রবিবার ● ২০ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » কৃষি » সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে ঢাকায় ইউপিডিএফ এর সংবাদ সম্মেলন
সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে ঢাকায় ইউপিডিএফ এর সংবাদ সম্মেলন
ঢাকা প্রতিনিধি :: (৬ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : সন্ধ্যা ৭.০৬মি.) পার্বত্য জনগণের ন্যুনতম নাগরিক অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে প্রতিবাদের আগামী ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় বিজয় দিবসের কর্মসূচী বর্জনের ডাক দিলো ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)। রবিবার সকালে ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটি হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ডাক দেয়া হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ভাষা-ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জাতিসত্তা-সম্প্রদায়ের ওপর অব্যাহত ধরপাকড়, আক্রমণ বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ-উপসনালয় ধ্বংস-ভূমি বেদখল এবং দমন-পীড়নের প্রতিবাদে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ‘আমরা উচিত কথাও বলতে পারছি না। সরকার আমাদেরকে দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে কিনা সেটাই আমাদের প্রশ্ন জাগে। দেশে ‘পঞ্চদশ সংশোধনী আইন’ করার ফলে আমাদের জাতিসত্তার স্বীকৃতি কেড়ে নেয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘অপারেশন উত্তরণ’ জারি রয়েছে, ফলে সেনাবাহিনীর খবরদারি রয়েছে আগের মতোই।
এ অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক দমনমূলক বিতর্কিত ‘১১দফা নির্দেশনা’ জারি কার্যত পার্বত্য চট্টগ্রামে ফৌজী শাসনকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। আমরা এখন রাস্তায় নামতেও পারি না। অন্যায়ভাবে ধরে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। পুলিশ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে দিচ্ছে’।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ইউপিডিএফ তার অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীকে সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের তথ্য প্রদান করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘গত ১৩ নভেম্বর খাগড়াছড়ি পৌর এলাকার সন্নিকটে পেরাছড়া হাইস্কুলের পাশের একটি খোলা জায়গা থেকে ইউপিডিএফ (ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য ও খাগড়াছড়ি ইউনিট-এরপ্রধান সংগঠক উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমাসহ ৬ জনইউপিডিএফ নেতা-কর্মীকে ওয়ারেন্ট ছাড়া আটক করা হয়েছে।
আটক অবস্থায় তাদের সাথে অশোভন ব্যবহার করে, অকথ্য শারীরিক নির্যাতন চালায়, হাতে অস্ত্র গুঁজে দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করার আগে অত্যন্ত অসম্মানজনকভাবে ছবি ওঠায়। লোকসমাজে তাদের হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে সে ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়, পত্রিকায় ছাপানোর বন্দোবস্ত করে’।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এতদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে দমন-পীড়ন চলছে, যৌক্তিক নিয়মে তা পার্বত্য চট্টগ্রাম গণ্ডি পেরিয়ে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগর-হবিগঞ্জের মাধবপুর-মনতলা; সুনামগঞ্জের ছাতক বাজার; মৌলভীবাজারের কমলপুর, রাজশাহীদিনাজপুর গাইবান্ধায় সম্প্রসারিত হয়েছে। এর বাইরেও রামু-কক্সবাজারসহ আরো বহু ঘটনা ঘটেছে, এগুলো সাম্প্রতিক বলে বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ইউপিডিএফ নেতা উজ্জ্বল স্মৃতিসহ অন্যায়ভাবে বন্দী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে মৌলিক নাগরিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি হিসেবে কাল ব্যাজ ধারণ; মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, প্রতীকী অনশন, অফিস আদালত বর্জন, ১৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বর্জন ও স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউপিডিএফ ঢাকা ইউনিটের সংগঠক মাইকেল চাকমা।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, ইউপিডিএফএর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রিপন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বিপুল চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মন্টি চাকমা।