সোমবার ● ১৪ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ব্যাপক সাড়া পড়েছে সুবল লতা ধানে
ব্যাপক সাড়া পড়েছে সুবল লতা ধানে
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (৩০ কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.২০মি.) ঝিনাইদহে উদ্ভাবনকৃত সুবললতা ধান কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে৷ এবার আউশ মৌসুমে এ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে৷ কৃষক এখন এ ধানের মাড়াইকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন৷ উত্পাদন সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধান আফ্রিকা থেকে আনা নেরিকা জাতের ধানকেও টপকে গেছে৷
কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের আহসাননগর গ্রামে কৃষক সুবল বিশ্বাস ২০০৬ সালের দিকে এ ধান উদ্ভাবন করেন৷ ওই বছর তিনি তার জমিতে কাজললতা ধান চাষ করেন৷ এ ধানের মধ্যে ১টি ধানের শীষ খুবই পুষ্টিকর হয়৷ সেই ধান থেকে ২০০ গ্রাম ধান সংগ্রহ করেন৷ পরে ওই ধান বোরো মৌসুমে ১ শতক জমিতে চাষ করে ১ মণ বীজ উত্পাদন করেন৷
এরপর গ্রামের ১৪-১৫ জন কৃষকের মধ্যে ধান বিতরণ করেন৷ শুরু হয় বিপ্লব৷ বিঘাপ্রতি জমিতে ৩০ থেকে ৩২ মণের কাছাকাছি ধান পাওয়া যায়৷ ঝড় ও দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষমতা রয়েছে এ ধানের৷ এর উচ্চতা ৮৫-৯০ সেন্টিমিটার, গাছ শক্ত হয়, চিটা হয় কম৷ এ ধান চাষে উত্পাদন খরচও একেবারে কম৷ আয়ুষ্কাল ১২০ দিন৷
বর্তমানে ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর, মাগুরা, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, বগুড়া, বরিশালসহ প্রায় ২০টি জেলায় এ ধান চাষ হচ্ছে৷ এমনকি পাশের দেশ ভারতের কৃষকও বীজ নিয়ে এ ধানের চাষ করছেন৷
এলাকার কৃষক অভাবনীয় সাফল্যের কারণে কৃষক সুবলের নাম দিয়ে এ ধানের নাম রাখেন ‘সুবললতা’৷ তবে এ ধান ব্যাপকভাবে চাষ হলেও ধান উদ্ভাবনের বিষয় মানুষের অজানা রয়ে গেছে৷ সেই সঙ্গে অনেক কৃষক চাইছেন, এ ধান যেন রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পায়৷
সুবললতা ধান উদ্ভাবনকারী কৃষক সুবল বিশ্বাস জানান, ইরি, বোরো, আউশ এ তিনটি মৌসুমে এ ধানের বাম্পার ফলন হয়৷ অন্যান্য ধানের তুলনায় সার, কীটনাশক কম লাগে৷ ফলনের দিক থেকে লাভ হয় বেশি৷ এ ধানের চালও চিকন, ভাত খেতেও খুব সুস্বাদু৷
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ কর্মকর্তা ড. খান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘একটা ভালো ধানের জাত বের করতে হলে বিভিন্ন রকম বৈজ্ঞানিক কর্মপন্থা অবলম্বন করতে হয়৷
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষক সুবল বিশ্বাস এ ধানটি আবিষ্কার করেছেন৷ তাই আমাদের সিট বোর্ড এ ধানের জাতটা আত্মপ্রকাশ করলে দেশের কৃষক অত্যন্ত লাভবান হবেন বলে আমি মনে করি৷’