শুক্রবার ● ৪ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » সেই পুলিশের এএসআই তৌহিদুর রহমান ঢাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনে ক্ষমা চাইলেন
সেই পুলিশের এএসআই তৌহিদুর রহমান ঢাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনে ক্ষমা চাইলেন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (২০ কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.২১মি.) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিনা অপরাধে থানা হাজতে ২২ ঘন্টা আটকে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের ছাত্র জাহাঙ্গীর আলমের ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশের এক এএসআই তৌহিদুর রহমান৷
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়,সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকমসহ বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল, ফেসবুকে ঝড়ের বেগে এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর জেলা ব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়৷
পরিস্থিতি সামাল দিতে ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের ওই কর্মকর্তা জাহাঙ্গীরের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷
এছাড়া ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে তার বাবার কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত দেন তৌহিদ৷ তবে পুলিশের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি৷
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত এএসআই তৌহিদুর গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করেন৷ ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রথমে জাহাঙ্গীর ও তার পরিবারকে ভয়ভীতিও দেখানো হয়৷ কিন্তু ওই ছাত্রের পরিবার শক্ত অবস্থানে থাকার কারণে পরে তেমন কোনও সুবিধা করতে না পেরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধরণা দিয়ে ঘুষের টাকা ফেরত দিয়ে বিষয়টির সমাধান করেন৷
এ ব্যাপারে ঢাবি শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বাবা হকার মিরাজুল ইসলাম সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, ‘খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দারোগা বিভিন্ন স্থানে দেন দরবার শুরু করে৷ অবশেষে ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে এমপি আনার সাহেবের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান হয়৷ দারোগা আমার ছেলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছে এবং ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছে৷ এজন্য আমি অনলাইন মিডিয়া ও এমপি সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞ ও সন্তুষ্ট৷’
ঘটনার ব্যাপারে ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজীম আনার সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া একটি মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য তাকে পুলিশ আটক করেছিল৷ হয়ত সামান্য মারপিট করেছে এবং মেয়েটিও উদ্ধার হয়েছে৷ উভয় পক্ষকে এক জায়গায় করে বিষয়টির সমাধান করে দিয়েছি৷’
উল্লেখ্য স্থানীয় প্রভাবশালী এক পরিবারের একটি মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করেন থানার এএসআই তৌহিদুর রহমান৷
পরে থানায় এনে হাত-পা ও চোঁখ বেধে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়৷ দেয়া হয় বাঁশকল৷
এ সময় দারোগা বলে, ‘তুই ঘটনার সাথে জড়িত, যদি বিষয়টি স্বীকার না করিস তাহলে তোকে ক্রসফায়ারে দেবো’ বলে ভয়ও দেখায়৷
অথচ যে ঘটনায় তাকে আটক করা হয় সে ঘটনার সাথে সে আদৌও জাড়িত ছিল না বলে পরিবারের দাবি৷ পরে ঢাবি’র ছাত্র জাহাঙ্গীর আলমের পিতা হকার মিরাজুলের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ২২ ঘন্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়৷
জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ বিষয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ও কালীগঞ্জ উপজেলার কলেজপাড়ার হকার মিরাজুলের ছেলে৷