বুধবার ● ১৬ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের ঘরেঘরে এখন নবান্ন উত্সব
আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের ঘরেঘরে এখন নবান্ন উত্সব
গাবতলী প্রতিনিধি :: (২ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৫৫মি.) বগুড়া জেলা’সহ গাবতলী উপজেলায় পুরোদমে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা-মাড়াই৷ ফলন ভাল হওয়ায় খুশি কৃষক পরিবার৷ ফলে কৃষকের ঘরে চলছে নবান্ন উত্সব৷
জানাযায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন’সহ পৌরসভা এলাকায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ১৬হাজার ৪শ ৫০হেক্টর জমিতে৷ অর্জিত হয়েছে ১৬হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে৷ যার উত্পাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৬৫হাজার ৫শ মেট্রিক টন চাল৷ এছাড়াও এবছরে আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ৪শত হেক্টর জমিতে৷ যার উত্পাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১হাজার ৬শত মেট্রিক টন চাল৷ ইতিমধ্যে অর্জিত হয়েছে ৩শ ৩০হেক্টর জমিতে৷ এর মধ্যে হাইব্রীড ২শ হেক্টর ও উপসী ১শ ৩০হেক্টর৷ তবে উপসী জাত ধান কর্তন করে দেখাগেছে প্রতি হেক্টর চালে ৩.৫মেট্রিক টন৷ যা গতবছরের চেয়ে প্রায় ১শত হেক্টর বেশি জমিতে আউশ ধান চাষ করা হয়েছে৷ তবে বেশীর ভাগ কৃষক মাঠে ব্রি-ধান ৪৯ আমন ধানের চাষ করেছে৷ ফলে উপজেলার গ্রামাঞ্চলে আমন ধান সংগ্রহে কৃষক-কৃষানিরা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন৷ দিনমজুর সংকটসহ মূল্যেবৃদ্ধি পেলেও কৃষক পরিবারগুলো এখন দম ফেলানোর সময় নেই৷ কৃষকের আঙ্গিনা জুড়ে এখন মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত৷ নবান্ন উত্সবে মেতে উঠেছে কৃষক পরিবার৷ সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখাগেছে, কৃষকরা এখন আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যসত্ম হয়ে উঠেছেন৷ কাগইল কৈঢোপ গ্রামের কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এবছরে পরিবেশ অনূকুল ও ধান ক্ষেতে পোকা মাকড়ের আক্রমন কম থাকায় আমন ধানের ভাল ফলন হয়েছে৷ কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমন ধান চাষ ও উত্পাদন বেড়েছে৷ ধানগাছ পোকা থেকে রক্ষা করতে পাচিং ও আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে কোন কীটনাশক ছাড়াই পোকা দমন করা সম্ভব হয়েছে৷ রামেশ্বরপুর শুভপাড়া গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, প্রতি বিঘায় ১৮থেকে ২২মন ধান পেয়েছি৷ এখন ধানের ন্যায্যমূল্যে পেলে আমরা খুশি৷ তাই তারা আমন ধানের ন্যায্য মূল্যে নিশ্চিত করতে সংশিস্নষ্ট কৃষি অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন৷ সোনারায় আটবাড়ীয়া বামুনিয়া গ্রামের কৃষক দুলু শাহ ও আব্দুল হান্নান জানান, আমন ধান কর্তন শেষে জমিতে শীতকালিন সবজি মুলা, ভূষ্টা ও আলু ফসল চাষ করা যাবে৷ গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার জানান, কৃষি বিভাগের পৰ থেকে সার্বক্ষনিক পরামর্শের ফলে এবছরে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে৷ উত্পাদন লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে যাবে৷ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, উপজেলা জুড়ে কৃষকরা আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরম্ন করেছে৷ এবছরে ধানের ভাল ফলন হয়েছে৷ ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে৷ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহেদুর রহমান জাহিদ, জাহাঙ্গীর আলম, ডিএস তনশ্রী, রিভা রানী, আক্তার জাহান ও জান্নাতুন মহল তুলি জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় আমরা সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি৷ ফলে গাবতলীতে আমন ধানের ভাল ফলন হয়েছে৷ এখন কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উত্সব৷ উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরৰণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার জানান, কৃষক মাঠ স্কুল ও কৃষকদের নিয়ে আমন ধান চাষ বিষয়ক উঠান বৈঠক’সহ কৃষি প্রশিৰণ কর্মশালা করা হয়েছে৷ ফলে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে৷