সোমবার ● ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » নবীগঞ্জে এক বিয়ে পাগল লন্ডনীর কান্ড
নবীগঞ্জে এক বিয়ে পাগল লন্ডনীর কান্ড
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি ::(২৪ মাঘ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৫০মি.) নবীগঞ্জে ১ম স্ত্রীর লিখিত অনুমতির বিষয়টি তোয়াক্কা না করে একের পর এক বিয়ে করায় অবশেষে পুলিশের খাঁচায় বন্দি হয়েছেন আলাল উদ্দিন নামের এক লন্ডন প্রবাসী। ১ম স্ত্রীর মামলায় আটককৃত বিয়ে পাগল লন্ডন প্রবাসী আলাল উদ্দিন (৩২) নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বানিউন (লতিবপুর) এলাকার আলিফ উদ্দিনের ছেলে। ধৃত আলাল উদ্দিন একাধীক বিয়েতে ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করেছে। এক বিয়েতে দিলবার, আরেক বিয়েতে দিলোয়ার নাম দিয়েছেও জানা গেছে। ১০ বছর আগে বিবাহিত ১ম স্ত্রী লুবনা বেগমের মামলায় ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে ইনতগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ। এ নিয়ে এলাকায় মুখরোচক আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিয়ে পাগল আলাল উদ্দিন ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে ১৫ লক্ষ টাকা দেনমোহর দিয়ে বিয়ে করে নবীগঞ্জ পৌরসভার জয়নগার (দক্ষিনগ্রাম) এলাকার ফুলতাব উদ্দিনের মেয়ে লুবনা বেগমকে। বিয়ের মাস দেড়েক পরে আলাল উদ্দিন চলে যান লন্ডনে। তখন লুবনা বেগম চলে আসেন পিতার বাড়িতে। লন্ডন থেকে আলাল তার স্ত্রী লুবনার সাথে প্রথম অবস্থায় যোগাযোগ করলেও পরবর্তিতে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এনিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন লুবনা বেগম। এর মধ্যে ১ম স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে আলাল লন্ডনে জাম্মা নামের এক বৃট্রিশ নারীকে ২য় বিয়ে করে এবং তাদের ঔরসে এক মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ের নাম রাখা হয়েছে ইভা। এ বিয়ের খবর জেনে ১ম স্ত্রী লুবনা বেগম তার স্বামী আলালের পরিবারের লোকজন ও অত্মীয়স্বনের সাথে যোগাযোগ করেন। আলাল দেশে আসলে তারা বিষয়টি দেখে দেবেন বলে আশ্বস্থ করেন। এভাবেই চলে যায় একে একে ১০ বছর। অতঃপর চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ২০ তারিখ বিয়ে পাগলা লন্ডনী আসেন বাংলাদেশে। এ খবরটি অপেক্ষমান স্ত্রী লুবনা জানতে পারেন এবং বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে গত ২৭/০১/২০১৭ইং তারিখে মৌলভীবাজার জেলার সরকারবাজার এলাকার আব্দুল হকের মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন। এ বিয়েতেও আগের স্ত্রীর কোন অনুমতি নেননি আলাল উদ্দিন। আর এই নতুন স্ত্রীকে নিয়ে সিলেটের ওসমানী নগর গোয়ালাবাজারের আলী ম্যানশনে ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। এদিকে, ১ম স্ত্রী লুবনা বেগম দীর্ঘদিন আলালের আত্মীয় স্বজনের ধারে ধারে গিয়েও কোন সুরহা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আইনের আশ্রয় নেন বলে জানান। গত ০১/০২/২০১৭ ইং বুধবারে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার সকালে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই ধর্মজিত সিনহার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওসমানী নগরের গোয়ালাবাজার থেকে স্থানীয় থানার পুলিশেল সহযোগীতায় বিয়ে পাগল আলালকে গ্রেফতার করা হয়। পরে নবীগঞ্জ থানার মাধ্যমে সোমবার বিকেলে ধৃত বিয়ে পাগলকে হবিগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
এনিয়ে এলাকায় মুখরোচক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। পাশাপাশি দালালচক্রের মাধ্যমে যারা স্বপ্নের দেশ লন্ডন নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এসব বিয়ে বাণিজ্য চালাচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবী সচেতন মহলের।