বৃহস্পতিবার ● ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম দূর্নীতি বন্ধের দাবীতে স্মারকলিপি
জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম দূর্নীতি বন্ধের দাবীতে স্মারকলিপি
সিলেট প্রতিনিধি :: (১৫ পৌষ ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৩৪মি.) সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার খালেদের অনিয়ম, দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধের দাবীতে ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে সিলেটের সিভিল সার্জন বরাবরে গণস্বাক্ষরিত স্মারকলিপি দিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ।
স্মারকলিপিতে তারা ডা. খালেদের একাধিক অনিয়ম, দূর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উল্লেখ করেন।
জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক ডা. খালেদের অনিয়ম, দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে আতংকিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। জেলা শহরের সবচেয়ে দূরের জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা। অনিয়ম, দূর্নীতি, লোটপাটের কারণে চিকিৎসা সেবা বলতে কিছুই নেই।
আবাসিক ওয়ার্ডগুলোর অবস্থা খুবই নাজেহাল। অপরিচ্ছন্নতার কারণে ময়লা, আবর্জনা জমে র্দূগন্ধে সুস্থ্য মানুষ অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। রাতের বেলায় আবাসিক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীরা থাকেন অসহায়। ডাক্তার ও নার্স কাউকে পাওয়া যায়না। আবাসিক ওয়ার্ডের রোগীদের ইনজেকশন পুষ করা থেকে শুরু করে যাবতীয় চিকিৎসা সেবা ও দেখাশুনা করে ডাক্তার খালেদের বাসার কেয়ারটেকার আইন উদ্দিন।
জরুরী বিভাগে কোন ডাক্তার পাওয়া যায়না। সুইপার, নাইট গার্ড, ওয়ার্ড বয় দিয়ে চলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসা সেবা। আবাসিক ডাক্তাররা খালেদের নেতৃত্বে রোগীদের খাবার সরবরাহে চলছে ভয়াবহ অনিয়ম, দূর্নীতি।
কয়েক বছর থেকে রোগীদের খাবার সরবরাহের টেন্ডার জালিয়াতি করে ডাক্তার খালেদ ও তার মামা শশুড় ভাগাভাগি করে নেন। এরই সুবাদে রোগীদের নামে মাত্র খাবার দিয়ে বছরে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
সরকারী বরাদ্ধকৃত ঔষধ রোগীদের মাঝে বন্টন করা হয়না। আবাসিক ওয়ার্ডে ভর্তি ডায়রিয়া রোগীর খাওয়ার স্যালাইন রোগীরা ফার্মেসী থেকে কিনে নিতে হয় রোগীরা। অথচ ফাইলে লেখা থাকে রোগীর নামে বেশী মূল্যের ঔষধ। ডেলিভারী রোগীদের ৫/৭ হাজার টাকা চুক্তির বিনিময়ে ডেলিভারী করা হয়।
নতুবা শত কিলোমিটার দূরে জেলা শহরের হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
স্মারকলিপিতে তারা আরও উল্লেখ করেন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার খালেদ জকিগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে আসার পর থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে দূর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উর্পাজনের পরিকল্পনার ছক তৈরী করে হাসপাতালের পাশের বাড়ীর এক প্রভাবশালী জামায়াত নেতার মেয়ে বিয়ে করে শুরু করেন দাপটের সহিত অনিয়ম দূর্নীতি।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার খালেদ কর্মস্থলের দায়িত্ব ফাঁকি দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারী বাসায় প্রভাবশালীদের তোষামোদ করে প্রাইভেট চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন। তার এই প্রাইভেট চিকিৎসা কেন্দ্র রোগী সংগ্রহ করতে ওষুধ কোম্পানীর কিছু অসাধু প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি চক্র রয়েছে। ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা সব সময় ওৎ পেতে বসে থাকেন হাসপাতালের আশপাশে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী আসলেই ডা. খালেদের প্রাইভেট চিকিসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। এরই সুবাদে ডাক্তার খালেদ ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের খুশি করতে প্রয়োজন ছাড়াও ঔষধ জুড়ে দেন ব্যবস্থাপত্রে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল দশার প্রতিবাদ করলে রোগীরা ডাক্তার খালেদ হাতে প্রহৃত হন। আবাসিক ডাক্তার খালেদ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশের কিছু সন্ত্রাসী ছেলেদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি বাহিনী। তার অপকর্ম, অন্যায়, অবিচার, সেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির প্রতিবাদ কেউ করলে এই বাহিনী দিয়ে মারপিট ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার ভয়ভূতি প্রদর্শন করেন। মিথ্যা মামলা ও হামলার ভয়ে কোন ভূক্তভোগী ডাক্তার খালেদের অপকর্ম, অন্যায়, অবিচার, সেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না।
ডাক্তার খালেদের অপকর্ম, অন্যায়, অবিচার, সেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির সংবাদ একাধিক জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় ডাক্তার খালেদ প্রকাশিত সংবাদ ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার জকিগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি আল হাছিব তাপাদারের বিরুদ্ধে অফিস চলাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য কমপেক্সের সেবা বন্ধ রেখে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধি বাহিনীদের নিয়ে র্দীঘ সময় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
এতে সেবা নিতে আসা প্রত্যান্ত অঞ্চলের লোকজন ঘন্টার পর ঘন্টা র্দূভোগের শিকার হয়েছেন। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে নিজের অপকর্ম ঢেকে রাখতে তিনি মরিয়া।
গণস্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে জকিগঞ্জের মানুষের পক্ষে তারা আবাসিক ডাক্তার খালেদ আহমদকে প্রত্যাহার পূর্বক সরেজমিন তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
ব্যাপারে ডা. খালেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন সাংবাদিকের সাথে কথা বলবেন না বলে জানান।
অভিযোগকারী উপজেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুকিত মেম্বার বলেন, বহুল বিতর্কিত মামলাবাজ ওই ডাক্তার প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ রাগীব রাবেয়া থেকে এমবিবিএস পাশ করে বিসিএস ছাড়াই সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি নিয়ে অনিয়ম, দূর্নীতি, রোগীদের মারধর করেন। তার অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেন।
তার একচ্ছত্র আধিপত্য, অনিয়ম, রোগী বাণিজ্য নিয়ে জাতীয় একাধিক পত্রিকায় ও স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হলেও তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে। উল্টো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি নামক ৫৭ ধারার আইনে মামলা দিয়ে নিজের অপকর্ম ঢাকতে অপচেষ্ঠা করে যাচ্ছেন।
প্রকাশিত সংবাদের বিরুদ্ধে সরকারী কর্মচারীদের মানববন্ধন নজিরবীহিন ঘটনা।