বৃহস্পতিবার ● ৩ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাক এখন ভিক্ষুক ! এ লজ্জা কার ?
মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাক এখন ভিক্ষুক ! এ লজ্জা কার ?
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১৯ কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৩৪মি.) ১৯৭১ থেকে ২০১৬৷ স্বাধীনতা অর্জনের ৪৫ বছর পার করেছে বাংলাদেশ৷ সেদিনকার সাড়ে ৭ কোটি বাঙ্গালী এখন ১৭ কোটি ছুই ছুই৷ উন্নয়ন আর উত্পাদনে বদলে গেছে বাংলাদেশ৷ সব কিছুতে আধুনিকতার ছাপ৷ কিন্তু পাল্টায়নি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাকের ভাগ্য৷ বাংলা জয় করা এই মুক্তিযোদ্ধা অর্ধহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন৷
বয়সের ভারে কাজ করতে না পারায় তার পেশা এখন ভিক্ষা৷ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি না পাওয়ায় ভাগ্যে জোটেনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা৷ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ী মাগুরা সদর উপজেলা নিজনান্দুয়ালি গ্রামে৷ তিনি যুদ্ধ করেছেন শৈলকুপা অঞ্চলে৷ জীবীকার তাগিদে ভিক্ষা করেন ঝিনাইদহের বিভিন্ন গ্রামে৷ সমপ্রতি ভিক্ষা করতে দেখা গেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর বাজারে৷
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ভারতের বনগাঁ কাঠাল বাগান এলাকায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন৷ প্রশিক্ষণ শেষে শৈলকুপা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রহমত আলী মন্টুর নেতৃত্বে শৈলকুপার আলফাপুর, কুমিরাদহ, আবাইপুর, এ বাগনী এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন৷ তার সামনে অনেক সহযোদ্ধান মৃত্যু দেখেছেন৷ দেখেছেন অনেক রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা সাজতে৷
অথচ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৫ বছর পুর্তি হলেও আজও তার স্বীকৃতি মেলেনি৷ তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তার পরিচয় পত্র দিয়েছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী৷ শৈলকুপা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রহমত আলী তার সনদপত্র দিয়েছেন৷ মাগুরা জেলা মুক্তিযোদ্ধাদের ১২৫ নং তালিকায় তার নাম থাকলেও স্বীকৃতি পাননি তিনি৷
সরকারী সহযোগিতার জন্য তিনি বার বিভিন্ন মহলে ধর্ণা দিলেও তার কথায় কর্ণপাত করেনি কেউ৷ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা তো দূরের কথা, বয়স্ক ভাতাও জোটেনি তার কঁপালে৷ অসুস্থ্য আব্দুর রাজ্জাক একদিন ভিক্ষায় বের হতে না পারলে অভুক্তই থাকতে হয় সারাদিন৷ চিকিত্সার অভাবে প্রায়ই রাসত্মার পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে৷
রাজ্জাক সম্পর্কে শৈলকুপা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রহমত আলী মন্টু সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, আব্দুর রাজ্জাক আমার নেতৃত্বে বেশ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন৷ তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত তার স্বীকৃতি মেলেনি৷ আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ী পার্শবর্তী জেলায় হওয়ার কারণে আমি তার জন্য কিছুই করতে পারছি না৷
এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নবুয়াত হোসেন মোল্লা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, আব্দুর রাজ্জাককে সেভাবে আমি চিনি না৷ তিনি হয়তো অন্য এলাকায় যুদ্ধ করেছেন৷ মাগুরা সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড হয়তো তার বিষয়ে জানতে পারেন৷