বৃহস্পতিবার ● ৮ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঐতিহ্যবাহী কালাচাদঁ আউলিয়ার ২০৪ তম বছরের মেলা শুরু
ঐতিহ্যবাহী কালাচাদঁ আউলিয়ার ২০৪ তম বছরের মেলা শুরু
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: (২৪ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৫০মি.) বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রতিবছরের ন্যায় ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ২০৪ তম ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা । তিনি কালাচাঁদ ফকির নামেও পরিচিত। ৩ দিন ব্যাপি চলবে এ মেলা। মেলা আরম্ভের দুই তিন দিন আগে থেকেই এখানে প্রচুর লোক সমাগম হতে শুরু করে। ইতোমধ্যে হাজার হাজার দোকানীরা মেলা প্রাঙ্গন ও তার আশপাশে এলাকায় পশরা সাজিয়ে বসেছে। দক্ষিনাঞ্চল সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও আশেকানবৃন্দ সহ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও ভক্ত ও দর্শনার্থীরা এ মেলা দেখতে আসে। হাজার হাজার দোকানী ,দর্শনার্র্থী ও ভক্তবৃন্দের উপচে পড়া লোক সমাগম ঘটে কালাচাঁদের মেলায়।
দুই বছর ধরে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্ববধায়নে এ মেলা চলছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদাধিকার বলে মেলা কমিটির সভাপতি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এ ঐতিহ্যবাহী মেলা অনুষ্ঠানে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশেদুল আলম সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, মেলা উপলক্ষ্যে পর্যাপ্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রাখা হবে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের একটি টিম সার্বক্ষনিক টহলরত থাকবে।
এছাড়াও থাকবে আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক দল । মেলা কমিটি অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা জানায়, জায়গা স্বল্পতার কারনে দর্শনার্থীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা দেয়া সম্ভব হয়না। মূলতঃ মেলাটি ২৫ শে অগ্রহায়ন একদিনের জন্য অনুষ্ঠানের ঐতিহ্য থাকলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে থেকে চলছে ৩ দিন ব্যাপি। রাতভর চলবে ওরশ , মুর্শিদী ও মাইজ ভান্ডারী গান। ভক্তবৃন্দরা কালাচাঁদ আউলিয়ার মাজারে আগরবাতি আর মোমবাতি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে । হাজারো ভক্তরা মনের আশা পূরন আর মানতের টাকা পয়সা মাজারে দান করে তৃপ্ত হবে।
জনশ্রুতি আছে, ২০৩ বছর আগে ছোট অবস্থায় কালাচাঁদ আউলিয়া পানগুছি নদীতে ভেসে এসেছিল এবং বারইখালী কাজী বাড়ি এলাকায় আস্থানা গেড়েছিল। লোকমুখে রয়েছে তার বিভিন্ন ধরনের অলৌকিক কাহিনী। জনশ্রুতি রয়েছে এক লোক শীতার্ত কালাচাঁদকে দেখে তার গাঁয়ের চাদর দিয়ে দেয়। কালাচাঁদ চাদারটি পেয়ে তার সামনে জলন্ত আগুনে ভিতরে ফেলে দিলে তা পুড়ে যায়। এতে ঐ লোকটি আফসুস হলে কালাচাঁদ জ্বলন্ত আগুন থেকে অক্ষত চাদরটি উঠিয়ে তাকে দিয়ে দেয়। সমসাময়িক সময়ে কালাচাঁদ আউলিয়া বাঘের পিঠে ঘুরে বেড়াত। তার হুকুম মতে এখনো পানগুছি নদী থেকে কুমির পানির উপর দিয়ে ভেসে যেতে হয়। এভাবে তার নামে নানা জনশ্রæতি রয়েছে। বারইখালী ফকিরের তাকিয়া মৌজা তার নামেই হয়েছে বলে এলাকাবাসি জানায়। বারইখালীর কাজী বাড়ির চত্বরে তিনি আস্তনা গাড়েন এবং আর এখানেই তিনি জ্যান্ত কবর নিয়েছিল। তার নামে এখানে প্রতি বছর মেলা বসে।