বৃহস্পতিবার ● ২২ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে ওঠা সেই নৌকাটি
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে ওঠা সেই নৌকাটি
মুতাসিম বিল্লাহ, বগুনা সিএইচটি মিডিয়ায় টুয়েন্টিফোর ডটকম বরগুনা প্রতিনিধি :: পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বালুর বুক চিরে ভেসে ওঠা শত বছরের পুরানো সেই নৌকাটি সংরক্ষণ করা হয়েছে।
রাখাইন মার্কেট ও বৌদ্ধ মন্দিরের পাশাপাশি থাকায় দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে দিন দিন এর আকর্ষণ বেড়ে চলছে।
প্রাচীন নিদর্শনের স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে কুয়াকাটার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধমন্দির সংলগ্ন একটি বেষ্টনীর ভিতর রেখেছেন। যা এখন নৌকা যাদুঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে।
প্রাচীন এ নৌকাটির দৈর্ঘ্য ৭২ ফুট প্রস্থ ২২ ফুট ও প্রায় ৯০ টন ওজনের বলে জানিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের জুলাই মাসে সৈকতের বালুর মধ্যে জেগে ওঠা নৌকাটির অংশ বিশেষ স্থানীয়রা দেখতে পায়। ওই সময় নৌকাটি দেখে লোকজন নানা রকম আলোচনা শুরু করে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নজরে আসে। এক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ দল এ নৌকাটির খুটিনাটি বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করে। দেশীয় ও আন্তজার্তিক নৌকা বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে এটিকে উত্তোলন করে সংরক্ষনের ব্যবস্থা নেয়া হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নৌকাটিকে টিনসেডের একটি বেষ্টনীর ভিতর দৃষ্টি নন্দন ভাবে স্থাপন করা হয়েছে।
বিশেষভাবে সংরক্ষিত নৌকাটিকে কাঠের বাতা ষ্টীলের পাত ও রং দ্বারা আবৃত করা হয়।
এছাড়া নৌকাটির ভিতর পাওয়া বিশাল আকারের লোহার শিকলটি এর পাশেই রাখা হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষন ও দেখার জন্য সার্বক্ষনিক ২ জন লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া এর কোন রকম ক্ষতিসাধন করা থেকে দর্শনার্থীদের বিরত রাখতে অনুরোধ জানিয়ে দেয়ালে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছে প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর।
বরিশাল থেকে কুয়াকাটায় ভ্রমনে আসা পর্যটক মো. সুমন হাওলাদার প্রতিবেদককে বলেন এখানে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রাচীন এ নৌকাটি অন্যতম।
আমাদের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা যোগাবে। ঢাকা ইডেন কলেজের ছাত্রী ইসরাত জাহান ঝুমু বারী প্রতিবেদককে জানান, এখানে আগেও একবার এসেছিলাম। জায়গাটি দারুন। প্রাকৃতিক দৃশ্যের পাশাপাশি এ নৌকাটি দেখে ভাল লেগেছে। অপর এক পর্যটক শুভ্র ইসলাম বলেন এ নৌকাটি পুরানো ঐতিহ্য।
এটি শিক্ষার্থীদের গবেষণার কাজে আসবে। তবে নৌকাটিকে আরো যত্ন করতে হবে বলে তার মত।
নৌকা যাদুঘরের কেয়ারটেকার মো.ইসাহাক হাওলাদার জানান, প্রতিদিন নৌকাটিকে দেখতে প্রচুর
লোক ভীড় করে। দর্শনার্থীদের জন্য কোন পয়সা ছাড়াই উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের প্রত্নসম্পদ ও সংরক্ষণ বরিশাল যাদুঘরের সহকারী কাষ্টডিয়ান শাহিন আলম বলেন ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য নৌকাটিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আগামী জানুয়ারি মাসে মেগা বীচ কার্নিভাল উপলক্ষ্যে এটিকে সাজানো হবে। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে এ কাজ শুরু করা হবে।