মঙ্গলবার ● ৬ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » হতদরিদ্র মাকসুদার পাশে এসে দাঁড়ায় বরগুনার পুলিশ লাইভ ব্লাড ব্যাংক
হতদরিদ্র মাকসুদার পাশে এসে দাঁড়ায় বরগুনার পুলিশ লাইভ ব্লাড ব্যাংক
মুতাসিম বিল্লাহ, বরগুনা ::(২২ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪৮মি.) বেতাগী উপজেলার বুড় মজুমদার গ্রামের হতদরিদ্র গৃহবধু মাকসুদা বেগম (৩৫)। মাস দুই আগে কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হন স্বামী শহিদুল ইসলাম (৪০)। সে থেকে তাঁর কোনো খোঁজ রাখেন শহিদুল।
দরিদ্র পরিবারের অভাবী সংসার মাকসুদার সে দীর্ঘদিন ধরে অ্যানিমিয়া (রক্তশূন্যতা) রোগে ভুগছেন। তার ওপর এক মাস আগে একটি মেয়ে জন্ম দেন তিনি। খাদিজা নামে তার ১৩ বছরের আরেকটি মেয়ে রয়েছে।
এদিকে রক্তশূন্যতা চরমে পৌঁছাল দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন মাকসুদা এ সময় স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠন জাগ নারীর রি-কল প্রকল্পের উদ্যোগে মাকসুদাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান মাকসুদার শরীরে রক্তের হিমোগ্লোবিন আশঙ্কাজনক হারে
কমে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে ন্যূনতম পাঁচ ব্যাগ রক্ত না দিলে মাকসুদার জীবন সংশয় রয়েছে।
এ সময় রক্তের জন্য যোগাযোগ করা হলে মাকসুদার পাশে এসে দাঁড়ায় বরগুনার পুলিশ লাইভ ব্লাড ব্যাংক।
পুলিশ লাইভ ব্লাড ব্যাংকের একজন সদস্য বামনা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামাল উদ্দিন প্রথম দিনেই মাকসুদাকে এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে যান। দ্বিতীয় দিন রক্ত দেন মেহেদী হাসান নামে আরেক পুলিশ কর্মকর্তা।
এ উপলক্ষে ৩ ডিসেম্বর শনিবার সকালে বরিশাল বিভাগের পুলিশের অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আকরাম হোসেন ও বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে মাকসুদা ও তার শিশু সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার শাড়ি-কাপড়সহ অর্থ সহযোগিতা প্রদান করেন।
এ সময় পুলিশ সুপার বিজয় বসাক সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান বরগুনা জেলার প্রায় ১ লাখ মানুষের জন্য একটি মাত্র জেনারেল হাসপাতাল। চিকিৎসা সংকটের পাশাপাশি এখানে রয়েছ জরুরি রক্তের সংকট। নিভৃত গ্রাম থেকে আসা অধিকাংশ রোগীর চিকিৎসাসেবা পেতে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে যেসব হীনতা পার হতে হয় তার মধ্যে অন্যতম প্রধান সংকট এটি। প্রত্যন্ত জনপদ থেকে আসা দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবারের রোগীদের এ সমস্যসা নিরসনে পুলিশ বাহিনী সহযোগিতায় তিনি বরগুনায় স্থাপন করেন ‘পুলিশ লাইভ ব্লাড ব্যাংক’ জেলার ছয় শতাধিক পুলিশ সদস্যের রক্তের গ্রুপ এবং একাধিক জরুরি মোবাইল নম্বর দিয়ে লিফলেট ছাপিয়ে তা বিতরণ করেন তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে।
স্থানীয় দরিদ্র মানুষের জরুরী প্রয়োজন এখন সক্রিয় ‘পুলিশ লাইভ ব্লাড ব্যাংক।
জানা গেছে দাতা সংস্থা অক্সফাম, সিঁড়ি এবং ইউকে এআইডির সহযোগিতায় বরগুনা সদর ও বেতাগী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের তিন হাজার ৫০ জন হতদরিদ্র উপকারভোগীর জীবনমা উন্নয়নে ২০০৯ সাল থেকে আয় বৃদ্ধিমূলক নানামুখী উন্নয়নকাজ বাস্তবায় করে করে আসছে স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠন জাগো নারী।
সম্প্রতি দাতা সংস্থা অক্সফাম থেকে একটি সার্ভে টিম এসে মাকসুদাসহ রুনু বেগম
নামের অপর আরেক উপকারভোগীকে অ্যানিমিয়ার রোগ হিসেবে শনাক্ত করে। এর মধ্য শনাক্তকরণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয় রুনু বেগমের (৪৫)। বর্তমানে রি-ক
প্রকল্পের অধীনেই মাকসুদা বেগমের চিকিৎসা চলছে।
মাকসুদা বেগম বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ৪ নম্বর বেড চিকিৎসাধীন রয়েছে।