বুধবার ● ৩০ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » আলীকদমে মাছের আকাল : মাতামুহুরী নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার
আলীকদমে মাছের আকাল : মাতামুহুরী নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার
হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: (১৬ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৫৮মি.) আলীকদমে মাতামুহুরী নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছে করছে অতি লোভি একটি মৎস্য শিকারী মহল। ৩০ নভেম্বর বুধবার সকালে মাতামুহুরী নদীতে মাছ ধরার এমন দৃশ্য দেকা যায়। বিষ প্রয়োগের ফলে নদীর শ্রোতে বোয়াল, রুই, কাতলা চিংড়ি সহ বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মরে ভেসে উঠেছে। এলাকার শত শত লোক মশারী জাল নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বড়-ছোট বিভিন্ন আকারের চিংড়ি এবং বিভিন্ন জাতের রেনু মাছই মারা যাচ্ছে।
এভাবে কীটনাশক প্রয়োগের ফলে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মাছের খাবার নষ্ট হয়ে যায় এবং মাছের বংশ বিস্তার বাধাগ্রস্থ হয়। আলীকদম উপজেলার বুক চিরে দক্ষিন-পূর্ব থেকে উত্তর-পশ্চিমে বয়ে যাওয়া মাতামুহুরী নদীই এই এলাকার মাছের সবচেয়ে বড় উৎস্য। পরিবেশ ধ্বংসকারী মাছ শিকারীদের এমন আগ্রাসনের ফলে কয়েক বছর যাবত এই মাতামুহুরী নদী মাছ শুন্য হয়ে পড়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে এই নদীর প্রাকৃতিক বৈচিত্র। যার এলাকায় মাছের সংকটও দেখা দিয়েছে ব্যপক আকারে।
ঘটনা স্থল থেকেই আলীকদম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজাকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানালে তিনি বিষয়টা ততটা গুরুত্ব দেননি।
তিনি সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন সুনির্দিষ্টভাবে যদি জানা না যায় যে, কে বা কারা বিষ প্রয়োগ করেছে তা নির্দিষ্টভাবে সনাক্ত করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কিভাবে ব্যবস্থা নেব।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলছেন, প্রতি বছরই কয়েকদফা এভাবে নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করা হয়। কিছু কিছু পরিবেশ ধংসকারী মাছ শিকারী আছে, যাদের আগ্রাসনে মাতামুহুরী নদীর মাছ দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে। তাছাড়া হাড্ডি জেলেরা বিশেষ প্রকার রশির মাধ্যমে মাতামুহুরী নদীর মাছ ছেঁকে তুলে ফেলছে। এই প্রক্রিয়ায় মাছ শিকারের ফলে পোনা বা রেণু মাছই বেশি পরিমানে মারা পড়ছে।
অন্যদিকে চলতি বছরে আলীকদম উপজেলায় নদীর পানি ছুঁই ছুঁই করে রোপন করা হয়েছে আগ্রাসী তামাক। এসব তামাকে উচ্চক্রিয়া সম্পন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা হয় এবং পরবর্তী পনি সেচ দেওয়ার ফলে এসব রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ধুয়ে গড়িয়ে পড়ে নদীর পানিতে। এতে মাছের বংশবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়। নিয়ম আছে নদীর পাড় হতে ৬০ ফুট পর্যন্ত যায়গাতে কোন প্রকার তামাক চাষ করা যাবেনা এবং কোন প্রকার উচ্চক্রিয়া সম্পন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা যাবেনা। কিন্তু সেসব নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে চলছে তামাক চাষ এবং রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ।
উল্যেখ্য চলতি বছর মৎস্য সপ্তাহ পালনকালে আলীকদম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা মাছ নিধনকারী সকল প্রকার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি। সব নীতিকথা ফাইলবন্দী।