মঙ্গলবার ● ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » প্রতিবন্ধী সুলতানের সংগ্রামী জীবন
প্রতিবন্ধী সুলতানের সংগ্রামী জীবন
বগুড়া প্রতিনিধি :: (২ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৪০মি.) ডাক নাম প্রতিবন্ধী সুলতান। বযস ৪৫বছর। সবাই তাঁকে সুলতান আহমেদ নামে ডাকেন। সুলতানের জন্ম বগুড়ার গাবতলী দক্ষিনপাড়া ইউনিয়নের লাংলু দক্ষিনপাড়া গ্রামে। সে ঐ গ্রামের মতলুব আহম্মেদের পুত্র। ৭ভাই-বোনের মধ্যে সে ৩য় সন্তান। সে হঠাৎ লাংলুহাটে সাংবাদিক দেখে ছুটে আসেন। সেখানে সে বর্ণানা করেন তাঁর প্রতিবন্ধী জীবনের সংগ্রামী কিছু কথা।
সুলতান জানান, ১৯৯৭সালে গাবতলীতে সড়ক দূর্ঘটনায় সে দুপা হারিয়েছে। হাত ও মাথা’সহ শারীরিক ভাবে সে এখন অচল। এরপর তাঁর জীবনে নেমে আসে চরম দূর্ভোগ। প্রায় ৫বছরে ৮লক্ষ টাকা চিকিৎসা করার পর আজ সে বড় অসহায়। দু-মুটো ভাত জোটাতে পারছে না। অর্থের অভাবে চিকিৎসা অনেক আগেই বন্ধ। ফলে সে এখন দুবির্ষহ ভাবে জীবনযাপন করছে। আজও সে পায়নি কোন সরকারী-বেসরকারী সুযোগ-সুবিধা ও ভাতা কার্ড। ফলে সে জীবনটাকে বাঁচাতে অন্যার ২০শতক জমিতে রোপন করে নানা প্রজাতির বৃক্ষের চারা গাছ। নিজের চলাফেরার জন্য ভ্যানগাড়ীতে ড্রাইভার হিসাবে রেখেছে রুবেল নামের এক দিনমজুর শ্রমিক কে। সে তাঁর ডালিয়া নার্সারী থেকে যে টাকার চারা বিক্রি হয় সে টাকায় শ্রমিকের দিন মজুরী ও দু-মুটো ভাত যোগাতে হচ্ছে। এরপরে অর্থিক অনাটনের মধ্যেও সে সংগ্রামী জীবনে বেঁচে থাকার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অর্থের অভাবে চিকিৎসা নেই। নেই কোন ঔষধ। ফলে সে দিনদিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবন্ধী সার্টিফির্কেট থাকলে সে প্রতিবন্ধী ভাতা পায়নি। ফলে সে নিরুপায় হয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সু-দৃষ্টি’সহ সহযোগিতা ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সাংবাদিকের হাত ধরে অনুরোধ করেন, তাঁর কষ্টের কথাগুলো পত্রিকায় প্রকাশ করার জন্য। সুলতান প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাঁকে বা তাঁর নাসারীতে কেউ সহযোগিতা করেনি। সুলতান জানান, গাবতলীতে আওয়ামীলীগের কর্মসূচী পালন শেষে বাড়ী ফেরার পথে সে সড়ক দূর্ঘটনা কবলে পড়ে আজ সে অসহায় প্রতিবন্ধী হয়েছে। সুলতান আরো জানান, ১৯৮৭সালে সোনাতলা নাজির আকতার কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সে জড়িত ছিলেন। ১৯৯১সালে সে দক্ষিনপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেছেন। এরপরও সে দূীর্ঘদিন যাবত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত রয়েছেন। যে কোন আ’লীগের কর্মসূর্চীতে সে ঘরে বসে থাকতে পারে না। ভ্যানে বসে ছুটে আসেন আওয়ামীলীগের কর্মসূচী পালন করতে। এরপরেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে আজও তাঁকে কেউ সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখেনি। পাইনি একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড। গাবতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিল্টন হোসাইন জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। অবশ্যই সুলতানকে সহযোগিতা করা হবে। গাবতলী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বিটুল জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাবতলী উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুক্তা জানান, শুনে খুব খারাব লাগলো। যুবলীগ সবসময় তাঁর পাশে থেকে সহযোগিতা করবে। গাবতলী উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের দক্ষিনপাড়া ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত সমাজকর্মী নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিবন্ধী সুলতানের বিষয়টি জানা ছিল না। বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করে দেখা হবে। দক্ষিনপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সাইফুল জানান, সুলতানের জীবন পরিবর্তনের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড অবশ্যই দেয়া হবে।