শনিবার ● ১৯ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » ইউপিডিএফ এর সহযোগিতায় বার্মাছড়ি থেকে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার কাঠ পাচার হচ্ছে
ইউপিডিএফ এর সহযোগিতায় বার্মাছড়ি থেকে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার কাঠ পাচার হচ্ছে
কাউখালী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি :: (৫ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৩০মি.) রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার ফটিকছড়ি ইউনিয়নের বার্মাছড়ি এলাকা থেকে প্রতিদিন দিনে এবং রাতে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার কাঠ পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে সেই সাথে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
জানা যায়, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ২নং ফটিকছড়ি ইউনিয়ন হলো কাঠের বাগান সমৃদ্ধ এলাকা। যেখানে রয়েছে সেগুন, কড়াই, লালী,গর্জন গামারী ইত্যাদি এর মতো দামী কাঠের বিশাল বাগান।
এখানকার স্থানীয় লোকজনের অনেক কষ্টের বিনিময়ে করা এই বাগান হতে এবং সরকারের রিজার্ভ ফরেষ্ট হতে বেশ কিছু স্থানীয় এবং বহিরাগত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিদিন এসব বাগান হতে কাঠ কেটে স্থানীয় বিট এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলকে পোষমানিয়ে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ পাচার করে বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
এই সংঘবদ্ধ চক্রটি হয়ে উঠছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। দিয়ে বেরাচ্ছেন এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপের অস্ত্রের মহড়া। এসব সন্ত্রাসী গ্রুপের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
সুত্র জানায়,বার্মাছড়ি এলাকার বেশির ভাগ কাঠ বৃন্দাবন ও ৩নং চাবাগান এলাকা, ডলুরমূখ, ফটিকছড়ি খাল, বার্মাছড়ি খাল, সর্ত্তা খাল দিয়ে প্রতি শনিবার ও বৃহস্পতিবার বাজারের দিনে কমপক্ষে হলেও ৫ হাজার বর্ঘফুট সেগুন,গামারী, কড়াই,লালী, গর্জন ইত্যাদি কাঠ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার হয়। গহিরার কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস ও ক্ষিরাম বন বিভাগের বিটের ক্যাশিয়ার মো. খালেদ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, প্রতি বর্ঘফুট সেগুনকাঠ হতে ৬০ টাকা করে একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলকে, ক্ষিরাম বনবিটকে প্রতি বর্ঘফুট ৫০ টাকা, ক্ষিরাম একটি স্কুলকে প্রতি বর্ঘফুট ৫০টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। তারপর এখান থেকে প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবারে এসব কাঠগুলি ব্যাবসায়ীরা নিয়ে যান।
এদিকে বার্মাছড়ি ক্ষিরাম এলাকার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রিটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ক্যাশিয়ার বিপিন চাকমা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন,এখানে গহিরা, নানুপুরের কাঠ ব্যাবসায়ীরা প্রতি বাজারে এসে কাঠ কিনে স্থানীয় বনবিটসহ কিছু প্রতিষ্ঠানকে ও আমাদেরকে সম্মানীর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ নিয়ে যান।
এছাড়া ক্ষিরাম বাজারের পাশে ও বাজারের দক্ষিণ পাশে পশ্চিম পাশে রয়েছে সরকারের বন বিভাগের রিজার্ভ ফরেষ্টের প্রায় ৭শত একর রিজার্ভ ফরেষ্ট।
এ প্রসংগে ক্ষিরাম বন বিটের বিট অফিসার অসিম বাবু আমাদের সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বললে, আমি কর্মস্থলে নতুন যোগদান করেছি কিন্তু আমি এসব ব্যাপারে কিছুই জানিনা। তা ছাড়া খালে আমি প্রায়ই থাকি। আমি কোন কিছুই বলতে পারবোনা।
একটি সুত্র সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানায়, বার্মাছড়ি এলাকার বেশিরভাগ বাগান ব্যাক্তি মালিকানা হলেও কিন্তু এসব বাগানের সেগুন গাছ সরকারী অনুমতি ছাড়াই বেশ কিছু গ্রুপ তাদের মন গড়া বাগান হতে কেটে নিয়ে বার্মাছড়ির বিভিন্ন রাস্তা, খাল বা ছড়া দিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপকে চাঁদা দিয়ে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দির্ঘ দিন যাবৎ পাচার করে চলছেন।
ফলে এসব অবৈধ কাঠ পাচারের ফলে দির্ঘদিন যাবৎ লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে।
অচিরেই যদি এসব এলাকা হতে অবৈধ কাঠ পাচার বন্ধ করা না যায় তাহলে ব্যাক্তিগত এবং রিজার্ভ ফরেস্ট হারিয়ে যাবে বলে অনেকের ধারণা।
এলাকা হতে যাতে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে কোন কাঠ পাচার যাতে না হয় সে দিকে স্থানীয় প্রশাসন,বন বিভাগ ও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বার্মাছড়িসহ আশে পাশের সাধারন লোকজন ও সচেতন মহল।