শনিবার ● ১৯ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » সিলেট চা-বাগান হাসপাতালে ভুয়া ডাক্তার
সিলেট চা-বাগান হাসপাতালে ভুয়া ডাক্তার
সিলেট প্রতিনিধি :: (৫ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বেলা ১.১০মি.) বাংলাদেশের প্রথম চা-বাগান সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মালনীছড়া চা বাগান হাসপাতালের দায়িত্বে রয়েছেন একজন কথিত ডাক্তার নামীয় ভুয়া ডাক্তার।
একটি বেসরকারী নিউজ চ্যানেলের (সময় সংবাদ) অনুসন্ধানে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মহসিন তারেক গাজি নামের ব্যক্তিটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রী নিয়েছেন দাবি করলেও সিলেটের বিএমএ’র সভাপতি বলছেন, দেশে এ নামে কোনো ডাক্তারের বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নেই। তবে মহসিন তারেক গাজি নামের ভুয়া ডাক্তার বিভিন্ন সময় তার প্যাডে বিএমডিসি’র বিভিন্ন ব্যক্তির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা পেশা।
তার ব্যাপারে অনুসন্ধানে গেলে সিলেট জেলা সিভিল সার্জন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি। জাতীয় পরিচয় পত্রে তার নাম মহসিন তারেক। তবে,চিকিৎসা কাজে তিনি ব্যবহার করেন ডা. মহসিন তারেক গাজি এই নাম। তিনি জালিয়াতির দায়ে পলাতক আসামী শিল্পপতি রাগিব আলীর মালিকানাধীন মালনীছড়া চা-বাগান হাসপাতালের ডাক্তার। তার দাবি, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে বিএমডিসি’র ৬০৯৯৬ রেজিস্ট্রেশন নিয়ে ১২ বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা পেশা।
কিন্তু অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে প্রেসক্রিপশনে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করছেন ।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নূর মিয়া নামের এক চা-শ্রমিকের ডেথ সার্টিফিকেটে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করেছেন ৬০৬৯৬, যা সিরাজগঞ্জের ডা. সৌমিক কুমার বসাকের, আরেক প্রেসক্রিপশনে কুমিল্লার ডাক্তার জিনিয়া আফরিন মুন্নির ৫৩১৫৩ রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করেছেন, আর তার দাবিকৃত ৬০৯৯৬ নম্বরটি মানিকগঞ্জের ডাক্তার মো. আসাদুজ্জামানের নামে রয়েছে।
এছাড়া ৬০৬৯৯৬ নম্বরটির বিএমডিসি’র ওয়েবসাইটে কোন অস্তিত্বই নেই। সিলেট বিএমএ সভাপতি ডা. রুকন উদ্দিন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, মহসিন তারেক নামে তাদের কোন ডাক্তার নেই। আর শহর থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে একটি হাসপাতালে ভুয়া ডাক্তার কাজ করার বিষয়টি ও জানেন না সিভিল সার্জন ড. হাবিবুর রহমান।
এই কথিত ডাক্তারের সেবা নিতে হাসপাতালে চা-শ্রমিক নারী, শিশু, বৃদ্ধাদের এমন লম্বা লাইন। তবে তাদের অভিযোগ, তার দেয়া ওষুধ খেলে কোন কাজই হয়না।
জানা গেছে ২০১৪ সালে মহসিন গাজিকে ভুয়া ডাক্তারির অভিযোগে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে আটকের পর মোবাইল কোর্ট সাজা দেয়। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তারেক ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে প্রতারণা করে চাকরি নিয়েছে নাকি বাগানের মালিক রাগীব আলী নিজেই ভুয়া ডাক্তার দিয়ে ১০ হাজার শ্রমিকের চিকিৎসা করাচ্ছেন?
বিষয়টি খুঁজে বের করে অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবী জানান শ্রমিকরা। এছাড়া এ ঘটনায় পুরো সিলেট জূড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। দরিদ্র চা শ্রমিক দের সাথে এমন অন্যায় আচরনের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন সিলেটের সর্বস্থরের জনতা।