শিরোনাম:
●   কাউখালীতে যুবদলের ৪৬ তম প্রতিষ্টাতা বার্ষিকী পালন ●   পানছড়িতে ৫৩ তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপিত ●   ঘোড়াঘাটে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কর্মী সম্মেলন ●   বিজিবির অভিযানে অস্ত্র মাদকসহ চার জন আটক ●   তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে বিএনপির বিক্ষোভ ●   সামাজিক সংগঠন ‘ইগনাইট মিরসরাই’র আত্মপ্রকাশ ●   আত্রাইয়ে জাতীয় যুব দিবস পালন ●   অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সকল উসকানির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে ●   রাউজানে আগুনে ৫ দোকান ভস্মিভূত ●   ঘোড়াঘাটে দৈনিক সকালের বাণীর ১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ●   রাঙামাটিতে জাতীয় যুব দিবস পালিত ●   ছেলেকে ফিরে পেতে এক মায়ের আকুতি ●   কাউখালীতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য অপহরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে জাতীয় যুব দিবস পালিত ●   মিরসরাইয়ের বিএনপি নেতা হত্যার মামলায় ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ গ্রেফতার ●   আত্রাইয়ে নবাগত ইউএনও‘র যোগদান ●   খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র সড়ক অবরোধ পালিত ●   মিরসরাইয়ের ধুমে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু ●   কুষ্টিয়াতে আাধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা ●   ঈশ্বরগঞ্জে জিয়ারুল হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ গ্রেফতার-২ ●   নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ ●   সবার জন্য ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল নিশ্চিত করতে হবে ●   ঘোড়াঘাটে জমিজমা বিরোধে মা ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা ●   ঈশ্বরগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত-১ : আহত ২ ●   তারল্য সংকটে ন্যাশনাল ব্যাংক, সিলেটের শিবগঞ্জে ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের তালা ●   খাগড়াছড়িতে তিন ইউপিডিএফ কর্মীকে গুলি করে হত্যা : অবরোধের ডাক ●   বারইয়ারহাট থেকে বিদেশি মদসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার ●   গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানেরও সংস্কার জরুরী ●   তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় উন্নয়ন কাজে বন্ধ্যাত্ব বিরাজ করছে ●   রাঙামাটিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অবহিতকরণ বিষয়ক সেমিনার
রাঙামাটি, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
রবিবার ● ১ জানুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » পাবনা » চলনবিলের প্রাকৃতিক জলাধার নদী বিল খাঁড়ি মৎস সম্পদ বিপন্ন
প্রথম পাতা » পাবনা » চলনবিলের প্রাকৃতিক জলাধার নদী বিল খাঁড়ি মৎস সম্পদ বিপন্ন
রবিবার ● ১ জানুয়ারী ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

চলনবিলের প্রাকৃতিক জলাধার নদী বিল খাঁড়ি মৎস সম্পদ বিপন্ন

---ইকবাল কবীর (চাটমোহর) পাবনা প্রতিনিধি :: (১৮ পৌষ ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বেলা ৪.২০মি.) বাংলাদেশের বৃহত বিল চলনবিল মরা বিলে পরিণত হয়েছে। নাব্যতা সংকটের কারণে এক কালের চলন্ত এ বিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রাকৃতিক জলাধার নদী ও খাঁড়ি গুলোর অস্তিত্ব ও আজ হুমকীর মুখে। ফরাক্কা বাঁধের প্রভাব, জলবায়ুর পরিবর্তন ও বড়াল নদীর উৎসমুখ রাজশাহীর চারঘাটে স্লুইজগেট নির্মাণের প্রত্যক্ষ প্রভাবে চলনবিল হারিয়েছে স্বকীয়তা। চলনবিল অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী সমূহে অতীতে প্রতিবছর প্রায় ২২২.৫ মিলিয়ন ঘনফুট পলি নদী সমূহ দিয়ে বিলে প্রবেশ করতো এবং ৫৩ মিলিয়ন ঘনফুট পলি নদীপথে বিলের সীমা ত্যাগ করতো। ১৬৯.৫ মিলিয়ন ঘনফুট পলি প্রতিবছর বিলে থেকে যেত। ফলশ্রুতিতে বিলের জলময় অংশের আয়তন ক্রমশই কমে আসছে।

এছাড়া অপিরিকল্পিত ভাবে বাঁধ, সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ দখল দূষণের ফলে হুমকির মুখে পরেছে বিলের অস্তিত্ব। বিলের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত ১৬ টি নদী, ৩৯ টি বিল ও ২২ টি খাঁড়ি ক্রমশই ভরাট হয়ে যাচ্ছে। জলাশয় গুলি রূপান্তরিত হচ্ছে আবাদী জমিতে। প্রাকৃতিক জলাশয় পানিশূন্য হয়ে পরায় এ এলাকার মানুষকে নির্ভর করতে হচ্ছে গভীর ও অগভীর নলকূপের উপর। ব্যহত হচ্ছে নদী তীরবর্তী ২১ হাজার হেক্টর জমির সেচ কার্যক্রম।
একসময় চলনবিল নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, সিংড়া, নওগাঁ জেলার রানীনগর, আত্রাই,সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া পাবনা জেলার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বেড়া এবং বগুড়ার দক্ষিনাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত থাকলেও বর্তমানে বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, সিংড়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলার ৬২ টি ইউনিয়ন ৮ টি পৌরসভা ও প্রায় দেড় হাজার গ্রাম এর অন্তর্ভূক্ত বলে ধরা হয়। এ এলাকায় একুশ লক্ষাধিক জনবসতি রয়েছে। চলনবিলে জমির পরিমান ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৩৫ হেক্টর। এক হাজার ৭৫৭ আয়তনের ৩৯টি বিল, ৪ হাজার ২৮৬ হেক্টর আয়তনের ১৬ টি নদী ও ১২০ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট ২২ টি খাল রয়েছে চলনবিল এলাকায়। সমগ্র চলনবিল বিষুবরেখার ২৪ ডিগ্রী ৭ মিনিট থেকে ২৪ ডিগ্রী ৩৫ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯ ডিগ্রী ১০ মিনিট হতে ৮৯ ডিগ্রী ৩৫ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত।
অধ্যক্ষ মো.আব্দুল হামিদ রচিত চলনবিলের ইতিকথা গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, পলি জমে চলনবিলের ভরাট হয়ে যাওয়া অংশে বহু গ্রাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গুরুদাসপুর চাঁচকৈড় ও কাছকাটার উত্তর দিয়ে প্রবাহিত নন্দকুজা ও গুমানী নদী চলনবিলকে দুভাগে বিভক্ত করেছে। গুরুদাসপুর থানার উত্তরাংশ সিংড়া তাড়াশ রায়গঞ্জ সলঙ্গা থানা ও উল্লাপাড়ার দশটি ইউনিয়ন নিয়ে উত্তর চলনবিল ও চাটমোহর ভাঙ্গুড়া বড়াইগ্রাম থানা ও গুরুদাসপুর থানার দক্ষিণাংশ দক্ষিণ চলনবিল নামে পরিচিত।

এ ছাড়া ১৯১৪ সালে পাকশীর সাড়া- সিরাজগঞ্জ রেললাইন স্থাপিত হলে চলনবিল বিভক্ত হয়ে পরে। বর্তমান এ রেল লাইনের উত্তর পশ্চিম অংশকেই চলনবিল ধরা হয়। এছাড়া ২০০২ সালে চলনবিলের বুক চীরে নির্মিত হয়েছে বনপাড়া- হাটিকুমরুল ৫৫ সড়ক। ১৯৭৭ সালে চলনবিলের মাঝ দিয়ে বাঘাবাড়ি- সিংড়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মিত হয়। চলনবিল বিভক্ত হওয়ায় পানির প্রবাহ, মৎস সম্পদের পরিমান, বংশবিস্তার কমে গেছে। জীব বৈচিত্র ও বিপন্ন হচ্ছে। চলনবিল এলাকার ১০টি উপজেলার আবাদ যোগ্য খাস জমি ও জলাশয়ের বেশির ভাগই দখলে রেখেছে প্রভাবশালীরা।
জানা গেছে, চলনবিল এলাকার উল্লেখযোগ্য বিল গুলো হলো, বড় বিল, খলিশাগাড়ি বিল, ধলাইর বিল, ছয় আনি বিল, বাইরার বিল, সাধুগাড়ি বিল, মহিষা হালট, চাকল বিল, বৃগড়িলা বিল, কুমিরাগাড়ি, কৈগাড়ি, নিহালগাড়ি, চেচুয়া, টেংড়াগাড়ি, চাতরাবিল, খোলার বিল, কচিয়ার বিল, কাশিয়ার বিল, ধলার বিল, বালোয়া, আমদাকুড়ি, বাঙ্গাজালী, হুলহুলিয়া, কালামকুরী, রঘুকদমা, বোয়ালিয়া, হরিবিল, হরিবিল, বুড়ি বিল, রহুয়া, সোনাইডাঙ্গা, নলুয়াকান্দি, বেরল, কচিয়া, কাশিয়ার বিল, কাতলবিল, বাঘমারা বিল, বিলকুরুলিয়া, চিরল বিল, ডিকশী বিল, রুথনাডাঙ্গা, রউল, সাঁতৈল, পাতিয়া বিল, আইড়মারী, কৈখোলা, গলিয়া, চিনাডাঙ্গা, মেরীগাছা ও খলিশাডাঙ্গা। খাল গুলোর মধ্যে হক সাহেবের খাল, নবীর হাজীর জোলা, নিয়ামত খাল, সাত্তার সাহেবের খাল, কিনু সরকারের ধর, পানাউল্লাহ খাল, নিমাইচড়া- বেশানী খাল, জহির সরকারের খাল, দোবিলা খাল, কিশোর খালি খাল, বেহুলার খাড়ি, গাড়াবাড়ি- ছারুখালী খাল, জনিগাছার জোলা উল্লেখযোগ্য। নদী গুলোর মধ্যে আত্রাই, মরা আত্রা¦ই, গুড়, করতোয়া, বড়াল, তুলশী, চেঁচুয়া, ভাদাই, চিকনাই, বানগঙ্গা, গুমানী উল্লেখ যোগ্য। এসব নদী খাল বিল খাঁড়ি জোলা ছিল চলনবিলের গর্ব ও ঐতিহ্য।

এসকল নদীগুলো একসময় স্রোতস্বিনী থাকলেও কাল ক্রমে এদের অধিকাংশই জৌলুশ হারিয়েছে। অনেক নদী আজ মৃতপ্রায়। বাঁকী গুলোতে জৈষ্ঠ থেকে অগ্রহায়ন বছরের সাত মাস পানি থাকলেও বাঁকি পাঁচ মাস থাকে পানিশূণ্য। নদীর বুক হয়ে ওঠে গোচারণ ভূমি, ফসলের মাঠ। পৌষ থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত নদী গুলোতে পানি থাকে না। ফলে নৌচলাচল বন্ধ হবার পাশাপাশি নদী পারের বোরো ধান, গম, সরিষা, পেঁয়াজ, ভুট্রা, রসুন, আলু ক্ষেতে নদী থেকে পানি সেচ দিতে পারে না এ এলাকার মানুষ।
চলনবিলের প্রাকৃতিক জলাশয়ে আগেকার দিনে প্রচুর পরিমানে কৈ, মাগুর, বাঁচা, রুই, কাতল, বাটকে, মৃগেল, বাউশ, আইড়, রিটা, বাঘাইর, শিলং, চিতল, ফলি, বোয়াল, পাবদা, টেংড়া, গলশা, বাইম, গুচি, শৈল, গজার, টাকি, নদই, শিং, খলিশা, পুটি, চিংড়ি, কাকলা, কালবাউশ, ফাতাশী, বাঁশপাতা, মৌসি, রায়াক, শিলং, চ্যাং, চাঁদা, চেলা, চাপিলা, গাগর, ভূল, গুজ্যা, বৌমাছ পাওয়া যেত। দিনের পর দিন বিলের আবাদী জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, নিষিদ্ধ কারেন্ট জালসহ আধুনিক অন্যান্য জাল দিয়ে মাছ ধরায় মৎসভান্ডার খ্যাত চলনবিল আজ মাছ শূন্য হবার পথে। অনেক প্রজাতির মাছ ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

অগ্রহায়ন-পৌষ মাসে বিলগুলোর ডোবা নালা সেচে মাছ ধরে নেওয়ায় এসময় চলনবিল একেবারে পানি ও মাছ শূণ্য হয়ে পরে।
চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের সদস্যসচিব মিজানুর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, নদী বিল ও খাল এক সূত্রে গাথা। চলনবিল এলাকার নদী বিল খাঁড়ি রক্ষায় ২০১০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক কনভেনশনে চলনবিলের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত নদীসমূহ চলমান, বিলের খাস জমি লীজ না দেওয়া, বিল এবং নদীর সংযোগ খাল দখল মুক্ত করা, খনন করা, মিল কারখানার বর্জ নদীতে না ফেলা সহ ২৫ দফা দাবী বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছি।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)