শনিবার ● ৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » পাবনা » চলনবিলের আত্রাই ও গুমানী নদী খনন কাজ শুরু
চলনবিলের আত্রাই ও গুমানী নদী খনন কাজ শুরু
চাটমোহর (পাবনা) প্রেতিনিধি :: (২২মাঘ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩৩মি.) বছরের পর বছর পলি জমে চলনবিলের নদী গুলো হারিয়ে ফেলেছে স্বকীয়তা। নাব্যতা সংকটে এক কালের চলন্ত এ বিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রাকৃতিক জলাধার নদী গুলোর অস্তিত্ব আজ হুমকীর মুখে। ফরাক্কা বাঁধের প্রভাব, জলবায়ুর পরিবর্তন ও বড়াল নদীর উৎসমুখ রাজশাহীর চারঘাটে স্লুইজগেট নির্মাণের প্রত্যক্ষ প্রভাবে নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা ও আয়তন কমে এসেছে। চলনবিল অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী সমূহে অতীতে প্রতিবছর প্রায় ২২২.৫ মিলিয়ন ঘনফুট পলি নদী সমূহ দিয়ে বিলে প্রবেশ করতো এবং ৫৩ মিলিয়ন ঘনফুট পলি নদীপথে বিলের সীমা ত্যাগ করতো। ১৬৯.৫ মিলিয়ন ঘনফুট পলি প্রতিবছর বিলে থেকে যেত। নদী গুলোর বুকেও জমতো পলি। ফলশ্রুতিতে নদীর জলময় অংশের আয়তন ক্রমশই কমে আসছে। এছাড়া অপিরিকল্পিত ভাবে বাঁধ, সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ দখল দূষণের ফলে হুমকির মুখে পরেছে নদী গুলোর অস্তিত্ব। চলনবিল এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ১৬ টি নদী। এর প্রায় সবগুলোই শুষ্ক মৌসুমে পরিণত হয় আবাদী জমিতে। নদী গুলো পানি শূণ্য হয়ে পরায়, সেচ কার্যক্রম ব্যহত হওয়ায় তার প্রভাব পরে এ এলাকার কৃষি উৎপাদনে। অনোন্যপায় কৃষক নির্ভরশীল হয়ে পরে গভীর ও অগভীর নলকূপের উপর। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় চলনবিল এলাকার নদী তীরবর্তী ২১ হাজার হেক্টর জমিসহ বৃহত্তর চলনবিল এলাকার সেচ কার্যক্রম ব্যহত হয়। পাশাপাশি নদী পানিশূন্য হয়ে পরায় নৌরুট গুলো ও বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রভাব পরে পুরো চলবিলাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রায়।
শুষ্ক মৌসুমে নদী পাড়ের কৃষকেরা যেন সেচ কার্য করতে পারে, নৌকা ট্রলার গুলো যেন সারা বছর নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে, নদীগুলো যেন বুকে পানি ধারণ করে রাখতে পারে এ লক্ষ্যে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে চলনবিল অধ্যুষিত পাবনা নাটোর সিরাজগঞ্জের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই ও গুমানী নদী খননের কাজ শুরু হয়েছে।
আত্রাই রিভার ড্রেজিং প্রজেক্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার এবং বি আই ডব্লিউ টি এ’র উপসহকারী প্রকৌশলী কামাল পাশা জানান, নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের অধীনে পঞ্চগড়- দিনাজপুর- নওগাঁ- নাটোর- পাবনা নৌরুট খনন প্রকল্পের আওতায় চলছে এ কাজ। প্রথম পর্যায়ে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪২ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় পাবনার ফরিদপুরের এরশাদনগর থেকে চাটমোহর হয়ে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার শাপগাড়ি রাবার ড্যাম পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার নদী খনন করা হবে। কাজটি করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী (ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড)। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই টেন্ডার হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয় ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর। কাজের মেয়াদকাল ৭২০ দিন। আপাতত একশত ফিট প্রশস্ত করা হবে এবং যেখানে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খনন করা হবে। কাজটির তদারকী করবে কনসালটেন্ট ফার্ম সিইজিআইএস।