বুধবার ● ৩০ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » পাহাড়ের মানুষের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করবেন না : ওবায়দুল কাদের
পাহাড়ের মানুষের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করবেন না : ওবায়দুল কাদের
সুগত চাকমা, ষ্টাফ রিপোর্টার :: (১৬ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.২১মি.) বাংলাদেশ সরকারের সড়ক ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পাহাড়ে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার স্বার্থে পাহাড়ের মানুষের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করবেন না, এক শ্রেণীর লোক পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মধ্যে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করে।
তিনি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শান্তি যদি চান তবে অবৈধ অস্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পার্বত্য শান্তি চুক্তির বিষয়ে ধর্য্য ধরার আহবান জানিয়ে বলেন, শান্তি চুক্তি অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন হবে।
৩০ নভেম্বর বুধবার সকালে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গনে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ’র সংবর্ধনা ও কর্মীসভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে সারা বাংলাদেশ তথা পার্বত্য অঞ্চলের সাধারন মানুষের আপন কেউ নেই, পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা, বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক সবই আওয়ামীলীগ সরকারের আবদান। এখন প্রত্যন্ত উপজেলা বাঘাইছড়ি থেকে বসে যুক্তরাষ্ট্রে কথা বলা যায়, ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল পানির বিল ইত্যাদি পরিশোধ করা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগে পার্বত্য অঞ্চলে কেউ এই উন্নয়ন করেননি।
পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় সুন্দর ও সম্প্রীতির সংস্কৃতি বিকাশ ও ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে রাঙামাটিতে উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট এর কাজ আমরাই আওয়ামীলীগ সরকার শুরু করেছিলাম। পার্বত্য অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে ১৮টি ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে, ৪৩টি ব্রিজের কাজ চলছে, আগামী বছর নানিয়ারচরে ব্রিজের কাজের উদ্ভোধন করা হবে।
রাঙামাটি -মানিকছড়ি- মহালছড়ি সড়কও ভালো নেই বলে তিনি বলেন, মন্ত্রী এলে সড়কে পট্টি লাগায় আমি জানি।
তিনি প্রকৌশলীদের কাজের মান উন্নয়নের পরামর্শ দেন। রাঙামাটি- চট্টগ্রাম ও রাঙামাটি-মানিকছড়ি-মহালছড়ি সড়কের কাজ আগামী জানুয়ারীতে শুরু হবে বলে আশ্বস্থ করেন। রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ বিষয়ে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন কাজে যেন কেউ বাধা সৃষ্টি না করেন। মেডিকেল কলেজ এগিয়ে নিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বাধা সৃষ্টি না করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, সকল দলের ছেলেমেয়েরা রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করে।
মন্ত্রী পার্টির নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণকে ধোকা দেওয়ার ফল ভালো নয়, গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিরীহ মানুষদের খবর নিতে হবে। রাঙামাটি শহরে বিলবোর্ড কম থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী এবং রাঙামাটি শহরে যে সব স্থানে বিলবোর্ড রয়েছে সেগুলি খুলে ফেলাও পরামর্শ দেন।
এসময় মন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি নিজেরাই নিজেদের শত্রু, তারা শুধু নালিশ করতে জানে। বিএনপি’কে নালিশ পার্টি হিসেবেও আখ্যা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, চেঙ্গী শঙ্খ নদীর মত বিএনপি শুকিয়ে গেছে ।
সংবর্ধনা ও কর্মীসভায় ৩৩৩ ম-৩৩ রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, কাউখালী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অংসুসাইন চৌধুরী, বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এসময় রাঙামাটি জেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা, নিখিল কুমার চাকমা, বর্তমান রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য হাজী মো. কামাল উদ্দিন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী সোলাইমান চৌধুরী,রাঙামাটি পৌরসভা মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী,কৃষকলীগ,তাতীলীগ, মৎসজিবীলীগ,সেচ্ছাসেবকলীগ, জেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, মহিলা লীগসহ আওয়ামীলীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শতশত সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা ও কর্মীসভা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য হাজী মো. মুছা মাতব্বর।