শনিবার ● ৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » বেকারত্ব রোধে পাহাড়ে রাবার চাষ এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে
বেকারত্ব রোধে পাহাড়ে রাবার চাষ এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে
মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: (২২ মাঘ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৩০মি.) পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ও নিজের বেকারত্ব রোধে অর্থনৈতিক সাফল্য লাভের আশায় রাবার গাছের চাষ শুরু করেন মো: সোলাইমান নামের এক বেকার যুবক। মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড নবরায় মহাজন পাড়ার বাসিন্দা কৃষক মো: চান মিয়ার দ্বিতীয় ছেলে তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে , নিজের জীবনে সু পরামর্শদাতার অভাবে পড়াশোনা মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশী পার করা সম্ভব না হলেও ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টা সোলাইমানের মনের মাঝে সদা উঁকি দিত। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নযন বোর্ড কর্তৃক সৃজন করা বিভিন্ন রাবার বাগানের গাছ থেকে রাবার সংগ্রহের কার্যক্রম দেখে অনুপ্রানিত হয়ে নিজের পরিত্যক্ত মাঝারী গড়নের প্রায় ৫ একর টিলা ভুমিতে ২০০৮ সালে রাবার গাছের চাষ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছিলেন এই কর্ম পিপাসু যুবক।
রোপন প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক ভাবে বাগান সৃজনের শুরুতে ২ ফুট বেড় ও ২ ফুট গভীর প্রতিটি গর্তে গোবর,ইউরিয়া,টিএসপি,এমপি,পোড়াডন একসাথে মিশ্রণ করে চারা বপনের ১ মাস পুর্বে রেখে দিতে হয়। বৈশাখ জৈষ্ঠ্য মাসে প্রথম বৃষ্টির সময় প্রতিটি গর্তে ১ করে চারা রোপন করে প্রায় ৩৪০০ চারা গাছ রোপন করেন তিনি। বাবাকে কৃষি কাজে সহায়তার সাথে সাথে তিনি সমানতালে চালিয়ে যান নিজের লাগানো রাবার গাছের পরিচর্যা। জীবনের চাকা চলতে চলতে এ বছর তার রাবার বাগান ৮ বছর বয়সে পা রাখতেই সফলতার নতুন বার্তা এসেছে তার ঘরে। আর তা হচ্ছে এ বছর থেকেই সে তার রাবার গাছ থেকে রাবার সংগ্রহ করতে পারবেন। যা প্রতিটি গাছ তাকে দিনে ৫ থেকে ১০ টাকা আয় দিবে। বর্তমানে তার বাগান থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৩৫ কেজি রাবার সংগ্রহ করা হচ্ছে। অনেক কষ্টে গড়া রাবার বাগান তার ছেলে মেেেয়কে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে আর্থিকভাবে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।
এ বিষয়ে রাবার গাছ বাগান সৃজনকারী সফল যুবক মো: সোলাইমান পার্বত্য চ্ট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন,পার্বত্য চ্ট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর কাছ থেকে আমি প্রেরনা পেয়েছি। বেকার জীবন অনেক কষ্টের,অনেক অপমানের,অনেক লজ্জার- যা সমাজে মাথা উঁচু করে দাড়ানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে । ইচ্ছা শক্তি প্রবল হলে বেকারত্বের মতো যে কোন প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে আর্থিক সফলতা অর্জন করা সম্ভব। তিনি বেকারদের ঘরে বসে না থেকে রাবার গাছ চাষের অপার সম্ভাবনাকে ধারন করে পার্বত্য এলাকায় যাদের অব্যবহারিত টিলা ভুমি রয়েছে তাদের রাবার বাগান সৃজনে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন। আগ্রহীরা নিজেরা না বুঝলে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড এর যে কোন রাবার ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের সাথে যোগাযোগের অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গার প্রথম সফল রাবার চাষী তৌফিকুল ইসলাম নতুন ভারে রাবার ছাষের সাথে নতুন পাড়ার সোলাইমানের সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়ে,ব্যক্তি পর্যায়ে এ ধরনের বাগান সৃজন কারীদের সরকারীভাবে আর্থিক সহযোগীতা করা হলে ক্ষৃদ্র উদ্যোক্তারা আরও অধিক পরিমাণে বাগান সৃজনে আগ্রহী হতো ।
এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও সচেতন মহল মনে করেন,সরকারী পৃষ্টপোষকতার মাধ্যমে রাবার প্রক্রিয়াজাত করন কারখানা নির্মান করা গেলে চাষীরা নিজেদের বাগানে উৎপাদিত রাবার বিক্রয় করে সহজেই লাভবান হতো।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড রাবার ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার পুষ্পস্মৃতি চাকমা জানান,পার্বত্যঞ্চলে ব্যক্তি মালিকানাধীন এই ধরণের রাবার বাগান সৃজনের ফলে দেশ অর্থনৈতিক ভাবে আরও এগিয়ে যাবে। বিদেশ থেকে রাবার আমদানীর নির্ভরতা কমবে এছাড়াও দেশে বর্তমান যে পরিমাণ রাবার চাহিদা রয়েছে তা পুরণে বিশেষ ভুমিকা রাখবে ব্যক্তি পর্যায়ে এমন উদ্যোগ।