রবিবার ● ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » ইঞ্জেকশন পুশ করে আটদিন আটকে রেখে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ
ইঞ্জেকশন পুশ করে আটদিন আটকে রেখে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: (৩০ মাঘ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৩৬মি.) সিলেটের বিশ্বনাথে গণধর্ষণের শিকার হওয়া ৬দিন আত্মগোপনে থাকা সেই কিশোরিকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ১২ ফেব্রুয়ারি রোববার ভোরে সিলেটের মেন্দিভাগ এলাকায় বসবাসরত ধর্ষিতার বড় ভাইয়ের একটি ভাড়াটিয়া বাসা থেকে কিশোরিকে উদ্ধার করা হয়। ধর্ষকদের কাছ থেকে কিশোরিকে উদ্ধারের পর ভাইকে ভুল বুঝিয়ে আপোষের প্রস্তাব দিয়ে রোববার পর্যন্ত ৬দিনের সময় নিয়ে ধর্ষণের আলামত নষ্টের পায়তার করেন মাতব্বররা। সেই সঙ্গে ওই কিশোরির ইজ্জতের মুল্য সাড়ে ৩লাখ টাকা সাবস্থ্য করেন তারা। কিন্তু মাতব্বরদের সেই সুযোগ দেননি বিশ্বনাথ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম পিপিএম। তিনি ঘটনা জানার পর থেকে একাধিকবার ধর্ষকদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে অভিযান চালান এবং খবর পেয়ে আত্মগোপনে থাকা সেই কিশোরিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
রোববার সকালে ধর্ষিতার ভাই বাদি হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে আরও দ্ইুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি রেখে গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-(১২)। মামলার আসামিরা হলেন-উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে রুবেল মিয়া, একই গ্রামের মৃত ওয়াব উল্লাহ ছেলে শফিক মিয়া, মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে আফজল হোসেন।
জানাগেছে, ১৭বছরের কিশোরি গত ২৯ জানুয়ারী দুপুরে বাড়ি থেকে বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত সামছু মিয়ার পুত্র শফিক মিয়ার হাত ধরে পালিয়ে যায়। কিশোরির বাড়ি ছাতক উপজেলার গবিন্দগঞ্জ সৈয়দেরগাঁও ইউনিয়নের দশঘর গ্রামে। শফিক মিয়ার হাত ধরে পালিয়ে যাওয়ার পর রামচন্দ্রপুর গ্রামের একটি দোকান ঘরে আটদিন আটকে রেখে ইন্জেকশনের মাধ্যমে অজ্ঞান করে ওই কিশোরিকে ৫জন যুবক ধর্ষণ করে। তার হচ্ছে-একই গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে রুবেল মিয়া, মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে আফজল হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২জন। কিশোরীকে টানা ৮দিন ধর্ষণের পর সোমবার (৬ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরিকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে সিলেট শহরে পাঠিয়ে দিয়ে ভাইকে ফোন করে ধর্ষণকারীরা। কিশোরীর ভাই সিলেট নগরীর কাজিরবাজার সেতুর ওপর থেকে তার বোনকে উদ্ধার করেন। এসময় অটোরিকশা চালক বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের মৃত আবদুন নুরের ছেলে গফুর আলীকে আটক করা হয়। আটকের পর মুল্লারগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মখন মিয়ার কাছে নিয়ে গেলে সেখানে অটোরিকশা চালক ও ধর্ষিতার কাছ থেকে ধর্ষণকারিদের নাম পাওয়া যায়। পরে চেয়ারম্যান মখন মিয়া বিষয়টি আপোষে নিস্পত্তির জন্য ধর্ষণকারিদের মুরব্বির জিম্মায় দিয়ে দেন। কিন্তু ওই ৬দিনের ভিতরে কিশোরির ভাইয়ের সঙ্গে আর কোন যোগাযোগ করেননি ধর্ষণকারিদের মুরব্বিয়ানরা।
এব্যাপারে থানার ওসি মনিরুল ইসলাম পিপিএম বলেন, কিশোরির ভাইকে ভুল বুঝিয়ে মাতব্বররা ধর্ষণের আলামত নষ্ট ও আপোষ মিমাংশার পায়তার করছিল। কিন্তু ধর্ষিতার ভাই তার ভুল বুঝতে পেরেছে। রোববার কিশোরির ভাই বাদি হয়ে থানায় গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।