শনিবার ● ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » রাজধানীতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ৪ জঙ্গির আত্মসমর্পণ
রাজধানীতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ৪ জঙ্গির আত্মসমর্পণ
অনলাইন ডেস্ক :: (১০ ডিসেম্বর ১৪২৩ বাঙলা: বাংরাদেশ সময় বিকাল ৩.৫০মি.) ঢাকার আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের মুখে জঙ্গিনেতা জাহিদুল ইসলামের স্ত্রীসহ চারজন বেরিয়ে এলেও ভেতরে এখনও জঙ্গিনেতা তানভীর কাদেরীর ছেলেসহ তিনজন রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
২৪ ডিসেম্বর শনিবার ভোররাত থেকে দক্ষিণখানের আশকোনার তিনতলা বাড়ি সূর্যভিলায় অভিযানে রয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারাও রয়েছেন সেখানে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহারসহ চারজন পুলিশের কাছে ধরা দিয়ে জানান, ভেতরে এখনও দুই নারী এবং একজন পুরুষ রয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, “ভেতরে তিনজন রয়েছেন। তাদের কাছে প্রচুর এক্সপ্লোসিভ (বিস্ফোরক) ও সুইসাইডাল ভেস্ট রয়েছে। ”
ঘটনাস্থলে থাকা উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, “যারা ভেতরে আছে তাদের বারবার আত্মসমর্পণ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা ভেতর থেকে বলছে- তাদের শরীরে গ্রেনেড বাঁধা, গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলে বিস্ফোরণ ঘটাবে। ”
অভিযানে থাকা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, ভেতরে থাকা একজন জঙ্গিনেতা তানভীর কাদেরীর ছেলে। বাকিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
গুলশান হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার মধ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি বাড়িতে অভিযানের সময় টিকতে না পেরে তানভীর আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
তানভীর কাদেরীর স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা ওরফে খাদিজা এবং তার জমজ ছেলের একজন আজিমপুরের ওই অভিযানের সময় আহতাবস্থায় গ্রেপ্তার হন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাটিকামারি গ্রামের তানভীর লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে দুটি বেসরকারি কম্পানি ঘুরে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং শাখায় উচ্চপদে যোগ দিয়েছিলেন।
২০০১ সালে তিনি বিয়ে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে লেখাপড়া শেষ করে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘সেইভ দ্য চিলড্রেন’ এ চাকরিরত ফাতেমাকে।
২০১৪ সালে হজ করতে সপরিবারে সৌদি আরবে যান তানভীর। সেখান থেকে ফিরে আসার পর তানভীরের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রতা ধরা পড়ে আত্মীয়দের চোখে। ফাতেমাও তখন থেকেই হিজাব পরা শুরু করেন বলে স্বজনরা জানান।
হজ থেকে ফিরে ২০১৪ সালে ডাচ-বাংলার চাকরি ছেড়ে ‘আল সাকিনা হোম ডেলিভারি সার্ভিস’ নামে একটি ব্যবসা শুরু করেছিলেন তানভীর। এর মধ্যেই তিনি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন বলে পুলিশের ভাষ্য।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা বলছেন, তামিম চৌধুরী নিহত হওয়ার পর নব্য জেএমবির সমন্বয়কের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছিলেন তানভীর কাদেরী। ‘আবদুল করিম’ ও ‘শমসেদ’ নামে সংগঠনে পরিচিত ছিলেন তিনি। করিম নাম ব্যবহার করেই তিনি বসুন্ধরা আবাসিকে গুলশান হামলাকারীদের জন্য ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিলেন।
আশকোনার ওই জঙ্গি আস্তানায় থাকা জেবুন্নাহারের স্বামী জাহিদুল ইসলাম সেনাবাহিনীর মেজর ছিলেন। দুই বছর আগে সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে তিনি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন বলে পুলিশ জানায়। সুত্র : কালেরকণ্ঠ