বুধবার ● ২৩ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » লাখে ১০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে জমি অধিগ্রহন
লাখে ১০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে জমি অধিগ্রহন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুফাডাঙ্গা মৌজায় গ্রীড স্টেশনের জন্য জমি অধিগ্রহনে লাখে ১০ হাজার টাকা ঘুষ প্রদানে উদ্বুদ্ধ করেছিলো একরামুল হক নান্টু নামের এক ব্যক্তি। তিনি চুটিলিয়া গ্রামের মৃত সদর উদ্দীনের ছেলে। তার মাধ্যমেই এলাকার কৃষকরা অফিসে ঘুষ প্রদান করেন বলে অভিযোগ। ঘুষের টাকা কোন কৃষক দিতে রাজি না হলে নান্টু তাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো।
কৃষকদের অভিযোগ নান্টুর মাধ্যমে টাকা প্রদানের কথা স্বীকার করার পর অধিগ্রহনের জন্য শুনানী করা হতো। এখন প্রশ্ন উঠেছে কে এই নান্টু ? কৃষকদের জমির টাকা কেন তিনি মাধ্যম হয়ে অফিসে দিয়েছেন ? কি তার স্বর্থ ? বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা নান্টু দালালের বিচার দাবী করেছেন।
চুটলিয়া গ্রামের কৃষক ওহিদুল ইসলাম মন্ডল অভিযোগ করেন, নান্টুর কথা মতো তারা অফিসে ঘুষ দিয়েছেন। ঘুষের টাকা প্রতিবেশি আব্দুলের কাছ থেকে ধার নিয়েছেন এমন কথাও স্বীকার করেছেন ওহিদুল। যদিও তিনি জেলা প্রশাসনের অফিসে এ নিয়ে আয়োজিত শুনানীতে বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তবে একটি মানবাধিকার বিষয়ক তদন্ত দলের কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে। সেখানে চুটলিয়ার ওহিদুল ও কুলফাডাঙ্গার খুদিরাম এবং মতিয়ার রহমান তাদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কৃষকদের অভিযোগ চুটলিয়ার একরামুল হক নান্টু দালাল সেজে তাদেরকে ক্ষতি করেছেন। রাস্তার পাশে তাদের লাখ টাকা শতক দেওয়ার কথা বলে প্রলোভন দেখিয়েছেন।
এছাড়া জমিতে কচু ক্ষেত না থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে নিচু জমিতে কচু ক্ষেত দেখিয়ে সরকারী টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। কুলফোডাঙ্গা গ্রামের কৃষক কাশিনাথ বিশ্বাস বলেন, তিনি ও তার ভাই কনক চন্দ্রের কাছ থেকে ২৬ শতক জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে। তিনি জানান, টাকা তুলতে অফিসে নান্টু দালালের মাধ্যমে কিছু টাকা দিলেও আমি তা বলতে চাচ্ছি না। কারণ আমার কাছে ঘুষের টাকা লেনদেনের কোন প্রমান নেই। তাছাড়া আমি হিন্দু মানুষ। কোন ঝামেলায় জড়াতে চায় না।
কাশিনাথ জানান, আমার কোন নগদ টাকা ছিল না। আমি নান্টুর কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে ঘুষ দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে একরামুল হক নান্টু জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। যারা ঘুষের টাকা অফিসে দিতে পারছিলো না, তাদের আমি টাকা হাওলাদ দিয়ে সহায়তা করেছি। আমি টাকা সুদে দিয়েছি, সুদ আর আসল তো নেবই। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, আমি নয়, অধিগ্রহন অফিসের কানুনগো সিরাজুল ইসলাম কৃষকদের কাছ থেকে এক লাখে ১০ হাজার টাকা নিয়েছে।
উল্লেখ্য এ নিয়ে সরকারের দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে নামে-বেনামে অভিযোগ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ও প্রেসক্লাবেও লিখিত অভিযোগের কপি দেওয়া হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরে ঘুষ গ্রহনের বিষয়ে একটি তদন্তও হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে কেও কেও তাদের কাছ থেকে টাকা নেবার বিষয়টি লিখিত আকারে জানিয়েছে।