শনিবার ● ৭ জানুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » মাটিরাঙ্গায় আলমের চালের আড়ৎ‘এ নকল মিনিকেট চালের জমজমাট ব্যবসা
মাটিরাঙ্গায় আলমের চালের আড়ৎ‘এ নকল মিনিকেট চালের জমজমাট ব্যবসা
অন্তর মাহমুদ, মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: (২৪ পৌষ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৩৩মি.) খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা বাজারে ভোক্তা অধিকার আইন উপেক্ষা করে নকল মিনিকেট চালের জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন চাল ব্যবসায়ী আলম ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের বিলিকৃত রেশনের চাল স্থানীয় পর্যায়ে সংগ্রহ পুর্বক বিভিন্ন নামিদামী কোম্পানীর নকল মিনিকেট চালের বস্তায় প্যাকেজিং করে অবৈধ ভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন দিনের পর দিন। প্যাকেজিংকৃত নকল বস্তাগুলোর মধ্যে প্রোপ্রাইটর মেসার্স সজল মিয়ার‘জোড়া হরিণ মার্কা,আ: রহিম মুন্সির রুপ চাঁদা মার্কা ও যমুনা ব্রাদার্স‘এর লাঙ্গল মার্কা বস্তা উল্লেখযোগ্য।৬ জানুয়ারী শুক্রবার জুমার নামায চলাকালিন সময় চাল ব্যবসায়ী মো: আবু মিয়ার নিজস্ব গুদামে অবৈধভাবে নিম্নমানের খোলা চাল বাজারের জনপ্রিয় বিভিন্ন ব্রান্ডের বস্তায় প্যাকেজিং করতে দেখা যায়। প্যাকেজিং কালে স্থানীয় জনগনের প্রতিরোধের মুখে দ্রুত প্যাকেজিং বন্ধ করে কিছু সময়ের জন্যে গা ঢাকা দেন।
একটু পর বাজার পরিচালনা আহবায়ক কমিটির পক্ষে সোহাগ মজুমদার নামের জনৈক ব্যবসায়ী এসে সংবাদ কর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন,এটা কোন অপরাধ নয়,এবং নকল নামিদামী কোম্পানীর বস্তায় প্যাকেজিং করে খোলা চাল বিক্রয় কোন অপরাধ নয় বলেও দাবী করেন তিনি।
এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের সাথে আলাপকালে জানা যায়,সরকারী বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে কোন পণ্যের প্যাকেটজাত করণ,পরিবর্তন,পরিবর্ধন করা ভোক্তা অধিকার আইনানুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের জন্য ভোক্তা অধিকার আইনে কারাদন্ড,অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক ভোক্তা বলেন,অবৈধ প্যাকেজিং‘এর মাধ্যমে আলমের মতো ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার সাথে প্রতারণা করছে। না জেনে ক্রেতা সাধারণ চালের মান বিবেচনায় প্যাকেজিংকৃত বস্তার নামকে প্রাধান্য দিয়ে প্রতিদিন প্রতারণার শিকার হচ্ছেন এই ব্যবসায়ীর কাছে। তিনি জনস্বার্থে অবৈধভাবে বস্তাবন্দি করে চাল বাজারজাত কারীদের উপযুক্ত বিচারের আওতায় এনে ভোক্তা অধিকার আইন বাস্তয়নে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুপময় চাকমা বলেন,লাইসেন্স ছাড়া কোন খাদ্যদ্রব্য প্যাকেজিং করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করার জন্যে ২০০৯ সনে প্রণীত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন ২৬নং ধারায় ,কোন ব্যক্তি কোন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদন্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
এই বিষয়ে নকল মিনিকেট চালের প্যাকেজিং এর ব্যবসায়ী আলম বলেন,আমি রব ডিলারের কাছ থেকে খোলা চাল কিনেছি । কিন্তু বস্তাগুলো পুরাতন ও ছিঁড়া হওয়ার কারনে নতুন বস্তাজাত করছি। এ সময় তিনি বিভিন্ন কোম্পানীর বস্তা ব্যবহারের বিষয়ে কোন সদোত্তর দিতে না পারেননি,বরং বাজারের অন্যান্য চাল বাবসায়ীরা তার ন্যায় পুরাতন বস্তাগুলোতে অনুরুপ নকল চাল বস্তাবন্দি করেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিট্রেট বিএম মশিউর রহমান বলেন,বিএসটিআই‘এর অনুমোদন ছাড়া যে কোন প্যাকেজিং করা অপরাধ। যদি কোন ব্যবসায়ী বাজারে অবৈধভাবে প্যাকেজিং করে থাকে এবং তা যদি সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণ সাপেক্ষে দোষী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে।