শনিবার ● ১৪ জানুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » সুন্দরবনে বঙ্গোপসাগরে কয়লা বোঝাই কার্গো ডুবি : উদ্ধার ১৬ জন
সুন্দরবনে বঙ্গোপসাগরে কয়লা বোঝাই কার্গো ডুবি : উদ্ধার ১৬ জন
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: (১মাঘ ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৪০মি.) বাংলাদেশ জলসীমায় সুন্দরবন উপকূলের বঙ্গোপসাগরের ১২ নম্বর ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় ১৩ জানুয়ারি শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ১ হাজার ১০ মে: টন কয়লা বোঝাই এমভি আইচগাতী নামের একটি কার্গো ডুবেগেছে।
দুর্ঘটনার পর থেকে শনিবার (১৪ জানুযারি) বেলা ১১টা পর্যন্ত ওই পথ দিয়ে ১৫টির মতো জাহাজ চলাচল করেছে। ফলে মংলা বন্দর চ্যানেল দিয়ে জাহাজ চলাচলে কোন ক্ষতি বা ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ । এর পাশ দিয়ে কোনো ধরনের জাহাজ চলাচলেই অসুবিধা হচ্ছে না। তবে ওই কার্গোতে থাকা সকল নাবিক ও ক্রুসহ ১৬ জনকে বঙ্গোপসাগরের ভাসতে দেখে পাশ দিয়ে যাওয়া বসুন্ধরা গ্রুপের ‘এমভি বসুন্ধরা- ৩৭’ জাহাজ বঙ্গোপসাগর থেকে তাদের উদ্ধার করে মংলায় নিয়ে এসেছে। মংলা কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোন এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার মো. ওয়ালিউল্লাহ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, কয়লাবাহী নৌযানটি ডুবেছে বন্দর চ্যানেলের অনেক বাইরে বঙ্গোপসাগরে। তাই বন্দরে পণ্যবাহী নৌযান চলাচলে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
সকালে তিনি জানান, ডুবে যাওয়া নৌযানের এলাকাটি শনাক্ত করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে শনিবার (১৪ জানুযারি) বেলা ১২টা পর্যন্ত ওই পথ দিয়ে ১৮টির মতো জাহাজ চলাচল করেছে। এর পাশ দিয়ে কোনো ধরনের জাহাজ চলাচলেই অসুবিধা হচ্ছে না।
কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান যশোরের নওয়াপাড়া ট্রেডার্সকে ডুবে যাওয়া কোস্টারটি উদ্ধার করতে বলা হয়েছে। তবে সাগরের ওই গভীর এলাকা থেকে কোস্টারটি উদ্ধারে সক্ষম নৌযান এই এলাকায় নেই। তাই মালিক পক্ষ চট্টগ্রামে যোগাযোগ করছে।
ডুবে যাওয়া কোস্টার ‘এমভি আইজগাঁতি’বঙ্গোপসাগরের বারো নম্বর ফেয়ারওয়ে বয়ার কাছে নোঙর করা এমভি লেডিমেরি জাহাজ থেকে কয়লা নিয়ে যশোরের নওয়াপাড়া যাচ্ছিল। নওয়াপাড়া ট্রেডার্স নামে যশোরের একটি প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এমভি লেডিমেরি নামে একটি বিদেশি জাহাজে করে ৪৮ হাজার মেট্রিকটন কয়লা আমদানি করে। ২২ ডিসেম্বর জাহাজটি ফেয়ারওয়ে বয়ার কাছে নোঙর করে কয়লা খালাস শুরু করে।
বন্দরের হারবার বিভাগ জানান, আইজগাঁতি কোস্টারটি সাত নম্বর ফেয়ারওয়ের কাছে প্রচণ্ড টেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এসময় পাশ দিয়ে যাওয়া অপর একটি কোস্টার ওই নৌযানের ১৮ নাবিক ও ক্রুকে উদ্ধার করে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম জানান, কয়লা বোঝাই নৌযানটি সুন্দরবন থেকে অনেক দূরে বঙ্গোপসাগরে ডু্বেেছ। তাই বনের ওপর তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে এক হাজার ২৩৫ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে ‘এমভি সী হর্স-১’ নামে একটি উপকূলীয় জাহাজ ডুবে যায়। সুন্দরবনের পশুর নদীতে কয়লা বোঝাই আরও একটি নৌযান ডোবে ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর। ৫১০ টন কয়লা নিয়ে ডুবেছিলো এমভি জি আর রাজ নামে ওই কার্গোি
মংলালা কোষ্টগার্ডের মিডিয়া উইং জানায়, ইন্দোনেশিয়ার পতাকাবাহি মাদার ভেসেল ‘এমভি লেডী মেরী’ আমদানিকারকদের কয়লা বোঝাই করে গত ২৪ ডিসেম্বর মংলা বন্দরের আউটার এ্যাংকরেজে আসে। গত ২দিন আগে এই মাদার ভেসেলটি থেকে বঙ্গোবসাগরে মংলা বন্দর চ্যানেলের ১২ বয়ার কাছে লাইটারেজ কার্গোতে কয়লা খালাসের কাজ শুরু করে। শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে লাইটারেজ জাহাজটি ১ হাজার ১০ টন কয়লা বোঝাই করে যশোরের আমদানীকারক নওয়াপাড়া টেডার্সের উদ্যেশে রওনা দেবার পরপরই তলা ফেটে গভীর সাগরে ডুবে যায়।