বৃহস্পতিবার ● ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » পানগুছি নদীর ভাঙনে বাগেরহাটে রাস্তা বিলীন
পানগুছি নদীর ভাঙনে বাগেরহাটে রাস্তা বিলীন
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: (১৫ পৌষ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৩০মি.) বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ-সন্ন্যাসী-শরণখোলা উপজেলার সংযোগ সড়কটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ১ কিলোমিটারের পথ ৪০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। পানগুছি নদীর তীরবর্তী খাউলিয়া এলাকার এ রাস্তা বিলীন হওয়ায় লোকজনকে নৌকা আর ট্রলারে পার হতে হয়। যান্ত্রিক বাহনে ৪০ কিমি পথ ঘুরতে জনসাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
পানগুছি নদীর করাল গ্রাসে তীরের প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা ভেঙেছে কয়েক বছর আগেই। এরপর থেকে একটি বিকল্প রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করত। কিন্তু তাও কিছুদিন আগে পানগুছির আকস্মিক ভাঙনে বিলীন হয়েছে । বিলীন হয়েছে আশপাশের বেশ কয়েকটি বসতঘর । ফলে মোরেলগঞ্জের সঙ্গে উপজেলার সন্ন্যাসী, খাউলিয়া, বানিয়াখালী ও শরণখোলা উপজেলার সাথে এ পথের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ কারনেই এই ১ কিমি সড়ক পথ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই উপজেলার প্রায় দুই লক্ষাধীক মানুষ। এলাকার জনসাধারণকে যানবাহন নিয়ে যেতে হয় কমপক্ষে ৪০ কিমি পথ ঘুরে।
ভাঙনে সদ্য বিলীন হওয়া সড়কের পাশেই বাড়ি আবুল হাসেমের (৭৬)। তিনি বলেন, একসময় এ রাস্তা বাস, ট্রাক ,মটর সাইকেল সহ নানা যানবহন চলাচলে মুখোরিত ছিল। এখন এই ১ কিমি পথ ৩০ কিমি পথ ঘুরে যেতে হয়। গাবতলা গ্রামের আব্দুল গফ্ফার তালুকদার জানান, এ পথে যাওয়া যায় পার্শ্ববর্তী উপজেলা শরণখোলায়। এক সময় বাসও চলতো এই পথে। প্রায় সাড়ে চার বছর আগে নদী তীরের এই অংশ ভাঙতে শুরু করে। এরপর গত কয়েক বছরে এই সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙে যাওয়ার পর দীর্ঘ দিনেও নতুন করে রাস্তা নির্মাণের তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পানগুছির ভাঙনে গত কয়েক বছর ধরে এই এলাকার বহু বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বহু মানুষকে নিঃস্ব করেছে এই পানগুছি। অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। দিনে দিনে এই ভাঙন আরো তীব্র হচ্ছে।
বর্ষার জোয়ারের সময় ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় পানি ঢুকে প্লাবিত হয় গ্রামের পর গ্রাম। বেশি প্লাবিত হয় ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া, খাউলিয়া, আর গাবতলা গ্রাম।
ইউএনও মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান জানান, পানগুছির আকস্মিক ভাঙনে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একটি অংশ পুরোপুরি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। জনগুরুত্বের কথা বিবেচনা করে বিকল্প আরেকটি রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। দ্রæত এই পথটি চলাচল উপযুগী করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভাঙন রোধে স্থায়ী একটি বেড়ি বাধেঁর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার জানান, পানগুছি নদীর ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পাশ হলে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।