সোমবার ● ৭ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » কেমন চলছে গাঁদা ফুলের হাট
কেমন চলছে গাঁদা ফুলের হাট
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: জনপ্রিয় এই গানটির মত যদি কোন অষ্টাদশী কন্যা বায়না ধরে বসে তবে তার মান ভাঙাতে গাঁদা ফুলের সন্ধানে চলে আসতে পারেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা হাইস্কুল মাঠে৷ এখানে সারা বছর বিকাল বেলা গাঁদা ফুলের বিশাল পাইকারির হাট বসে৷
মাঠজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ফুলের ঝোপা দেখে দূর থেকে মনে হয় সবুজ মাঠে যেন কোন মহামান্যকে সংবর্ধনা দেবার জন্য হলুদ গালিচা বিছানো হয়েছে৷ কালীগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফুল চাষীরা বালিয়াডাঙ্গা স্কুল মাঠে ফুল বিক্রি করতে আসে৷ প্রতিদিন বসা এই ফুল হাটে ২/৩ লাখ টাকার ফুল ক্রয় বিক্রয় হয়৷ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা হাট থেকে ফুল কিনে ঢাকা ও চট্রগ্রামে এ ফুল সরবরাহ করেন৷
প্রায় ১০ বছর আগে শুরু হওয়া বালিয়াডাঙ্গা ফুলের হাট এখন বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে৷ বর্তমানে এই ফুল হাটে প্রতিদিন প্রায় ২/৩ লক্ষ টাকার ফুল ক্রয়-বিক্রয় হয়৷ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চাষীদের হাটে আনা ফুল ক্রয় করে ঢাকা ও চট্রগ্রামে বিক্রয় করেন৷
কালীগঞ্জ উপজেলার তিল্লা গ্রামের ফুল চাষী অধীর বিশ্বাস জানান, তার ২ বিঘা জমিতে ফুল আছে৷ তিনি এক দিন অন্তর একদিন ২০/২৫ ঝোপা ফুল হাটে নিয়ে আসেন৷ তিনি বানিজ্যিক ভিত্তিতে এ ফুলের চাষ করেছেন৷
একই গ্রামের সুরুজ মিয়া জানান, তার প্রায় ৪ বিঘা জমিতে ফুল চাষ রয়েছে৷ তিনিও প্রতিদিন ২০/২৫ ঝোপা ফুল বিক্রি করেন৷ এর পরই তার সংসার ভালো ভাবে চলছে৷ ফুল হাটে কোন চাঁদাবাজী হয় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ফুল চাষীরা জানান, নিজেদের এলাকায় হাট হওয়াতে এখানে কেউ এ ধরনের সাহস পায়না৷
ফুল ব্যবসায়ী শওকত মির্জা ও মন্টু জানান, বালিয়াডাঙ্গার এই ফুল হাটে ত্রিলোচনপুর, তিল্লা, দাদপুর, ঘিঘাটি, বালিয়াডাঙ্গা, কালূকালী, দুলাল মুন্দিয়া, শিশের কুড় থেকে ফুল চাষীরা ফুল বিক্রি করতে আসে৷ তারা জানান, ন্যার্য মূল্য পাওয়ায় চাষীরা ফুল বিক্রয় করতে এখানেই আসে৷
ব্যবসায়ী শওকত মির্জা বলেন, ফুলের স্বাভাবিক দর ঝোপা প্রতি ৮০/৯০ টাকা থাকে৷তবে বছরের দু’এক মাস ফুলের দাম ঝোপা প্রতি ৫’শ টাকাও হয়৷ ট্রেনে কাটা পড়ে পা হারানো আব্দুর রাজ্জাক মন্টু জানান, নিজ গ্রামে ফুলের হাট হওয়ায় এখন আর আগের মতো পরিশ্রস করতে হয় না তাকে৷
বর্তমানে ফুলের ব্যবসা করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করছেন৷ এখন আর নিজেকে আগের মতো অসহায় মনে হয় না বলে জানান তিনি৷এক সময়ে রাজ্জাকের সংসারে ছিল অনেক অভাব, কিন্তু গত ক,বছর ধরে ফুলের চাষ করে তার সংসারের অবস্থা অনেক স্বচ্ছল৷
ফুল চাষীরা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে আরো জানান, এলাকায় ফুলের হাট হওয়ায় অনেক বেকার যুবক এখন ফুল চাষ ও ফুলের ব্যবসা শুরু করেছে৷ তারা আশা করেন ফুলের হাটটি স্থায়ী ভাবে থাকলে এই অঞ্চলের বেকার যুবকেরা ফুলচাষ ও ফুল ব্যবসায় নেমে বেকারত্ব ঘুচিয়ে স্বাভাবিক ও স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপনের সুযোগ পাবে৷এলাকার অধিকাংশ মানুষ গত কয়েক বছর ধরে অন্য ফসলের চাষ বাদ রেখে তারা অধিক লাভের আশায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে ফুলের চাষ করে থাকে৷