রবিবার ● ২৯ জানুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » ২০২৪ সালের মধ্যেই দেশ বিশ্বের উন্নত দেশে পরিনত হবে : অর্থমন্ত্রী
২০২৪ সালের মধ্যেই দেশ বিশ্বের উন্নত দেশে পরিনত হবে : অর্থমন্ত্রী
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: (১৬ মাঘ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪০মি.) অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি বলেন দেশের মানুষকে শতভাগ শিক্ষিত করতে পারলে উন্নয়ন কাজ গতিশীল হবে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যেই দেশ একটি বিশ্বের উন্নত দেশে পরিনত হবে। বর্তমান বাংলাদেশ খাদ্যে স্বংয় সম্পূর্ন দেশ। আগামী ৮ বছন পর দেশের কোন মানুষ আর দরিদ্র থাকবে না। এছাড়া তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি গঠিত নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে তা অত্যন্ত সঠিক ও খুবই ভাল। সার্চ কমিটির সদস্যরা অত্যন্ত জ্ঞানী গুনী ও ভাল লোক। যারা সার্চ কমিটি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন তা ভ্রান্ত ও রাবিশ। এর কোন ভিত্তি নেই। অর্থ মন্ত্রী গত শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চ বিদ্যালয়ে শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
নবীগঞ্জ জে.কে উচ্চ বিদ্যালয় শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানের সভাপতি ও নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি মোঃ আবু জাহির, হবিগঞ্জ-১ আসনের এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হোসেন চৌধুরী, জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামছুল ইসলাম ভূইয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নবীগঞ্জ পৌসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী। অনুষ্টানে মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন। সিলেট মদনমোহন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডক্টর আবুল ফতেহ ফাত্তাহ। অনুষ্টানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেনসাইফুল ইসলাম,গীতাপাঠ করেন হবিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী কৃপারুপানন্দজী মহারাজ।
প্রধান অথিতির বক্তেব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি আরো বলেন, স্কুলে মেয়েদের মত ছেলেদেরও বিনা বেতনে শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, উনিবিংশ শতাব্দী থেকে একটা শিক্ষা নীতি গঠিত হয়। সেই শিক্ষা নীতিই আমাদের দেশে আজ পর্যন্ত চলছে। কিছু কিছু বিবর্তন পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের দেশের বেশীর ভাগ সরকারী বিদ্যালয় ১৮৪০ সালের পর থেকে প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। এতে বৃটিশ সরকার যথেষ্ট পরিমান অর্থ মঞ্জুর করেন। এবং বিভিন্ন জায়গায় স্কুল প্রতিষ্টা পেতে থাকে। তিনি আরো বলেন, নবীগঞ্জও শিক্ষা ক্ষেত্রে খুব বেশি পিছিয়ে নয়। শিক্ষা সম্বদ্ধে আমাদের যে স্বাভাবিক ধারনা, মানুষতো সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব কিন্তু তার এই শ্রেষ্টত্ব প্রতিষ্টা করতে নিজেকে যথেষ্ট কষ্ট করতে হয়। নিজেকে অবধান রাখতে হয়। এবং এই শ্রেষ্ট জীব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্টা করার জন্য যেটি তার সবচেয়ে বেশী অস্ত্র সেটা হল শিক্ষা। একমাত্র মানুষই জ্ঞান আহরন করে, জ্ঞানের চর্চা করে, জ্ঞান সংরক্ষন করে, এবং সেইখান থেকে সুযোগ দেয়। পুরোনো দিনের জ্ঞান ব্যবহার করে নতুন দিনের নতুন নতুন প্রযুক্তি নতুন নতুন আবিস্কার করে এবং সেই আবিস্কার সেই প্রযুক্তি তাকে সভ্যতার এক স্তর থেকে আরেকটা উচ্চতর স্তরে পৌছে দেয়। আমরা যেমন বর্তমানে আইসিটির কল্যানে এখন একটা সভ্যতার উচ্চতর স্তরে পৌছে গেছি। যেখানে অতি সহজেই মানুষকে মানুষের পুর্বতম জ্ঞান সেটা নিয়ে আলোচনা করতে পারে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। এবং সেখান থেকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আমাদের সেই রাস্তাটা খুব সহজ করে দিয়েছেন কারন তিনি আমাদের বলেছেন যে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এই ডিজিটাল বাংলাদেশই হচ্ছে আইসিটির সবচেয়ে বড় অবধান। এবং সেই দিক দিয়ে আমরা যথেষ্ট এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী তার একটি ব্রত আছে এবং তিনি সব সময় বলেন যে, দেশের মানুষকে যদি শিক্ষিত করে গড়ে তুলা যায় তাহলে রাষ্ট্র কে আর বিশেষ কিছু করতে হয় না। শুধু একটি কাজ করলেই মানুষ এগিয়ে যাবে এবং তিনি সে জন্যে যেটা প্রস্তাব করেন সেটা হল, প্রত্যেক মানুষের জন্যে শিক্ষা উচ্চতর স্তর পর্যন্ত একেবারে কম খরচে যেন হতে পারে। আমরা ইতি মধ্যে কিছটা করেছি। আমরা মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত যেন সকলে পেতে পারে তার একটা ব্যবস্থা আমরা করেছি। বিভিন্ন উপবৃত্তি দিচ্ছি। এবং উপবৃত্তি থেকে যারা বঞ্চিত ছিলো তাদেরকে ও আমরা বিভিন্ন সাহাজ্য সহযোগীতা করছি। তাদেরকে ও উপবৃত্তির কিছু অংশ দেয়া হয়। মন্ত্রী আরো বলেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশে কোন দাদ্রি থাকবে না। পাকিস্থান আমলে দারিদ্রের হার ছিল ৭০% এখন আছে ২২% দারিদ্র সংখ্যা আগামীতে এসংখ্যা হবে ৬/৭ % হবে দারিদ্র সংখ্যা। তখন যারা থাকবে খুবই স্বল্পসংখ্যক। তিনি বলেন বর্তমান সরকার আইসিটির মাধ্যমে দেশকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করেছে।
শেষে তিনি নবীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহি জে.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভুমি দাতা ও এর সাথে যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অতিথি বৃন্দসহ অনুষ্টানে ১৪ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।
নবীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহি জে.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্ষপুর্তি উদযাপন অনুষ্টানের শেষ দিনে গত শনিবার দুপুরে হেলিকপ্টার যোগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি কানাইপুর হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। পরে অনুষ্টান স্থলে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড্ডয়নের মধ্য দিয়ে বর্ষপূর্তি অনুষ্টানের শুব উদ্বোধন করেন। পরে অনুষ্টানের শুরতেই অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্টাতা, জমিদাতা, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সম্মানিত সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী যারা মৃত্যু বরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ১মিনিট দাড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। পরে গভীর রাত পর্যন্ত এক ঝমকালে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে অনুষ্টিত হয়। এতে দেশের প্রখ্যাত সংঙ্গীত শিল্পি ফোক বিখ্যাত শাহনাজ বেলী, লালন খ্যাত শফি মন্ডল ফোক ও করিম বিখ্যাত আশিক,পিন্টু ঘোষসহ অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ সংঙ্গীত পরিবেশন করেন।