মঙ্গলবার ● ৩ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » গাজীপুরে হত্যা-ধর্ষণের অভিযোগে ৩ জন গ্রেফতার
গাজীপুরে হত্যা-ধর্ষণের অভিযোগে ৩ জন গ্রেফতার
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, গাজীপুর প্রতিনিধি :: গাজীপুরের শ্রীপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে প্রথম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী এক শিশুকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় পুলিশ নিহত ওই শিক্ষার্থীর মামাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ৷ এছাড়াও একই উপজেলায় চার বছরের অপর এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার আরো এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া এলাকার নানার বাড়িতে স্কুল শিক্ষার্থী নাজনীন আক্তারকে (৭) গলাকেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা ৷ পরে এ ঘটনায় স্থানীয় আব্দুল করিম, কাদের সহ প্রতিপক্ষের কয়েকজনকে আসামি করে শ্রীপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয় ৷ পরবর্তীতে পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে ৷ আর এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নাজনীনের মামা রিপন(২৮)কে সোমবার ঢাকার রামপুরা ওয়াবদা মোড় থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ পরে তার স্বীকারোক্তিমতে একই এলাকা থেকে রবিউল(২৭) নামের অপর একজনকে গ্রেফতার করা হয় ৷ গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে ৷
গ্রেফতারকৃত মামা রিপন গাজীপুরের শ্রীপুর চকপাড়া এলাকার হাসমত আলীর ছেলে ৷ তার সহযোগী রবিউল বগুড়ার সদরের ভাটকান্দি গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে ৷
নিহত নাজনীন আক্তার (৭) শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী এবং কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈবরের মাইজচর এলাকার আক্কাছ আলীর মেয়ে ৷ প্রায় সাড়ে তিনবছর আগে আক্কাছ আলী তার প্রথম স্ত্রী আসমা বেগমকে (নাজনীনের মা) রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকায় বসবাস করতে থাকে ৷ পরবর্তীতে নাজনীনের মা আসমা বেগমও দ্বিতীয় বিয়ে করে মেয়ে নাজনীনকে তার নানা হাসমত আলীর কাছে রেখে স্থানীয় মাওনা সলিং মোড় এলাকায় দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন ৷
২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে নাজনীনের নানা হাসমত আলী বাড়িতে ছিলেন না ৷ নাজনীন তার নানী মিনুজা বেগমের সঙ্গে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল ৷ রাত আড়াইটার দিকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে তাদের দরজা খুলতে বলে ৷ মিনুজা বেগম ঘরের দরজা খুললে নাজনীনকে জোড়পূর্বক ঘরের উঠানে নিয়ে আসে এবং মিনুজা বেগমকে ঘরের ভেতর রেখে বাহির থেকে দরজা আটকে দেয় ৷ পরে নাজনীনকে গলা কেটে হত্য করে ৷ পরের দিন শুক্রবার সকালে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ (শতামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায় ৷ এ ব্যাপারে নিহত শিশুর মা আসমা আক্তার বাদী হয়ে স্থানীয় আব্দুল করিম গংদের আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন ৷
অপরদিকে, একই উপজেলা শ্রীপুরের মাওনা উত্তর পাড়ায় চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷
গ্রেফতারকৃতের নাম মেহেদী হাসান (১৮)৷ সে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা উত্তর পাড়ার মফিজ উদ্দিনের ছেলে ৷
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিনিধিকে জানান, ধর্ষণের শিকার শিশুর বাবা রংপুরের পীরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ৷ সে গত প্রায় দুই বছর ধরে শ্রীপুরের মাওনা উত্তর পাড়ার মফিজ উদ্দিনের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকে৷ শিশুটির বাবা রাজমিস্ত্রী এবং মা স্থানীয় একটি স্পিনিং মিলে অপারেটরের চাকরি করেন ৷ এ সুযোগে গত রবিবার ফুসলিয়ে শিশুটিকে মেহেদী তার শয়নকক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে ৷ এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয় ৷ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরে পুলিশ শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকা থেকে ধর্ষক মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করে ৷ গ্রেফতারকৃত মেহেদী ওই শিশুকে ধর্ষণের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ৷
আপলোড : ৩ নভেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : সন্ধ্যা ৬.৪৮ মিঃ