শুক্রবার ● ৩০ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » গাজীপুরে স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা
গাজীপুরে স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, গাজীপুর প্রতিনিধি :: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া ( মোড়ল মার্কেট) এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে এক শিশু স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা৷
৩০ অক্টোবর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ শিশু স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে৷ নিহত শিশুর নাম নাজনীন (৭)৷ সে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈবরের মাইজচর এলাকার আক্কাস আলীর মেয়ে৷
নাজনীন শ্রীপুরের চকপাড়া এলাকায় তার নানা হাসমত আলীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় চকপাড়া সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়তো৷
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুর রহমান আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নানী মিনুজা বেগমের সঙ্গে বসতঘরে ঘুমিয়ে ছিল নাজনীন৷ রাত ২টার দিকে পুলিশের পরিচয় দিয়ে কয়েকজন লোক দরজা খুলতে বলেন৷ এক পর্যায়ে নানী দরজা খুলে দিলে তিন জন লোক ঘরে ঢুকে পড়ে৷ তারা নাজনীনকে ঘুম থেকে তুলে টেনে হেঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়৷ নানী তাদের বাধা দিলে তাকে ঘরে রেখে দুর্বৃত্তরা বাইরে থেকে দরজা আটকে দেয়৷ এ সময় নানী ঘরে থেকে চিত্কার করতে থাকেন৷ তার ডাক শুনে এক প্রতিবেশী নারী ঘরের দরজা খুলে দেয়৷ এ সময় নানী ঘরের সামনে বারান্দায় নাজনীনের গলা কাটা লাশ দেখতে পান৷
শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়৷ পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ (শতামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়৷
উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে তিনবছর আগে আক্কাছ আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকায় বসবাস করেন৷ পরবর্তীতে নাজনীনের মা আসমা বেগম বিয়ে করে স্থানীয় মাওনা সলিং মোড় এলাকায় দ্বিতীয় স্বামীর কাছে চলে যান৷ চকপাড়া এলাকায় নাজনীনের নানা হাসমত আলী হাসু, নানী মিনুজা বেগম, মামা রিপন মিয়া ও নাজনীন বসবাস করতেন৷ ঘটনার রাতে নানা হাসু টাঙ্গাইলে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন৷ রিপন ছিলেন ঢাকায়৷ বাড়িতে শুধু নানী ও নাতনী ছিলেন৷
নিহতের মামা রিপন মিয়া প্রতিনিধিকে জানান, প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় আজগর আলীর ছেলে আব্দুল করিম ও আব্দুল কাদির মধ্যস্থতা করে তার বাবা হাসমত আলী ওরফে হাসুর চকপাড়ার প্রায় ১১শতাংশ জমি শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকার ইয়াকুব আলী মেম্বারের ছেলে এমদাদুল হকের কাছে বিক্রি করে দেন৷ এ সময় তারা তার কাছ থেকে ১৭লাখ টাকা নিয়ে অন্যত্র জমি কেনার আশ্বাস দেন এবং চকপাড়ায় তাদের জমিতে তিন কক্ষের একটি বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেন৷ টাকার বদলে ওই বাড়িসহ কিছু জমি তার বাবার কাছে বিক্রিরও প্রতিশ্রুতি দেন তারা৷ এরপর থেকে তারা ওই বাড়িতেই বসবাস শুরু করেন৷
কয়েকবছর পর ওই বাড়িসহ জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য চাপ দিলে করিম ও তার ভাই কাদির নানা তালবাহানা শুরু করেন এবং ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেন৷ এ নিয়ে করিম ও কাদিরের সঙ্গে তাদের পরিবারের বিরোধ চলছিল৷ দেড় বছর আগে ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে একটি মোটরসাইকেল চুরির মিথ্যা মামলায় আসামি করে তাকে এলাকা ছাড়া করা হয়৷ নাজনীন হত্যার ঘটনায় তাদের হাত রয়েছে বলে ধারণা করছেন পরিবারের সদস্য।
আপলোড : ৩০ অক্টোবর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : বেলা ৩.১৮ মিঃ