ডল, রিজাউল ইসলাম পিতা অমেদ আলী ও ঝিনাইদহে ওজোপাডিকো কর্মচারী পাড়া প্রতিবেশি সোহেল সাংবাদিকদের বলেন, রুমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি স্বামী ফিরোজ সহজ সরল ভিতু মাটির মানুষ৷ তারা কখনোই রুমার সাথে ঝগড়া ফ্যাসাদ মারধোর করে না৷ এই সহজ সরল অবস্থার সুযোগ নিয়ে রুমা শহরের মাস্তান প্রকৃতির একাধিক যুবকের সাথে পরকীয়া করে বেড়ায়৷
এক কথায় ফিরোজের সাথে বিয়ের পুর্ব থেকেই রুমার চরিত্র খারাপ, পরকীয়া করায় তার নেশা৷ বিয়ের পরবর্তিতেও তার সেই নেশা বিদ্যমান৷
এদিকে ঘটনার দিন রুমার এক প্রেমিক ঝিনাইদহের হলিধানী বাজারের জামাল হোসেনের ছেলে সোয়েব পারভেজ সোনামিয়া ঝিনাইদহের নগরবাথান বাজারের ফিরোজ কসমেটিক্স চাকরীরত অবস্থায় রম্নমাকে ট্যাব ও এনড্রুয়েড মোবাইল ফোন কিনে দেয়৷
সংসারের কাজকর্ম বন্ধ করে রুমা অধিকাংশ সময় তার নিজের ঘরের দরজা বন্ধকরে বড় মেয়ে অহনাকে (৭) বাহিরে বেরকরে দিয়ে সে ঘন্টার পর ঘন্টা সোনা মিয়া সহ বিভিন্ন ছেলের সাথে মোবাইলে কথা বলে, বলে সাংবাদিককে জানিয়েছেন রুমার বড় মেয়ে অহনা৷
পরে মঙ্গলবার সকালে রুমা সংসারের কাজ কর্ম ফেলে রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা সোনা মিয়া সহ বিভিন্ন ছেলের সাথে মোবাইলে কথা বলে৷ এ সময় ফিরোজ রুমার ট্যাব ও এনড্রুয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে আটকে রাখে৷
পরে রুমা ক্ষিপ্ত হয়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে মেজবোন রিনার বাড়িতে গিয়ে মাথায় কেরোসিন তেল ঢেলে জামা কাপড় ছিড়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা নামক নাটক তৈরি করে৷ যা পরে রুমার বোন সাংবাদিকদের ডেকে এনে তাদের সামনে উপস্থাপনা করে৷ এ বিষয়ে রুমার সাথে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও যোগাযোগে করা যায়নি৷
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ থানা পুলিশ মঙ্গলবার ১ নভেম্বর বিকেলে তাদের আটক করে৷ আটককৃতরা হলেন, গৃহবধূ রুমার স্বামী ফিরোজ হোসেন, সতীন নাজমা খাতুন, শাশুড়ি মনোয়ারা খাতুন ও এক প্রতিবেশী নারী৷
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে জানান, ঘটনাটি শোনার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়৷
অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে৷ পরবর্তীতে আটকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওসি জানান৷